১৫ আগস্ট কুশীলবদের স্বরূপ উন্মোচন সময়ের দাবি
১৯৭৫ সালের এই দিনে শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। ঘটনার প্রায় ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। কিন্তু ২০০২ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার এসে জাতীয় শোক দিবস পালন বাতিল করে। পরবর্তীতে হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসাবে পুনর্বহাল করে। তারপর থেকে দিনটি যথাযথ মর্যাদার সাথে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমি গ্রামে ছিলাম। বাড়িতে রেডিও ছিল না। ওইদিন সকালে বড় ভাইয়ের কাছে শুনলাম বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। নিজ কানে শোনার জন্য বাড়ির পাশে বাজারের দোকানে রেডিও শোনার জন্য বের হয়েছিলাম। রেডিওয়ালার দোকানে মানুষের জটলা দেখে পাশে দাঁড়িয়ে রেডিও শোনার চেষ্টা করলাম। তাৎক্ষণিক যা শুনলাম তা হচ্ছে, মেজর ডালিম নামের একজন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে।
জটলার লোকজন উহু্ আহা্ করে আফসোস করছে। কারণ জানার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। মনে হলো, সবার ভেতরে একটা ভীতি এবং আতঙ্ক কাজ করছে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে কেন খুন করা হয়েছিল তা তখন স্পষ্ট হয়নি। জানার কোনো উপায়ও ছিল না। কেননা নৃশংস ঘটনাটি নানান কৌশলে দেশের মানুষের কাছ থেকে আড়াল করার সব ধরনের অপচেষ্টা করা হয়েছিল। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে একদিন নয়, দুই দিন নয়, ২১ বছর সকল প্রচার মাধ্যম থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। রাষ্ট্র চলছিল ১৯৭১ পূর্ববর্তী পাকিস্তানি ভাবধারায়।
রেডিওয়ালার দোকানে মানুষের জটলা দেখে পাশে দাঁড়িয়ে রেডিও শোনার চেষ্টা করলাম। তাৎক্ষণিক যা শুনলাম তা হচ্ছে, মেজর ডালিম নামের একজন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ছাড়াও ঐ রাতে তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু পুত্র শেখ রাসেল, বঙ্গবন্ধু পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তার জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিল, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করা হয়।
বিপথগামী সেনা সদস্যদের আরেকটি দল বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগের নেতা শেখ ফজলুল হক মনির বাসায় হামলা চালিয়ে তাকে, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায় হামলা করে তাকে ও তার কন্যা বেবি, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় আবদুল নাঈম খানকে হত্যা করে।
দুই দশকেরও পর ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয় এবং তার চূড়ান্ত রায়ে ১২ জনকে মৃত্যু দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের সবাই তৎকালীন মধ্যম সারির সেনা কর্মকর্তা যারা সরাসরি হত্যাকাণ্ড এবং পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছিল।
পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ঐ ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে উচ্চ আদালত চূড়ান্ত রায় দেয়। ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ছয়জন এখনো যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে পালিয়ে আছে। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল মাজেদকে গ্রেফতার করা হয় এবং ১২ এপ্রিল তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, হত্যাকাণ্ড মামলায় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের দিকটা বিবেচ্য ছিল না বলে হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলব ও ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচনের মতামত দেওয়া হয়।
১৯৯৬ সালের আগ পর্যন্ত অজানা কারণে হত্যাকাণ্ডের পটভূমি এবং অপরাপর প্রেক্ষাপটের উপর তেমন লেখালেখিও হয়নি। তবে বিগত বারো-তেরো বছর ধরে এই বিষয়ের উপর গবেষণা এবং অসংখ্য লেখালেখি হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিশ্লেষকরা মনে করেন, হত্যাকাণ্ডটি নিছক ছিল না বরং এর পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল যা পরবর্তীতে মামলার রায়ে ইঙ্গিত করা হয়।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে একদিন নয়, দুই দিন নয়, ২১ বছর সকল প্রচার মাধ্যম থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। রাষ্ট্র চলছিল ১৯৭১ পূর্ববর্তী পাকিস্তানি ভাবধারায়।
দেশি-বিদেশি বিশ্লেষকদের বিশ্লেষণে বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে যেসব ব্যক্তি এবং সংস্থার নাম উঠে এসেছে সেসব পুনরায় উল্লেখ করলে চর্বিত চর্বণই মনে হবে। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণের ধারাবাহিকতায় তা অধিক মাত্রা যোগ করবে বলে আমি মনে করি।
দেশি-বিদেশি অনেক খ্যাতনামা বিশ্লেষক মনে করেন, খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর খন্দকার মোশতাক (বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন) নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার প্রথম বেতার ভাষণে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিষয়ে ‘টু’ শব্দটিও করেননি বরং হত্যাকারীদের জাতির গর্ব ও সূর্যসন্তান বলে আখ্যা দেন। তিনি ঐ বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করে ঘাতকদের বিচার বন্ধ করেন। আর জিয়াউর রহমান সেই অধ্যাদেশটিকে পঞ্চম সংশোধনীর অন্তর্ভুক্ত করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা আগে থেকেই জানতেন সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপ-প্রধান জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ১৯৭৬ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারুক লন্ডনে ব্রিটিশ সাংবাদিক অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তথ্যটি জোরালোভাবে উঠে আসে।
মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফশুলজও মনে করেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ও যোগাযোগ নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিকিউটিভ ইন্টেলিজেন্স রিভিউ (ইআইআর)-থেকে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ১৫ জনকে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার ১৬ দিন পর, ১৯৭৫ সালের ৩১ আগস্ট, পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোর বিরোধী সৌদি আরব বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরপরই বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পরে খুনিদেরকে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরপরই খুনের সাথে মোশতাকের জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। মোশতাকের পাশাপাশি বাকশাল সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য তাহেরউদ্দিন ঠাকুরেরও সম্পৃক্ততা ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে।
কুমিল্লার পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক মাহবুল আলম চাষী, যিনি প্রবাসী সরকারের মোশতাকের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা কুমিল্লার এমপি জহুরুল কাইয়ুম ও তাহেরউদ্দিন ঠাকুরসহ কলকাতায় মার্কিন কনসাল জোসেফ ফারল্যান্ডের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ঠেকাতে কনফেডারেশনের প্রস্তাব নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে, তিনিও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা পর শাহবাগ রেডিও স্টেশনে সশরীরে উপস্থিত হন বঙ্গবন্ধু সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, কুমিল্লার পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক মাহবুল আলম চাষী।
মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পরে খুনিদেরকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর মেজর ডালিম যখন ভোরে রেডিও স্টেশন থেকে বঙ্গবন্ধুর হত্যা সংবাদ প্রচার করছিলেন সে সময় সেখানে জেনারেল জিয়া ও কর্নেল (অব.) তাহের ছাড়াও জেনারেল (অব.) আতাউল গণি ওসমানী উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে মোশতাকের সঙ্গেও তার সম্পর্কের কথা জানা যায়। মোশতাকের ডিফেন্স অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর ওসমানীর তত্ত্বাবধানেই পাকিস্তান প্রত্যাগত সেনা কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বসানো শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর মাওলানা ভাসানীর ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ভাসানী-মুজিবের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকার পরেও মোশতাকের বিরুদ্ধাচরণ করেননি, এমনকি মুজিব হত্যার কোনো প্রতিবাদ তিনি করেননি। নীতি-নৈতিকতার বিসর্জন দিয়ে বাঙালি জাতির পিতার খুনি চক্রকে সমর্থন জানিয়েছিলেন প্রকাশ্যে। মোশতাকদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। ইত্তেফাক পত্রিকার বিখ্যাত সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার পুত্র তিনি। অথচ সংবিধান সংস্কার করে যখন বাকশাল প্রতিষ্ঠা হয় তখন মইনুল হোসেন আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর ইত্তেফাক পত্রিকায় লেখা হয়েছিল ‘প্রত্যুষে বেতারে এই ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনগণ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলিয়া একটি আকাঙ্ক্ষিত সূর্যরাঙ্গা প্রভাত দেখিতে পায়।’ সে সময় ইত্তেফাকের কর্ণধার ছিলেন এই মইনুল হোসেন।
তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এবং পাকিস্তানের জুলফিকার আলী ভুট্টো চক্র বাংলাদেশের স্বাধীনতারই শুধু বিরোধিতা করেনি, স্বাধীন বাংলাদেশ যাতে বিশ্ব মানচিত্রে টিকে থাকতে না পারে তারও চক্রান্ত করেছিল। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এবং ভুট্টো যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল এর প্রমাণ রয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর মাওলানা ভাসানীর ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ভাসানী-মুজিবের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকার পরেও মোশতাকের বিরুদ্ধাচরণ করেননি, এমনকি মুজিব হত্যার কোনো প্রতিবাদ তিনি করেননি।
বিশিষ্ট মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফশুলজ-এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে যে ‘সিআইএ’ বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত (Badhwar, Feb. 4, 2014, CIA’s Dacca Connection)। লিফশুলজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কিসিঞ্জারের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের স্টাফ অ্যাসিস্টেন্ট রজার মরিস বলেন, ‘it is absolutely plausible that Kissinger gave his nod to Mujib’s outer because Mujib was on Kissinger’s enemy list of the ‘three most hated men’ along with Allende and Thieu.’ (Badhwar, Feb. 4, 2014, CIA’s Dacca Connection)। তবে লিফশুলজ এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান করা প্রয়োজন আছে বলে উল্লেখ করেন।
বঙ্গবন্ধুর হত্যা পরিকল্পনা নিয়ে লিফশুলজ আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার এক সপ্তাহ আগে মার্কিন দূতাবাসের এক সিনিয়র অফিসারের সাথে দেখা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। এছাড়াও ঢাকায় সিআই’র স্টেশন প্রধানের সঙ্গেও জিয়া একান্ত বৈঠক করেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় ঘোষণার পর রায়ে উল্লেখিত পর্যবেক্ষণ নিয়ে অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, হত্যাকাণ্ডের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়টিতে এখনো অস্পষ্টতা রয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা গত ১ আগস্ট কৃষক লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বলেন, ‘হত্যার বিচার হয়েছে। তবে এ ষড়যন্ত্রে কারা ছিল, একদিন সেটাও পরিষ্কার হবে। কিন্তু আমাদের কাজ একটা ছিল প্রত্যক্ষভাবে যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার করা।
এটা সবাই বিশ্বাস করে যে বঙ্গবন্ধু কন্যা যা বলেন তা করেন। তিনি ইতিমধ্যেই যথাযথ প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, জেল হত্যার বিচার এবং অন্যান্য রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিচার করছেন এবং করেই যাচ্ছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের সংশ্লিষ্টতা একটি নির্মোহ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে উন্মোচন করবেন, রিপোর্টটি সবার কাছে একটি স্থায়ী সম্পদে পরিণত হবে। এটি আমাদের সবার প্রত্যাশা।
ড. মো. আইনুল ইসলাম ।। অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়