ডিএনসিসিতে খালের সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম শুরু, ৪২ স্পটে খনন
খালের সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বুধবার গাবতলীর রিটেনশন পন্ড এলাকায় খালের সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম শুরু করেছে ডিএনসিসি। সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের (খাল ও ড্রেনেজ) দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দুই সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হয়েছে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। এরপর থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল উদ্ধার করে পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে কাজ করছে ডিএনসিসি।
আসন্ন বর্ষার আগে খালের পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে আজ থেকে সীমানা পিলার নির্মাণ করার কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। ড্রোনের সাহায্যে সিএস জরিপ ও আরএস জরিপ ধরে খালের সীমানা পিলারের স্থান নির্ধারণ করা হবে। এরপর সেসব স্থানে বসানো হবে স্থায়ী পিলার। সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে ডিএনসিসি।
এছাড়া খালের পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন খালের ৪২টি স্পটে খনন করবে ডিএনসিসি। এতে করে খালের পানি প্রবাহ ফিরে আসবে। ফলে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই কমে যাবে। কাজটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ। সম্প্রতি মোহম্মাদপুরের বসিলায় লাউতলা খালের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে এই খাল খননের কাজ করে ডিএনসিসি।
খাল খনন কার্যক্রম বিষয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, নগরীকে জলজট ও জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্ত করতে হলে খালগুলো উদ্ধার করতেই হবে। খালগুলোর পানি প্রবাহের সৃষ্টি ও নগরীর প্রত্যেকটি খালই মানচিত্র অনুযায়ী উদ্ধার করা হব। যারা অবৈধভাবে খালের জায়গা দখল বা খাল ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন তাদেরকে স্বেচ্ছায় অবৈধ দখল ছেড়ে দিতে হবে। অন্যথায় বিনা নোটিশেই অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ স্থাপনাগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, খাল উদ্ধার করে পানি প্রবাহ ঠিক করতে ৪২টি ডেড স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্থানে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই ডিএনসিসি খালগুলো উদ্ধার করে পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে।
ডিএনসিসি সূত্রে জানা গেছে, ডিএনসিসি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চলতি বছরের খালগুলো থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৭৫ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে খালগুলো থেকে প্রায় ৬৫ হাজার মেট্রিক টন ভাসমান বর্জ্য এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য আরও প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন স্লাজ অপসারণ করেছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে যেসব খাল থেকে ভাসমান বর্জ্য ও স্লাজ অপসারণ করা হয়েছে সেসব খালের পানিপ্রবাহও সচল করেছে ডিএনসিসি। বাকিগুলোর কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া আগামী বর্ষায় জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসীকে অনেকাংশে মুক্তি দিতে খালের ডেট স্পটে জরুরিভাবে খনন কাজ করবে ডিএনসিসি।
অন্যদিকে খাল দখলমুক্ত করা ও সীমানা নির্ধারণ করে সৌন্দর্য বর্ধনে তিন ধাপে কাজ করবে ডিএনসিসি। সেক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদী, মধ্য মেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি এই তিনটি ধাপে কাজগুলো করা হবে। প্রথম ধাপে খাল দখলমুক্ত করে বর্জ্য অপসারণ করে পানির প্রবাহ ফেরানো হবে। এরপর খালের পাড়ে গাছ লাগানো, ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেনের কাজ দুই ধাপের মাধ্যমে করবে সংস্থাটি। কাগজে-কলমে ডিএনসিসি এলাকায় ২৬টি খাল রয়েছে। এইগুলোর দুই পাড়ের সীমানা নির্ধারণ করা এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালের জায়গাগুলো উন্মুক্ত করতে প্রথমে কাজ করছে ডিএনসিসি।
এএসএস/ওএফ