জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ : তথ্য-সংগ্রহ ও উপস্থাপন
‘একাত্তরের দিনগুলি’ বইয়ের ঘটনাগুলো এক ধরনের সামগ্রিকতা নিয়ে উপস্থাপিত হয়েছে। মনে রাখা দরকার, কোনো বর্ণনাই সমগ্রতাকে নিঃশেষে ধারণ করতে পারে না। আর এখানে তো বর্ণিত হয়েছে এক যুদ্ধ পরিস্থিতি। সেই যুদ্ধে জনগণের বিরাট অংশ নানাভাবে যুক্ত; বিশাল স্থানের বিপুল মানুষ নিজেদের ধরনে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছিল।
দেশ-বিদেশের নানামুখী তৎপরতা তো ছিলই। তারপরও লেখক সামগ্রিকতার একটা বোধ তৈরির চেষ্টা করেছেন। পরিস্থিতিটা যেন যথাসম্ভব বিচিত্র তল থেকে ধরা থাকে, যেন যুক্ত বিভিন্ন পক্ষের অবস্থাটা মোটামুটি আঁচ করা যায়, আর ঘটনার তাৎপর্যগত দিক সম্পর্কেও পাঠকের মনে একটা আন্দাজ জমা হতে পারে, তার নানা কায়-কসরত ও সাফল্য এসব বয়ানে প্রথম পাঠেই অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে।
জাহানারা ইমাম কি জানতেন, এই দিনলিপি একসময় বিপুল বাংলাদেশের জন্য বিচিত্র তথ্য আর তাৎপর্যের উৎস হবে? তার প্রস্তুতি, বিস্তার আর সাজানোর ধরন দেখে কিন্তু তাই মনে হয়।
আরও পড়ুন >>> প্যারী মোহন আদিত্য : অল্পশ্রুত মহান দেশপ্রেমিকের প্রতিকৃতি
তথ্যের উৎসগুলো একবার দেখে নেওয়া যাক। প্রথমে নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা। তার অভিজ্ঞতার বিশেষ মূল্য আছে। তিনি গৃহনিবাসী ভদ্রমহিলা নন। শুধু শিক্ষিত এবং সচেতন নন, সক্রিয়ও বটে। সেই সক্রিয়তার একদিকে আছে পারিবারিক কায়কারবার। পরিবারের সবার কল্যাণ-কামনা তাকে একভাবে সক্রিয় করেছে।
খাদ্য-সংস্কৃতি থেকে শুরু করে সন্তানদের মানসিক তৃপ্তি আর ভবিষ্যৎ পর্যন্ত সেই কল্যাণ-কামনার অন্তর্গত। আত্মীয়-পরিজন থেকে শুরু করে প্রতিবেশী আর যুদ্ধলিপ্ত চেনা-অচেনা হাজারো মানুষ কিংবা এমনকি যুদ্ধের শিকার মানুষেরাও তার সহানুভূতির প্রত্যক্ষ আওতায় এসেছে। এসবই তার জন্য তথ্যের উৎস হিসেবে কাজ করেছে।
জাহানারা ইমাম জানতে ও জানাতে চেয়েছেন। তাই জেনেছেন অনেক বেশি। খুঁটিয়ে জেনেছেন। জানার ক্ষেত্রে আগ্রহের বাইরে তার অবস্থান ও শ্রেণিগত কিছু সুবিধাও ছিল। তিনি অনায়াসেই পৌঁছাতে পেরেছেন ঘটনার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে।
একসময় জাহানারা ইমাম চাকরিজীবী ছিলেন। এখন আর পেশাজীবী নন। যুদ্ধকালীন সময়ে এই বাস্তবতা তার অনুকূলে কাজ করেছে। অবগুণ্ঠনবতীর অপ্রতিভতা তার মধ্যে একবিন্দুও ছিল না। অথচ চারদিকে লিপ্ত থাকার মতো সময় ছিল পর্যাপ্ত।
তার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সেই সময়, যখন বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতে সাংস্কৃতিক পরিসরের সক্রিয়তা ঢাকায় রাজনৈতিক সক্রিয়তার নামান্তর হয়ে উঠেছিল। এই কারণেই ব্যক্তি জাহানারা ইমামের সাংস্কৃতিক সক্রিয়তা তার রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক আর চেতনার সহায়ক হয়েছে।
আরও পড়ুন >>> ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত : ভাষা আন্দোলন ও বাংলাদেশের ইতিহাস
