আইয়ুব বাচ্চু
বাংলা ব্যান্ডের কিংবদন্তী আইয়ুব বাচ্চু। চট্টগ্রামের রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম তার। তাই ক্যারিয়ারের শুরুতে বেশ সংগ্রাম করতে হয় তাকে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে যোগ দেন ব্যান্ডে। নিজের ব্যান্ডের পাশাপাশি জেমসের সঙ্গে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডে বাঁজান আইয়ুব বাচ্চু। সেখানে গিটার বাঁজাতেন।
আশির দশকের শুরুতে আইয়ুব বাচ্চু যোগ দেন ‘সোলস’ ব্যান্ডে। ১৯৮৯ পর্যন্ত এই ব্যান্ডের হয়ে পরিচিতি পান তিনি। ‘সোলস’ থেকে যেই সময় প্রকাশ পায় ১৯৮২ সালে ‘সুপার সোলস’, ১৯৮৫ সালে ‘কলেজের করিডোরে’, ১৯৮৭ সালে ‘মানুষ মাটির কাছাকাছি’ ও ১৯৮৮ সালে ‘ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট’। শুধু ব্যান্ড নয়, এরমধ্যে শুরু হয় তার একক ক্যারিয়ার। ১৯৮৬ সালে প্রকাশ হয় প্রথম একক অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’। দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’ প্রকাশ হয় ১৯৮৯ সালে। ব্যান্ড পরিচিতির পাশাপাশি আইয়ুব বাচ্চু একক তারকা হয়ে উঠেন।
১৯৯০ সালে গড়েন নিজের ব্যান্ড। শুরুতে ব্যান্ডের নাম ছিল ‘ওয়াইআরবি (Yellow River Band)’। দেশের বাইরে পারফর্ম করতে যান নতুন ব্যান্ড নিয়ে। আয়োজক ভুল করে প্রচারণায় ব্যান্ডের নাম লেখেন এলআরবি (Little River Band)’। ভুল থেকে যেন ফুল হয়ে গেলো। ভুল নাম পছন্দ হয় আইয়ুব বাচ্চুর। সেই থেকে ব্যান্ডের নাম এলআরবি। কিন্তু জানা যায় অস্ট্রেলিয়াতে ‘Little River Band’ নামে এক ব্যান্ড রয়েছে। এরপর নামের অর্থ পরিবর্তন করে রাখা হয় Love Runs Blind (এলআরবি)।
১৯৯১ সালে প্রকাশ হয় ‘এলআরবি’র প্রথম অ্যালবাম। এমনকি তারা দেশে প্রথম ডাবল অ্যালবাম রিলিজ করে। নাম ‘এলআরবি ১’ ও ‘এলআরবি ২’। শুরুতেই ভিন্ন এক উদাহরণ দিয়ে শুরু হয় ‘এলআরবি’র যাত্রা। এরপরের অ্যালবামগুলো সুখ (১৯৯৩), তবুও (১৯৯৪), ঘুমন্ত শহরে (১৯৯৫), স্বপ্ন (১৯৯৬), আমাদের বিস্ময় (১৯৯৮), মন চাইলে মন পাবে (২০০১), অচেনা জীবন (২০০৩), মনে আছে নাকি নাই (২০০৫), স্পর্শ (২০০৭) ও যুদ্ধ (২০১২)।
১৯৯৫ সালে আইয়ুব বাচ্চু আবারো একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন। নাম ‘কষ্ট’। এরপর ২০১৫ পর্যন্ত আরো ১৩টি একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন তিনি। তবে ‘কষ্ট’ আইয়ুব বাচ্চুর ক্যারিয়ারে সবচেয়ে জনপ্রিয় একক অ্যালবাম।
১৯৯১ সালে ফেরদৌস চন্দনাকে বিয়ে করেন আইয়ুব বাচ্চু। তাদের দুই সন্তান মেয়ে ফাইরুজ সাফরা আইয়ুব ও ছেলে আহনাফ তাজওয়াব আইয়ুব। ২০১৮ সালের অক্টোবরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আইয়ুব বাচ্চু। আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যু বার্ষিকী ১৮ অক্টোবর। মৃত্যুর দু’দিন আগে রংপুরের কনসার্টে অংশ নেন তিনি। ঢাকায় ফিরে অসুস্থ হোন। এরপর হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় তাঁর।