জাপার মহাসচিব নিয়ে নতুন মেরুকরণ, এ সপ্তাহেই নাম ঘোষণা
জাতীয় পার্টির সদ্য প্রয়াত মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর জায়গায় নতুন মহাসচিব কে হবেন তা নিয়ে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে দলটিতে। জাপার নেতারা বলছেন, গত ২ অক্টোবর বাবলুর মৃত্যুর পর পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে যাদের নাম আলোচনায় ছিল তারা অনেকটা ব্যাকফুটে (পশ্চাৎপদ) চলে গেছেন। বর্তমানে নতুন করে দুজনের নাম আলোচনায় এসেছে। তারা হলেন— কো-চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু ও অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া।
জাপার চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জাপার পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে মুজিবুল হক চুন্নু ও রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া নাম প্রস্তাব করেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম (জি এম) মোহাম্মদ কাদেরের কাছে। তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন মহলে (আওয়ামী লীগ) চুন্নুর গ্রহণযোগ্যতা বেশি। অন্যদিকে, দলের মধ্যে রেজাউল ইসলামের ভাবমূর্তি ভালো হলেও বয়সের কারণে তিনি পিছিয়ে পড়েছেন।
গত ৭ সেপ্টেম্বর পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জাপার পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে মুজিবুল হক চুন্নু ও রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া নাম প্রস্তাব করেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের কাছে। তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন মহলে চুন্নুর গ্রহণযোগ্যতা বেশি। অন্যদিকে, দলের মধ্যে রেজাউল ইসলামের ভাবমূর্তি ভালো হলেও বয়সের কারণে তিনি পিছিয়ে পড়েছেন
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাপার চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর স্মরণ সভা শেষ হবে। স্মরণ সভা শেষে পার্টির পরবর্তী মহাসচিব কে হবেন— সে বিষয়ে ভাবব। এ মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না।
তবে জাতীয় পার্টির উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র বলছে, গত ২ অক্টোবর জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর মৃত্যুর পর জাপার পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশিদ ও অতিরিক্ত মহাসচিব গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী নাম আলোচনায় আসে। তাদের মধ্যে শামীম পাটোয়ারীকে মহাসচিব করার পরিকল্পনাও ছিল দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের। কিন্তু এ পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়ান দলের সিনিয়র নেতারা। অনেকে এ বিষয়ে (শামীম পাটোয়ারীকে মহাসচিব না করতে) প্রকাশ্যে গণমাধ্যমে হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেন। তাই মুজিবুল হক চুন্নু ও রুহুল আমিন হাওলাদারের মধ্যে যেকোনো একজনের দলের পরবর্তী মহাসচিব হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
শুক্রবার বিকেলে রুহুল আমিন হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র ও কাউন্সিলে মহাসচিব করার পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে দলের চেয়ারম্যানকে। তিনি কার সঙ্গে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, সেটি উনার বিষয়। আমি মনে করি, তিনি যাকে মহাসচিব করবেন তা মেনে নেওয়া দলের জন্য মঙ্গল।
এক প্রশ্নের জবাবে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আজ (শুক্রবার) যেহেতু বাবলু ভাইয়ের স্মরণ সভা শেষ হয়েছে, তাই আগামী কয়েক দিনের মধ্যে হয়তো নতুন মহাসচিবের নামের ঘোষণা আসতে পার। আসলে কে পরবর্তী মহাসচিব হবেন এবং কবে নাম ঘোষণা করা হবে— পুরো বিষয়টি নির্ভর করেছে চেয়ারম্যানের ওপর।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার (৮ অক্টোবর) জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর স্মরণ সভা অনেকটা দলের পরবর্তী মহাসচিবপ্রত্যাশীদের শোডাউনে পরিণত হয়। সমর্থকরা নিজ নিজ নেতাকে পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে অভিনন্দন জানান। কেউ কেউ দলের পরবর্তী মহাসচিব হতে গেলে কী কী যোগ্যতা লাগবে, তা নিয়েও বক্তব্য দেন।
এদিন সন্ধ্যায় কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর স্মরণ সভায় দলের পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে মুজিবুল হক চুন্নুকে তার সমর্থকরা আগাম অভিনন্দন জানান। সভায় জাপার পরবর্তী মহাসচিবপ্রত্যাশী দলের কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা প্রয়াত মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর স্মৃতিচারণের পাশাপাশি পরবর্তী মহাসচিব হওয়ার ‘যোগ্যতা’ নিয়েও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘পোড়খাওয়া ও ত্যাগী নেতাদের দলের মহাসচিব করতে হবে।’ এ সময় মঞ্চে বসা জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের তার দিকে বিশেষ দৃষ্টিতে তাকান। অন্যদিকে, সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, তিনি মহাসচিব হওয়ার দৌড়ে নেই।
আগামী দু-এক দিনের মধ্যে জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিব পাওয়া যাবে। মুজিবুল হক চুন্নু, রুহুল আমিন হাওলাদার ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা— ক্ষমতাসীন মহলে যার গ্রহণযোগ্যতা বেশি মহাসচিব হওয়ার সম্ভাবনা তার তত বেশি
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির এক প্রেসিডিয়াম সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামী দু-এক দিনের মধ্যে জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিব পাওয়া যাবে। মুজিবুল হক চুন্নু, রুহুল আমিন হাওলাদার ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার মধ্যে যেকোনো একজন জাপার পরবর্তী মহাসচিব হবেন। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন মহলে যার গ্রহণযোগ্যতা যত বেশি মহাসচিব হওয়ার সম্ভাবনা তার তত বেশি।
এএইচআর/এমএআর