যুক্তরাজ্যের ‘রেড-লিস্ট’ থেকে বাংলাদেশের নাম সরানোর অনুরোধ
করোনা ইস্যুতে ইংল্যান্ডের অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা ‘রেড-লিস্ট’ থেকে বাংলাদেশের নাম সরানোর অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের হার কমে আসার তথ্য উল্লেখ করেন।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ অনুরোধ জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনকে উদ্ধৃত করে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশে দ্রুত গতিতে করোনার টিকাদান কর্মসূচি চলছে। দেশে ও করোনার সংক্রমণের হার ৯ দশমিক ৮২ শতাংশে নেমে এসেছে। এদিকে, সাত হাজারের বেশি ব্রিটিশ-বাংলাদেশি করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আটকে আছেন। যুক্তরাজ্যের উচিত করোনা ইস্যুতে তাদের লাল তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ দেওয়ার বিষয় বিবেচনা করা।
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে এ ধরনের তালিকার পেছনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনা মুখ্য ভূমিকা পালন করে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি আমাদের দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব এবং বাংলাদেশের জিনোম সিকোয়েন্সিং ডাটার ওপর ভিত্তি করে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশকে রেড-লিস্ট থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।
গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশকে রেড-লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করে যুক্তরাজ্য। সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ওই তালিকায় ৬২টি দেশ রয়েছে। রেড-লিস্টভুক্ত দেশের নাগরিকদের বাইরে থেকে ঢুকতে দিচ্ছে না যুক্তরাজ্য। এসব দেশ থেকে ব্রিটিশ নাগরিকরা ঢুকতে পারলেও থাকতে হচ্ছে ১০ দিনের বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টাইনে।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের ‘দৃঢ় সম্পর্কের’ বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আফগানিস্তান এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কটসহ নানা বিষয়ে একযোগে কাজ করার কথাও বলেন তারা।
ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনায় যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের জন্য শুল্কবিহীন জিএসপি ২০২৯ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। এক্ষেত্রে করোনা মহামারির মধ্যে ব্রিটিশ রিটেইলারদের ক্রয়াদেশ বাতিল ও পেমেন্ট না দেওয়ার বিষয় তুলে ধরেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে ড. মোমেন কপ-২৬ এর সভাপতি অলোক শর্মার সঙ্গে তার সাম্প্রতিক বৈঠকের কথা স্মরণ করেন। তিনি গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) প্রেসিডেন্ট হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের অনুরোধ পুনরায় ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু আন্দোলনে যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ সফরের জন্য ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাবকে আমন্ত্রণও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিমও এই ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন।
এইচকে