নিজের বয়ানের পর এসেছে প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজের পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধবদের, কখনো কখনো কিছু দূরের মানুষদেরও। বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে রুমীর অভিজ্ঞতা। যুদ্ধ শুরুর আগের রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোর বর্ণনার ক্ষেত্রে একথা বিশেষভাবে প্রযোজ্য।
এরা আবশ্যিক দায়িত্ব হিসেবে কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। বর্ণনা করেছেন লেখকের কাছে। লেখক নিজেও খুঁটিয়ে জেনেছেন ঘটনার আগপাশতলা। তারপর উপস্থাপন করেছেন পাঠকের জন্য। একেবারে প্রত্যক্ষ উক্তিতে। তাতে ঘটনার নাটকীয়তা, আবেগ আর বিচার-বিশ্লেষণ-মূল্যায়ন চাপা থাকেনি। বয়ানটা পরিস্থিতির তাপ-ভাঁপসহ সংলাপ-আকারে পুনরুৎপাদিত হয়েছে।
এরপর যুক্ত হচ্ছে তথ্যের তৃতীয় উৎস সংবাদপত্র আর অন্যান্য সংবাদমাধ্যম। বেশ কয়েকবার লেখক গতকাল ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে পরেরদিনের প্রধান দৈনিকগুলোর, এমনকি রেডিওর ভাষ্য শুনিয়েছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কে কোন পক্ষের, তা লেখকের জানা। ফলে প্রচারিত সংবাদ বা সংবাদভাষ্য সম্পর্কে নিজের মূল্যায়নও যুক্ত হয়েছে সাথে সাথে।
যুদ্ধ শুরুর পর সংবাদপত্রের ওপর প্রবল সেন্সরশিপ জারি হলে আর পাকিস্তানবিরোধী কাগজগুলো বন্ধ হয়ে গেলে তাকে পাকিস্তানপন্থী কাগজই পড়তে হয়েছে। সেগুলোর ভাষ্যও জানাতে ভোলেননি লেখক। যেমন, ৩১ মার্চ তারিখের পত্রিকা থেকে তুলে দেওয়া কিছু টুকরা মন্তব্য—[দৈনিক] পূর্বদেশের লেখার মাঝখানে একটা লাইন একেবারে বুকে এসে ঘা মারল—‘শান্তিপ্রিয় বেসামরিক নাগরিকদের যেসব সশস্ত্র দুষ্কৃতকারী হয়রানি করছিল, তাদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তা সাফল্যের সঙ্গে সমাপ্ত হয়েছে।’
আরও পড়ুন >>> অসাম্প্রদায়িক জাতির দেশ
মর্নিং নিউজ হেডলাইন দিয়েছে—ইয়াহিয়াজ স্ট্যান্ড টু সেভ পাকিস্তান প্রেইজড। পাকিস্তান রক্ষায় ইয়াহিয়ার দৃঢ় সংকল্প প্রশংসিত। এরপর ... ‘অক্ষম রাগে আর অপমানে ফালাফালা করে ছিঁড়ে ফেললাম কাগজ দুটো। এছাড়া আর কিইবা করার ক্ষমতা আছে আমাদের।’
এখানে ওইদিনের পত্রিকায় যে কারণে ইয়াহিয়ার প্রশংসা করা হয়েছে, তা আমরা ইতিমধ্যে জানি। লেখক আমাদের আগেই জানিয়েছেন। ফলে সংবাদ বা সংবাদভাষ্য পড়ার সাথে সাথেই আমাদের কাছে তা হাজির হয় ‘আইরনি’ হিসেবে। আমরা বুঝে যাই, এই যুদ্ধপরিস্থিতিরই প্রচারণা, যুদ্ধেরই অংশ।
আমরা বুঝে যাই পত্রিকার মূল্যায়নে কোনো ধরনের সুবিচার নেই। তাই লেখকের ক্রোধ আমাদের কাছে সম্পূর্ণ ন্যায্য মনে হয়। এবং পত্রিকার সংবাদ, আগের দিনের বয়ান, আর লেখকের ক্রোধ সবই এক চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়-যুদ্ধের সামগ্রিক মূর্তির অংশ হয়ে আমাদের কাছে হাজির হয়।
অধিকাংশ বর্ণনায় এক চতুর্থ উৎসের তথ্যও যুক্ত হয়েছে। ঘটনার সাথে যুক্ত ব্যক্তি বা ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর মূল্যায়ন। জাহানারা ইমাম জানতে ও জানাতে চেয়েছেন। তাই জেনেছেন অনেক বেশি। খুঁটিয়ে জেনেছেন। জানার ক্ষেত্রে আগ্রহের বাইরে তার অবস্থান ও শ্রেণিগত কিছু সুবিধাও ছিল। তিনি অনায়াসেই পৌঁছাতে পেরেছেন ঘটনার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে।
এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিপক্ষের কাছে পৌঁছানোও তার পক্ষে সম্ভব ছিল। তিনি সেসব তথ্য আর বিশ্লেষণ নিজে জেনেছেন আর আমাদের জানিয়েছেন।
৩ এপ্রিল ১৯৭১-এ লেখা জিঞ্জিরা অপারেশনের বর্ণনার এক ভালো উদাহরণ। প্রথম দেওয়া হলো পত্রিকার হেডলাইন। তারপর আত্মীয়-বন্ধুদের কাছে শোনা কিছু কথা। কিছু অনুমান-বিশ্লেষণ। সবশেষে বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী আর ভিকটিমদের বর্ণনা। অন্য কোনোভাবে এরকম ধারাবাহিক আর নির্ভরযোগ্য ধারণা তৈরি করা যেত কি না সন্দেহ।
আরও পড়ুন >>> মৃত্যুঞ্জয়ী শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত
মৃত্যু বা বিপর্যয়ের সংবাদ দেওয়া হয়েছে দুইভাবে। পরিচিত আত্মীয়-বন্ধুদের ক্ষেত্রে বিশেষ বর্ণনা। আর বিপুল মানুষের ক্ষেত্রে নির্বিশেষ বর্ণনা। যেমন, ১৮ এপ্রিলের বর্ণনায় দেখছি শরীফ সাহেবের ইঞ্জিনিয়ার বন্ধু নূরুর রহমান আর তার বন্ধু ভিখু চৌধুরীর সস্ত্রীক মৃত্যুর খবর। মারা গেছে তিন তারিখে। তার কাজের ছেলে সঙ্গে ছিল। সে প্রাণে বেঁচেছে। এসে খবর দিয়েছে।
১৩ এপ্রিলের বর্ণনায় আছে বহু মানুষের মৃত্যুর খবর—‘সদরঘাট, সোয়ারীঘাটে নাকি দাঁড়ানো যায় না পচা লাশের দুর্গন্ধে। মাছ খাওয়াই বাদ দিয়েছি এজন্যে।’ ঠাটারি বাজারের কসাই-নিধনকাণ্ডের বর্ণনাও দেওয়া হয়েছে বিশেষ কায়দায়।
লেখক সেখানে বাজার করতে গিয়ে দেখেছেন, অতিরিক্ত পানি দিয়ে বাজার ধোয়া হয়েছে। তার সন্দেহ হয়েছে। দ্রুত কিছু মাংস কিনে চলে এসেছেন। পরে লুলু এসে খবর দিল, আগের দিন ওখানে কয়েকজন কসাইকে জবাই করে মারা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতা আর এই সংবাদ দুয়ে মিলে খবরটা উপস্থাপন করা হলো।
জাহানারা ইমাম বিভিন্ন উৎস থেকে সংবাদ সংগ্রহ করতেন বলে, নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বাইরের নানা সংবাদও দিতে পেরেছেন। ফলে যুদ্ধের, রাজনীতির, জাতীয়-আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার নানা দিক উদ্ভাসিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধকে স্থাপন করা গেছে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে।
২৪ এপ্রিল তারিখের বর্ণনায় মুজিবনগর সরকার আর ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক যুদ্ধের একটা ইশারা আছে। গুজব, শোনা কথা, রেডিও প্রোপাগান্ডা আর পত্রিকার সংবাদ মিলে এই ইশারা তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, পাকিস্তান পক্ষের কিছু উদ্যোগ আর বিবৃতি থেকেই লেখক অনেক কিছু সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন।
ঘটনা উপস্থাপনের এই নানামাত্রিকতার জন্যই এই বই দিনলিপির সীমা ছাড়িয়ে ইতিহাস বা উপন্যাসের শক্তি অর্জন করে। কিংবা হয়তো এমনও বলা যাবে, এভাবেই একাত্তরের দিনলিপি ব্যক্তিগততার সীমা ছাড়িয়ে হয়ে ওঠে সময়ের বা বিপুল জনগোষ্ঠীর সামষ্টিক দিনলিপি।
তথ্য যেভাবেই সংগৃহীত হোক, উপস্থাপনটা কিন্তু ফিকশনধর্মী। চরিত্রগুলো নিজ নিজ ভূমিকায় দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা দিয়ে সংলাপের বিশিষ্টতায় চিহ্নিত করা হয়েছে। এর ফলে ঘটনা-বর্ণনায় বৈচিত্র্য এসেছে, বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির সমাবেশ ঘটেছে।
আরও পড়ুন >>> রাজনৈতিক সম্প্রীতির দেশ!
