‘নির্দেশদাতা’ শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগ
আগামী ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে গ্রেপ্তার হওয়া হেভিওয়েট মন্ত্রী-এমপিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের। ওই দিন জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এর মধ্য দিয়ে শুরু হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম।
গণহত্যায় জড়িত ও অভিযুক্ত পলাতক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, আমলা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হননি কিন্তু পলাতক অথবা আত্মগোপনে আছেন, তাদের গ্রেপ্তারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পুলিশ সদরদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ওই তালিকায় যারা দেশ থেকে পলাতক, তাদের ফেরাতে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটে। নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে সামরিক হেলিকপ্টারে চড়ে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
৫ আগস্টের আগে ও পরে পরিস্থিতি বুঝে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, পুলিশের পলাতক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, হারুন-অর রশীদ, বিপ্লব কুমারসহ ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা ও আমলাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে গুরুত্ব দিচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
জানা গেছে, শেখ হাসিনার আকস্মিক পদত্যাগে জনরোষ থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা। আকাশপথের চেয়ে সীমান্ত পথে প্রতিবেশী দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে।
আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ অনেক নেতাই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি শেখ ফজলুল করিম সেলিম দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এ ছাড়া, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, চাঁদপুরের সাবেক এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া দেশ ছেড়েছেন।
৫ আগস্টের আগে ও পরে পরিস্থিতি বুঝে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, পুলিশের পলাতক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, হারুন-অর রশীদ, বিপ্লব কুমারসহ ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা ও আমলাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে গুরুত্ব দিচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
আরও পড়ুন
তাদের দেশে ফেরানোটা কি শুধু ‘প্রক্রিয়ার মধ্যে বন্দি’, নাকি আদতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে— জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর (প্রশাসন) গাজী এম এইচ তামিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। ১৮ নভেম্বর তাদের হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল থেকে আদেশের অনুলিপি আইজিপির কাছে পাঠানো হয়েছে। আমরা জেনেছি, আইজিপির দপ্তর থেকে সংশ্লিষ্টদের কাছে ট্রাইব্যুনালের আদেশ পাঠানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ এনে হুমায়ুন কবির নামের এক ব্যবসায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেন। গত ২১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কাছে ওই ব্যবসায়ীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আমানুল্লাহ আদিব এ আবেদন দায়ের করেন।
আসামিরা হলেন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, দীপু মনি, আ ক ম মোজাম্মেল হক, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, শেখ সেলিম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে শামস পরশ, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ মামুন, ডিবি হারুন, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার, প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক র্যাব ডিজি হারুন-অর রশিদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা তারেক আনাম সিদ্দিকী, বিচারপতি মানিক, ড. জাফর ইকবাল, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামসহ ৪৬ জন
সেখানে আসামির তালিকায় রয়েছেন- পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়াসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে হুমায়ূন কবির জানান, ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর তাকে তুলে নিয়ে ১১ দিন ‘আয়না ঘরে’ বন্দি করে রাখা হয়। ওই সময় তাকে ইলেকট্রিক শক, হাত-পা ও চোখ বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের পৃথক মামলায় গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
অন্য যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা হলেন- শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, দীপু মনি, আ ক ম মোজাম্মেল হক, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, শেখ সেলিম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে শামস পরশ, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ মামুন, ডিবি হারুন, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার, প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক র্যাব ডিজি হারুন-অর রশিদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা তারেক আনাম সিদ্দিকী, বিচারপতি মানিক, ড. জাফর ইকবাল, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামসহ ৪৬ জন।
