২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি স্থাপনায় শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহার
আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি স্থাপনায় শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ুপরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। আর এটি করা গেলে দেশে অবৈধ ইট ভাটা বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন মন্ত্রী।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম অধিবেশন শেষে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘২০২৫ সালে আমরা সরকারি স্থাপনায় শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহার করতে পারব। এটা নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। আমরা যখন শতভাগ ব্লক ইটে যাব এমনিতেই অবৈধ ইট ভাটাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। দেশে যত অবৈধ ইট ভাটা আছে আমরা জেলা প্রশাসকদের সেগুলো বন্ধ করার ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা চেয়েছি।’
দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেসব ইট ভাটা স্থাপন করা হচ্ছে, তার বেশিরভাগই স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে গড়ে তোলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেক সময় জেলা প্রশাসকরা অবৈধ ইট ভাটা বন্ধ করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর এসেছে, বলেন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
অবৈধ ইট ভাটা বন্ধে প্রশাসন জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে জেলা প্রশাসকদের কোনো সমস্যা আছে বলে আমরা মনে করি না। ওনাদের সঙ্গে প্রশাসন থাকবে, মন্ত্রণালয় থাকবে; পুলিশ প্রশাসন তাদের সহযোগিতা করবে।
জেলা প্রশাকদের নির্দেশনা প্রসঙ্গে শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষায়, জীববৈচিত্র্য রক্ষায়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ পরিবর্তন রক্ষা করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকদের অনেক সহযোগিতা প্রয়োজন আছে। এ বিষয়ে আমরা ওনাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছি। আমরা পরিবেশের সুরক্ষার জন্য টিলাকাটা, পাহাড়কাটা, গাছকাটা এগুলোকে বন্ধ করার জন্য ওনাদের বলেছি। ওনারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
‘বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সর্বক্ষেত্রে ওনাদের সহযোগিতার প্রয়োজন আছে। আমাদের এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে আরও ১৬ শতাংশ বনায়ন দেখাতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা ওনাদের সহযোগিতা চেয়েছি।’
বনভূমি দখল বন্ধে পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে এর আগে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বনভূমি দখল বন্ধে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়েছি। কোন জেলায়, কোন মৌজায় বনভূমি বেদখল আছে, সেগুলো উদ্ধার করার জন্য ওনাদের সহযোগিতা আমরা আগেই চেয়েছি। যেন কেউ বনভূমি অবৈধ দখল না করতে পারে সেজন্য আবারও তাদের সহযোগিতা চেয়েছি।’
করোনা মহামারির কারণে দুই বছর বিরতির পর মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারপ্রধান দেশের জনগণের জন্য কাজ করার পাশাপাশি জেলা পর্যায়ের এই শীর্ষ কর্মকর্তাদের ২৪টি নির্দেশনা দেন।
সম্মেলন শুরুর দিন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বঙ্গভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন। রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে দায়িত্ব পালনে জনগণের সেবা দেওয়ার বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দিতে ডিসিদের প্রতি অনুরোধ করেন।
করোনা মহামারির কারণে এবার ভেন্যু বদলে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলন হচ্ছে। অন্যান্য বছর জেলা প্রশাসকদের অধিবেশনগুলো হয় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে। মঙ্গলবার শুরু হওয়া এ সম্মেলন শেষ হবে বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি)।
এনআই/জেডএস