সবাইকে নিয়ে একটি মানবিক নগর গড়তে চাই : মেয়র আতিকুল
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সবাইকে নিয়ে একটি মানবিক নগর গড়ে তুলতে চাই। সব স্তর থেকে সবার সহযোগিতা পেলেই এটি সম্ভব।
বুধবার গুলশান নগরভবনে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি। গণপরিসরে স্ট্রিট ভেন্ডর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অংশীজন সভার আয়োজন করে ডিএনসিসি ও ব্র্যাক।
আতিকুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও উদ্বাস্তুর কারণে ঢাকার জনসংখ্যার ওপর চাপ বাড়ছে, ঢাকা আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার লোক ঢাকায় ঢুকছে। আর এদের জায়গা হচ্ছে ফুটপাত ও বস্তিতে। ফলে নগরের সার্বিক অবস্থা কিছুটা খারাপ। ফুটপাত দখল হয়ে যাচ্ছে। সবার আগে এটি বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি বেশ কয়েকজন হকারের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বিক্রির সময় শুরু হয় বিকেল চারটার পর, কিন্তু তারা সকাল ১০টায় গিয়ে জায়গা দখল করে রাখেন। এতে মানুষের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। আমি তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, কেন তারা এমনটি করেন। তারা জানান, সকালে না এলে অন্য কেউ সেখানে বসে যাবে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমরা চিন্তা করেছি, পথচারীদের যদি ব্যাঘাত না ঘটে তাহলে হকারদের জায়গা দখল না হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া যেতে পারে। সপ্তাহের কিছু দিন, কিছু সময় এবং কিছু কিছু রাস্তায় এটি বাস্তবায়ন করা হবে। এভাবে তাদের এক সময় পুনর্বাসন করা হবে।
আতিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি জায়গা কেউ দখল পারবে না। এতে সবার সমান অধিকার। ভেন্ডরদের এ বিষয়গুলো ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা ওয়ার্কিং কমিটি করে দিতে চাই। ওয়ার্কিং কমিটি পলিসি তৈরি করে দেবে। কাদের এসব জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হবে, সেটিও স্থির করতে হবে। প্রয়োজনে পিপিপিতে (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) কাজ করতে হবে। এ কাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আসতে হবে, ভালো থাকার জন্য।
সভায় অংশ নেওয়া অন্যান্যদের পক্ষ থেকে ফুটপাত ব্যবস্থাপনায় রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনের সহায়তা, দুই সিটি করপোরেশনের যৌথভাবে কাজ করার বিষয়গুলো উঠে আসে। এছাড়া যারা নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট সময় বসতে চান, তাদের স্বল্প সুদে ঋণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলার প্রস্তাব তোলা হয়। একইসঙ্গে শহরে যেসব বড় বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে, প্রতিটিতে তাদের কর্মীদের জন্য হালকা নাস্তা ও স্মোক জোন তৈরি করার প্রস্তাব করা হয়।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, ঢাকাকে নিয়ে নতুনভাবে বাস্তবসম্মত চিন্তা করতে হবে। আমাদের শহরকে যারা কার্যকর রেখেছেন, সেই ইনফরমাল কর্মীদের এর কেন্দ্রে রেখে একটি উইন উইন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এজন্য আমরা এর শুধু টেকনিক্যাল সমাধান দিচ্ছি না। বিষয়টিতে নানা ধরনের স্টেকহোল্ডার জড়িত। তাই সরকারি-বেসরকারি, রাজনৈতিক নেতাসহ সবাইকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে পারলে আশা করি একটি বাস্তবসম্মত সমাধানে পৌঁছাতে পারব।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজার সভাপতিত্বে ও সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এএসএস/আরএইচ