প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘না’!
• রুলস অব বিজনেসে আটকে গেল প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত
• মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব : আইএমইডি সচিব
• প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই সবার আগে : এম এ মান্নান
• প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব : পরিকল্পনামন্ত্রী
• প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ফলোআপ থাকা উচিত : ড. জাহিদ
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) বিভাগীয় পর্যায়ে অফিস স্থাপনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (এনইসি) প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সিদ্ধান্তে একমত হতে পারেনি অর্থ মন্ত্রণালয়। আইএমইডি’র বিভাগীয় পর্যায়ে অফিস স্থাপন প্রস্তাবের মূল সারসংক্ষেপে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকেও তা অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু ‘রুলস অব বিজনেস’-এর অজুহাত দেখিয়ে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে সঙ্গে একমত হয়নি অর্থ মন্ত্রণালয়। তারা শাখা অফিস স্থাপনের প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দিয়ে আইএমইডি’র অধীনে একটি নতুন ডিপার্টমেন্ট (বিভাগ) গঠনের প্রস্তাব বিবেচনা/পরীক্ষা করে দেখার সুপারিশ করেছে।
২০১৯ সালের ১৯ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, দেশের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো আরও কঠোরভাবে দেখভাল করতে হবে আইএমইডিকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিভাগীয় পর্যায়ে আইএমইডি’র অফিস স্থাপনসহ পদসৃজনপূর্বক প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করে এডিপিভুক্ত প্রকল্পসমূহের নজরদারি কঠোর করতে হবে।”
পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আইএমইডি’র অফিস স্থাপনের পাশাপাশি পদসৃজন করে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিতে এনইসি সভায় অনুশাসন দেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ওই নির্দেশনার প্রায় তিন বছর পরও শুধুমাত্র অর্থ মন্ত্রণালয়ের একতরফা সিদ্ধান্তে এখনও বিভাগীয় পর্যায়ে অফিস স্থাপনের কাজ ফাইল চালাচালিতে আটকে আছে।
২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এনইসি সভায় নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, দেশের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো আরও কঠোরভাবে দেখভাল করতে হবে আইএমইডিকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভাগীয় পর্যায়ে আইএমইডি’র অফিস স্থাপনসহ পদসৃজনপূর্বক প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করে এডিপিভুক্ত প্রকল্পসমূহের নজরদারি কঠোর করতে হবে
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একতরফা সিদ্ধান্তের বিষয়ে আইএমইডি’র কর্মকর্তারা ঢাকা পোস্টকে জানান, তারা ‘রুলস অব বিজনেস’-এর অজুহাতে আইএমইডি’র প্রস্তাবটি আটকে দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় রুলস অব বিজনেস-এর ধারা ৪-এর ৯নং অনুচ্ছেদের ‘এ’ থেকে ‘এফ’ পর্যন্ত অনুসরণ করে মতামত দিয়েছে। এর বাইরেও রুলস অব বিজনেস-এ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বা সিদ্ধান্ত বাস্তবে রূপ দিতে আলাদা অনুচ্ছেদ আছে। যেটা অনুসরণ করেনি অর্থ মন্ত্রণালয়।
ধারা ৪-এর অনুচ্ছেদ ৯-এর ‘এ’ থেকে ‘এফ’ অনুসরণ করে যে মতামত দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় সেখানে অর্থাৎ রুলস অব বিজনেস- ১৯৯৬ (সংশোধিত ২০১৭) এর ধারা ৪-এর অনুচ্ছেদ ৯ অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়/বিভাগের কার্যক্রম মূলত নীতি প্রণয়ন, পরিকল্পনা, মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন, আইনগত বিষয়ে মন্ত্রীমহোদয়কে সহযোগিতা ইত্যাদি।
সচিবালয় নির্দেশমালা- ২০১৪ অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়/বিভাগের বিভাজন-অনুবিভাগ, অধিশাখা ও শাখার মধ্যে সীমিত এবং মন্ত্রণালয়/বিভাগের শাখা/অধিশাখা বিভাগীয় পর্যায়ে স্থাপনের সুযোগ নাই।
আইএমইডি’র কর্মকর্তারা জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় ‘রুলস অব বিজনেস’-এর ‘এ’ থেকে ‘এফ’ অনুসরণ করে যে মতামত দিয়েছে তার নিচের পয়েন্ট অর্থাৎ ‘জি’ তে বলা হয়েছে, “যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর চাওয়া বা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে।”এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আমলে নিলেও অর্থ মন্ত্রণালয় নেয়নি। ফলে রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সময়োপযোগী নির্দেশনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এসেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। যেটা কোনোভাবেই তারা করতে পারে না। কারণ, রাষ্ট্রের সব নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আমলেই ১৯৯৬ সালে ‘রুলস অব বিজনেস’ প্রণয়ন হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় ‘রুলস অব বিজনেস’-এর অজুহাতে আইএমইডি’র প্রস্তাবটি আটকে দিয়েছে। তারা রুলস অব বিজনেস-এর ধারা ৪-এর ৯নং অনুচ্ছেদের ‘এ’ থেকে ‘এফ’ পর্যন্ত অনুসরণ করে মতামত দিয়েছে। এর বাইরেও রুলস অব বিজনেস-এ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বা সিদ্ধান্ত বাস্তবে রূপ দিতে আলাদা অনুচ্ছেদ আছে। যেটা অনুসরণ করেনি অর্থ মন্ত্রণালয়