আরও পড়ুন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে পৃথক মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা পৃথক মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আইজিপির কাছে পাঠানো হয়েছে। আইজিপির দপ্তর থেকে সংশ্লিষ্টদের কাছে ট্রাইব্যুনালের আদেশ পাঠানো হয়েছে।
সর্বশেষ রোববার (২৭ অক্টোবর) গণহত্যার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় আসামিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, দীপু মনিসহ ১৪ জনকে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চের আদেশ অনুযায়ী, আগামী ১৮ নভেম্বর তাদের হাজির করতে হবে। একইসঙ্গে ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখাতে বলা হয়েছে।
ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন- সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী, সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, বিচারপতি মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর।
পলাতকদের ফেরাতে সহযোগিতার আবেদন পায়নি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরানোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র বা আইন মন্ত্রণালয় থেকে এখনও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোনো আবেদন আসেনি। যদি সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন আসে তবে শেখ হাসিনাসহ অন্য পলাতকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে স্পষ্ট করতে হবে যে, কে কোথায় পালিয়ে অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন
বন্দিবিনিময়ে ‘প্রত্যর্পণ’ চুক্তি অনুসরণ করা হবে
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যথাযথ কর্তৃপক্ষ হচ্ছেন আদালত। আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাইবে। তবে, প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে অপরাধী প্রত্যর্পণে ২০১৩ সালে একটি বন্দিবিনিময় চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাসহ অন্য পলাতক আসামিদের প্রত্যর্পণের জন্য ঢাকা ২০১৩ সালের চুক্তি অনুসরণ করবে। চুক্তিটি ২০১৬ সালে সংশোধন করা হয়।
কী আছে চুক্তিতে
চুক্তির ১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে, বাংলাদেশ ও ভারত তাদের ভূখণ্ডে কেবল সেই ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণ করতে বাধ্য, যারা প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ করেছেন। প্রত্যর্পণ চুক্তির অনুচ্ছেদ ১০-এ বলা আছে, এই চুক্তির আওতায় প্রত্যর্পণ চাওয়ার জন্য অনুরোধকারী রাষ্ট্রের পক্ষে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও যথেষ্ট। চুক্তির অনুচ্ছেদের ৮ ধারায় বলা আছে, যদি একজন ব্যক্তি প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধকৃত রাষ্ট্রকে বোঝাতে পারেন যে, তাকে হস্তান্তর করা হলে দেশে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন না এবং তাকে প্রত্যর্পণ করাটা নিপীড়নমূলক হবে, তাহলে অনুরোধকৃত রাষ্ট্র সমস্ত পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাকে প্রত্যর্পণ করা থেকে বিরত থাকতে পারে। এই অনুচ্ছেদ অনুসারে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘ন্যায়বিচারের স্বার্থে সরল বিশ্বাসে’ করা হয়নি বলে জানাতে পারবে অনুরোধকৃত রাষ্ট্র। আবার চুক্তির অনুচ্ছেদের ২১ ধারা অনুযায়ী, ভারত যে কোনো সময় নোটিশ দিয়ে ওই চুক্তি বাতিল করতে পারবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুযায়ী, আগামী ১৮ নভেম্বর সবাইকে হাজির হতে বলা হয়েছে। পুলিশ সদরদপ্তরে আদেশের কপি পাঠানো হয়েছে। তারা তদন্ত করে জানাবে যে কে গ্রেপ্তার, আর কে পলাতক বা আত্মগোপনে আছে। দেশ থেকে পলাতক হলে সেটাও ট্রাইব্যুনালকে জানাতে হবে। সে অনুযায়ী পলাতকদের ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করবে পুলিশ। এ জন্য যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
গণহত্যায় জড়িত ও বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভিন্ন মামলার আসামিদের অবস্থান শনাক্ত এবং তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ কাজ করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু আইনি প্রক্রিয়া আছে। এগুলো প্রতিপালনসাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যথাযথ কর্তৃপক্ষ হচ্ছেন আদালত। আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাইবে। তবে, প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে অপরাধী প্রত্যর্পণে ২০১৩ সালে একটি বন্দিবিনিময় চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাসহ অন্য পলাতক আসামিদের প্রত্যর্পণের জন্য ঢাকা ২০১৩ সালের চুক্তি অনুসরণ করবে। চুক্তিটি ২০১৬ সালে সংশোধন করা হয়
তবে, পুলিশ সদরদপ্তরের ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ট্রাইব্যুনালের পাঠানো তালিকা মোতাবেক পলাতকদের বিষয়টি নিশ্চিতে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে যে, কারা দেশে আর কারা বিদেশে পলাতক। সে অনুযায়ী ইন্টারপোলকে চিঠি দেওয়া হবে। এর আগে তাদের অবস্থান এবং অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী অভিযোগগুলো নথিভুক্ত করে প্রস্তুত করতে হবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি, ১৮ নভেম্বরের আগেই আমরা তাদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগটা গ্রহণ করতে পারব।
আরও পড়ুন
‘এখন পর্যন্ত ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা, শেখ রেহেনাসহ যাদের অবস্থান আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি, তাদের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুযায়ী ভারতে আশ্রয় নেওয়া গণহত্যার অপরাধীদের প্রত্যর্পণে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’
জেইউ/এমএআর/