যেমন, বারেকের সংলাপ বারেকের মতোই। উচ্চারণভঙ্গি আর শব্দরূপসহ বারেককে পুরোপুরি পাওয়া যাচ্ছে সংলাপে—‘সাবরে ফুন করেন আম্মা। খাবার-দাবার কিন্যা রাখতে কইছে। কই জানি গুণ্ডগোল লাগছে।’ একথা স্বল্পভাষী হৃদয়বান শরীফ সাহেব, বুদ্ধিদীপ্ত রুমী বা কিশোর জামীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। লেখক একস্বরী এই বয়ানকে বিভিন্ন স্বরের সমবায়ে প্রকাশ করতে চেয়েছেন।
জাহানারা ইমাম বিভিন্ন উৎস থেকে সংবাদ সংগ্রহ করতেন বলে, নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বাইরের নানা সংবাদও দিতে পেরেছেন। ফলে যুদ্ধের, রাজনীতির, জাতীয়-আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার নানা দিক উদ্ভাসিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধকে স্থাপন করা গেছে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে।
ঘটনা সাজানোর ভঙ্গির মধ্যে একটা মৃদু কিন্তু কার্যকর নাটকীয়তা আছে। আছে ঘটনার মোড় ফেরানো আর নতুন ঘটনার আকস্মিকতায়। একটা কার্যকর নাটকীয় আবহ তৈরি হয়েছে উদ্বেগ থেকে। এই উদ্বেগ কেন্দ্রীয়ভাবে মায়ের গৌণত পরস্পর-সম্পর্কিত যে কারও জন্য।
যুদ্ধের পক্ষ-প্রতিপক্ষ তৈরি হয়ে যাওয়ার পর এই উদ্বেগ অনুভূত হয়েছে ‘নিজ’ পক্ষের প্রায় সবার জন্যই। আর যোগাযোগহীনতা এই উদ্বেগের প্রধান উৎস।
মিলিয়ে দেখতে ইচ্ছা হয়, মোবাইলের যুগে এই উদ্বেগের স্বরূপ কেমন হতো? একই সঙ্গে শুধু ল্যান্ডফোন কীভাবে জীবনের গতি সহজ করতো, আর যাদের সেই সুযোগও ছিল না বা বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতে ফোন ব্যবহারের সুযোগ ছিল না তারা কীভাবে যোগাযোগের গভীর সংকটগুলো সামলাতো, তারও দারুণ নমুনা এই যুদ্ধকালীন বয়ান।
আরও পড়ুন >>> পঙ্কজ ভট্টাচার্য : ত্যাগী রাজনীতিবিদের জীবন সাধনা
আসলে ডায়েরির ভঙ্গিতে লেখার কারণেই এই সুবিধা পাওয়া গেছে। চীন পাকিস্তানকে দৃঢ় সমর্থন দিয়েছে। এই সংবাদ আরও তাৎপর্যপূর্ণভাবে ইতিহাসে বিশ্লেষিত হতে পারে। কিন্তু ব্যক্তির মধ্যে তার কী প্রভাব-প্রতিক্রিয়া পড়েছে, সেই কথা বলার জন্য ফিকশন করতে হয়। যেমন চীন সমর্থন দেওয়ায় রুমীর ‘খুব মন খারাপ’ হয়েছে। তার এবং তার ‘প্রগতিশীল’ বন্ধুদের মনে হয়েছে ‘প্রাণের বন্ধু বিপদের মুহূর্তে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’
তথ্যকে পরিস্থিতির পটভূমিতে উপস্থাপন, আর নৈর্ব্যক্তিক বিবরণীর মধ্যে ব্যক্তিনিষ্ঠ আবেগ-অনুভূতির সঞ্চার এই দুই গুণ বইটির ক্লাসিক হয়ে ওঠার পথে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ড. মোহাম্মদ আজম ।। অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়