আবার রুলস অব বিজনেস-এর সংশোধনও করা হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাবস্থায়। সুতরাং অর্থ মন্ত্রণালয় রুলস অব বিজনেস-এর যে অজুহাত দিয়েছে, সেটি কোনোভাবেই ঠিক নয়। কারণ, রুলস অব বিজনেস-এর আদ্যোপান্ত, সবকিছুই জানেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সবকিছু জেনে-বুঝেই আইএমইডি’র বিভাগীয় পর্যায়ে অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।
এনইসি সভায় প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন
এনইসি সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে আইএমইডি’র পর্যবেক্ষণগুলো যথাযথ এবং চিহ্নিত চ্যালেঞ্জসমূহ উত্তরণে সময়োপযোগী। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে আইএমইডি’র পর্যবেক্ষণগুলো অনুসরণের নির্দেশ দেন।
ওই সভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আইএমইডি’র সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সারাদেশে প্রকল্প পরিবীক্ষণের সুবিধার্থে আইএমইডি’র জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এজন্য বিভাগীয় পর্যায়ে আইএমইডি’র অফিস স্থাপন করা এবং বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সংশ্লিষ্ট বিভাগে চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনার বিষয়টি অন্তর্ভুক্তি করা। বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠেয় উন্নয়ন কমিটির সভায় আইএমইডি’র প্রতিনিধি প্রেরণের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আইএমইডি’র তৎকালীন সচিব যা জানিয়েছিলেন
আইএমইডি’র তৎকালীন সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী গত ৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। অর্থ মন্ত্রণালয়কে আইএমইডি’র জবাবে প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘অর্থ বিভাগের গত ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারির প্রস্তাবের আলোকে আলোচ্য সার্বিক বিষয়াদি পুনরায় পরীক্ষা করে দেখা যায় যে রুলস অব বিজনেস- ১৯৯৬ (সংশোধিত ২০১৭) এর ধারা ৪-এর উপধারা ৯-এর ‘জি’-নং অনুচ্ছেদে মন্ত্রণালয়/বিভাগের কার্যপরিধির মধ্যে নিম্নবর্ণিত কার্যক্রমও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অনুচ্ছেদ ‘জি’-তে বলা হয়েছে, ‘সাচ আদার মেটার/মেটারস অ্যাজ মে বি ডিটারমাইন্ড বাই দ্য প্রাইম মিনিস্টার ফ্রম টাইম টু টাইম’।
চিঠিতে সচিব আরও উল্লেখ করেন, “পরীক্ষান্তে আরও প্রতীয়মান হয় যে, ‘জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভার সিদ্ধান্তের আলোকে গৃহীত উল্লিখিত কার্যক্রমের বিষয়াবলি সচিবালয় নির্দেশমালা ২০১৪-এর সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। গত ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের আওতাধীন আটটি বিভাগীয় কার্যালয়ের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারিতে ১৪৪টি পদ রাজস্ব খাতে অস্থায়ীভাবে সৃজন এবং যানবাহন ও অফিস সরঞ্জামাদি টিওএন্ডই অন্তর্ভুক্তিতে সম্মতি প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে পুনরায় অনুরোধ জানানো হলো।”
এ প্রসঙ্গে আইএমইডি’র বর্তমান সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, “ফাইলের একটা সামারি করে ইতোমধ্যে আমি পরিকল্পনা মন্ত্রীমহোদয়কে দিয়েছি। এছাড়া আমি আইএমইডি’র নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। ফলে এ বিষয়ে আমি এখনও বিস্তারিত কিছু জানি না। তবে মন্ত্রীমহোদয় যেভাবে নির্দেশনা দেবেন আইএমইডি থেকে সেভাবেই আমরা পদক্ষেপ নেব।”
আইএমইডি’র সাবেক ও বর্তমানে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী ঢাকা পোস্টকে বলেন, “আমি সর্বশেষ পরিকল্পনামন্ত্রীকে বলে এসেছি, এটা নিয়ে অর্থের (অর্থ মন্ত্রণালয়) সঙ্গে ঝগড়া করে লাভ নাই। আমাদের অবস্থানটা প্রধানমন্ত্রীকে জানাব। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চেয়েছিলাম, আপনার সিদ্ধান্তের পর আমরা আপনার কাছ থেকে সামারি অনুমোদন করিয়েছি। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও আইএমইডি’র প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় ‘রুলস অব বিজনেস’-এর ৪নং ধারার ৯নং অনুচ্ছেদের ‘এ’ থেকে ‘এফ’ পয়েন্ট অনুসরণ করে আমাদের প্রস্তাবে একমত হতে পারেনি। তবে ‘রুলস অব বিজনেস’-এর ‘জি’নং পয়েন্টে বলা আছে, ‘আপনি যখন যা চাইবেন তখন তা বাস্তবায়ন করতে হবে’। সেই হিসেবে আপনি আইএমইডি’র প্রস্তাব অনুমোদন দিতে পারেন। এমন সিদ্ধান্ত আইএমইডিতে থাকাবস্থায় আমরা নিয়েছিলাম।”
