সবার সাথে বন্ধুত্ব ও অপার সম্ভাবনা
প্রিয় বাংলাদেশের জন্য অপার সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে। সম্প্রতি চীন-আমেরিকা-ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েন, মিয়ানমারে চাইনিজ স্থাপনার ওপর হামলাসহ নানাবিধ বিশ্ব সমীকরণে বাংলাদেশ এই সময়ে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং রফতানি বাণিজ্যের জন্য উপযুক্ত ও নির্ভরযোগ্য ভূমি।
ভারতে একদিনে ৬ শত চাইনিজ শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। চীন, ভারতে আমদানি-রফতানি নেমে এসেছে প্রায় শূন্যের কোটায়। আমেরিকা চাইনিজ পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করছে এবং রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু উভয় রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাজারে চাইনিজ বা সমতুল্য পণ্যের চাহিদা ব্যাপক। তাদের শিল্পের মান ও শ্রমমূল্যের কারণে এই চাহিদা নিম্নমুখী হবে না। চীনও ভারত-আমেরিকার পণ্য রফতানি বন্ধ করেছে। একটি বিশাল জনগোষ্ঠীর বসবাস ভারত ও চীনে। তাদের অভ্যন্তরীণ শ্রমমূল্য ও জনগণের ক্রয়ক্ষমতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমেরিকা, ইউরোপের ক্রয়ক্ষমতা পূর্ব থেকেই বেশি।
বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতির জনকের স্বপ্ন ও কারো সাথে বৈরিতা নয়, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বের পররাষ্ট্র নীতির কারণে আজও আমরা কৌশলগত সুবিধা পাচ্ছি। সবার সাথে আমাদের বন্ধুত্ব বিদ্যমান।
বাণিজ্য সহজীকরণের সূচক এগিয়েছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমাতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হয়েছে। শিল্পের জন্য গ্যাস আমদানি করে, বিদ্যুতে বিপ্লব ঘটিয়ে, ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমিয়ে, প্রাইভেট সেক্টরে বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তি সহজীকরণ করে শিল্পায়নের সকল পূর্বশর্ত তিনি পূরণ করেছেন। এছাড়াও যেকোনো সমস্যা উত্থাপন করলেই তিনি দ্রুত সমাধান করছেন।
এখন আমরা পরিকল্পিত ও শান্তিপূর্ণভাবে এগোলেই ভারত, চীন, আমেরিকা, ইউরোপের বাজারে রফতানি বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটাতে পারি। আমাদের শিল্প উদ্যোক্তারা ইতোমধ্যে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। একটি বিশাল কর্মোপযোগী জনশক্তি আমাদের অন্যতম বড় সম্পদ।
ইতোমধ্যে জাতির জনকের কন্যা দেশে ১০০ টি ইকোনোমিক জোন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে চলেছেন। চট্টগ্রাম ও ফেনীর ৩০ হাজার একর জমির ওপর বিশাল বঙ্গবন্ধু ইকোনোমিক জোন নির্মাণের কাজ রকেট গতিতে এগিয়ে চলছে। আরও কয়েকটির কাজও দ্রুত চলছে।
বাণিজ্য সহজীকরণের সূচক এগিয়েছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমাতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হয়েছে। শিল্পের জন্য গ্যাস আমদানি করে, বিদ্যুতে বিপ্লব ঘটিয়ে, ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমিয়ে, প্রাইভেট সেক্টরে বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তি সহজীকরণ করে শিল্পায়নের সকল পূর্বশর্ত তিনি পূরণ করেছেন। এছাড়াও যেকোনো সমস্যা উত্থাপন করলেই তিনি দ্রুত সমাধান করছেন।
এখন সময় আমাদের। এখন সময় জনগণের। যার যা আছে তাই নিয়ে উৎপাদন, কর্মসংস্থান এবং রফতানি বাণিজ্যে সুচিন্তিতভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শিল্পায়নের জন্য প্রস্তুত দেশে আন্তর্জাতিক সমীকরণের কৌশলগত সুযোগ নিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে প্রিয় মাতৃভূমি এগিয়ে যাবে।
রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়, বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি সকল রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতার প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ করছি, দয়া করে সহিংসতা সৃষ্টি করে বাংলাদেশের সম্ভাবনা হত্যা করবেন না। ধর্মকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং ধ্বংস করবেন না।
রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়া বা রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ প্রাপ্তির অধিকার সবার আছে। তবে, তা হতে হবে সাংবিধানিকভাবে সভ্য পদ্ধতিতে। আপনারা জনগণের নিকট যান, তাদের উদ্বুদ্ধ করুন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতায় যান।
তর্কের কারণে বলতে পারেন, সরকার ভোটে কারচুপি করবে। আমি ভোট করা মানুষ, আমি বলছি, জনতার বাধভাঙা জোয়ার থাকলে এবং সংগঠিত ত্যাগী কর্মী থাকলে প্রশাসনের গুটিকয়েক ব্যক্তি কারচুপি করতে পারে না। আর জনতার সমর্থন না থাকলে, নিরপেক্ষ ভোটেও না জিতলে কারচুপির গান গাওয়া যায়, ফল আসে না।
বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি সকল রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতার প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ করছি, দয়া করে সহিংসতা সৃষ্টি করে বাংলাদেশের সম্ভাবনা হত্যা করবেন না। ধর্মকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং ধ্বংস করবেন না।
আরেকটি অভিযোগ তুলতে পারেন, সরকার সংগঠিত হতে দেয় না। সরকার সহিংস সভা সমাবেশ করতে বাধার সৃষ্টি করে সত্য। কিন্তু গণতান্ত্রিক পদ্ধতির ওপর বাধা সৃষ্টি করছে না। উপরন্তু সরকারের প্রতিপক্ষের নিকট রাজনীতির সুযোগ সরকারি দলের চেয়ে বেশি। তারা প্রতিনিয়ত মসজিদকে রাজনীতি ও জনমত গঠনে কাজে লাগাচ্ছেন। আর এখন প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের কল্যাণে বিকেল-সন্ধ্যায় বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের চায়ের দোকানে একাধিক মিনি পার্লামেন্ট বসে। সেখানে সরকার, বিরোধী দল উভয়ের ধোলাই চলে। জনমত গঠন করতে চাইলে শান্তিপূর্ণ অসংখ্য বিকল্প পথ আছে। তা কাজে লাগাতেই পারেন।
দয়া করে জনগণের নিকট যান। জনগণ চাইলে আপনারা আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবেন। কিন্তু দেশটার ক্ষতি করবেন না, দেশের অমিত সম্ভাবনা ধ্বংস করবেন না।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহু সাধনা করে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাঙালির জন্য ১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। ১৯৭২ সালে স্বীয় দক্ষতায় ভারতীয় মিত্রবাহিনীকে ফেরত পাঠিয়ে বাঙালি কষ্টার্জিত স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ করেছেন, সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। আজ দীর্ঘকাল পর বঙ্গবন্ধু কন্যার নিরলস শ্রমে বাঙালির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দয়া করে এই সুযোগ গলা টিপে হত্যা করবেন না।
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ।। সাংগঠনিক সম্পাদক, আওয়ামী লীগ; হুইপ, জাতীয় সংসদ