এ প্রসঙ্গে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ব্যবস্থাপনার ঘটতিতেই নির্দেশনাগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন হয় না। প্রধানমন্ত্রীর একটা বড় অফিস আছে, এগুলো উনার অফিসের লোকজন মনিটরিং করতে পারেন। কারণ, প্রধানমন্ত্রীর নিজের পক্ষে তো অনুশাসন দিয়ে আবার সেগুলোর মনিটরিং করা সম্ভব নয়।’
‘প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যেকটা নির্দেশনার সময় টাইমলাইন বলে দেওয়া হয়। কিন্তু এটা কে করবে, কীভাবে করবে, কবে নাগাদ করবে— সেটা নির্দিষ্ট করে দেওয়া তো উনার অফিসের দায়িত্ব। যেকোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীরই সবকিছুর ডিটেইলস মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি শুধু দিকনির্দেশনাগুলো দেবেন, এটাই নিয়ম। এজন্য প্রত্যেকটা অনুশাসন বাস্তবায়নের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের সঙ্গে বসে একটা কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা উচিত। এক্ষেত্রে ফলোআপ যদি না হয়, তাহলে বাস্তবায়নে দেরি হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফলোআপটা করা উচিত। এছাড়া যেকোনো পরিবর্তন বা সংস্কারে কিছু কিছু লোক বাধা দেবেই এবং সেটা যদি তাদের ওপর চাপ না থাকে তাহলে সেটা বাস্তবায়ন হবে না। চাপটা বা তাগিদটা শুধু এককালীন হলেও হবে না— বলেন এ অর্থনীতিবিদ।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, “বিভাগীয় পর্যায়ে আইএমইডি’র অফিস স্থাপন সরকারপ্রধানের সিদ্ধান্ত ছিল। প্রধানমন্ত্রী এনইসি সভায় এ নির্দেশনা দিয়েছিলেন। যেখানে অর্থমন্ত্রীসহ সব মন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও চান আমাদের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন যেন আরও গভীরভাবে তদারকি হোক। ওই সভায় সবাই একমতও হয়েছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী আইএমইডি-কে নিয়ে এ সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।”
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পরই আমরা একটা সামারি তৈরি করে তার (প্রধানমন্ত্রী) অনুমোদন নিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী সামারি অনুমোদন করলেও বিধিবিধান অনুযায়ী জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির প্রয়োজন হয়। অনুমোদন নয়, এখানে সম্মতির প্রয়োজন হয়। আমার জানা মতে, জনপ্রশাসন সম্মতি দিয়েছিল। তবে আপনার কাছে শুনলাম যে অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের প্রস্তাবে সম্মত হয়নি। আমার বিশ্বাস প্রস্তাবটার একটা সুরাহা হবে।
“কারণ, এটা কোনো মন্ত্রণালয়ের একক কাজ নয়, গোটা সরকারেরই কাজ। আইএমইডি’র শক্তি বৃদ্ধি করা সময়ের দাবি। এটা আমার নিজের কোনো সিদ্ধান্ত নয়। আমার বিশ্বাস সরকারপ্রধানের সিদ্ধান্তের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় ঐকমত্য পোষণ করবে।”
অর্থের (অর্থ মন্ত্রণালয়) মতামতটা পেলে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। তারা যদি আমাদের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ না করে, তাহলে তাদের আমরা বোঝানোর চেষ্টা করব। আইএমইডি’র বিভাগ পর্যায়ে অফিস স্থাপন করলে যদি সক্ষমতা বাড়ে তাহলে আমি সেটাই করব। কারণ, আমাদের বাজেটের বড় অংশই উন্নয়নে ব্যয় হয়। এ উন্নয়ন বাজেটে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ তদারক করে আইএমইডি। সুতরাং আইএমইডিকে শক্তিশালী করা জরুরি। এজন্য প্রস্তাবটা নিয়ে প্রয়োজনে আবারও প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। কারণ, আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত সবার আগে— বলেন এম এ মান্নান।
প্রধানমন্ত্রী নিজে সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরও কেন আপনারা একমত হতে পারলেন না— এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা- ৮ এর সহকারী সচিব মোহাম্মদ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘চিঠিটা যখন হয়েছে তখন আমি এখানে ছিলাম না। এটার বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না। আপনি একটু উপরে কথা বলেন। আমরা ডেস্ক পর্যায়ে কাজ করি, তাই অনেক সময় অনেক কিছু আলাপ-আলোচনা করতে পারি না।’
ওই কর্মকর্তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে উপরের কর্মকর্তাদের কল দিলেও কেউ রিসিভ করেননি। আর অর্থসচিবের ফোন নম্বরটি ওয়েবসাইটে না থাকায় তাকেও কল দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এসআর/এমএআর/ওএফ