৪ মাসে হেঁটে-সাঁতরে ১০০ কিমি খাল-নদী পাড়ি দিল রয়েল বেঙ্গল টাইগার
বাঘ যে চাইলে হেঁটে, সাঁতরে অন্তত ১০০ কিলোমিটার পথ অনায়াসে পাড়ি দিতে পারে, সেই প্রমাণ সামনে এল। সুন্দরবনের ভারতীয় অংশ থেকে যাত্রা শুরু করে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পেরিয়ে চার মাসের মাথায় সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে এসেছে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। দীর্ঘ যাত্রাপথে ছোট, বড় একাধিক নদী পেরিয়েছে সে। যার মধ্যে কোনোটি এক কিলোমিটার পর্যন্ত চওড়া।
এমনই তথ্য পাওয়া গেছে ওই বাঘের শরীরে লাগানো রেডিও কলার থেকে। তার দীর্ঘ যাত্রাপথের তথ্য ভারতীয় বন দফতরের হাতে রয়েছে। দেশটির সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বন-রক্ষক ভি কে যাদব।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে এই রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গলায় রেডিও কলার লাগানো হয়েছিল। রাজ্য বন দফতরের ওই শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চার মাসের যাত্রাপথে একবারের জন্যও কোনো জনবসতির দিকে যায়নি বাঘটি।
ভি কে যাদব জানান, ‘যাত্রা শুরুর পর প্রথম এক মাস বাঘটি ভারতীয় এলাকাতেই ছিল। এরপর বাঘটি বাংলাদেশের তালপট্টি দ্বীপে আসে। একে একে ছোট হাড়িখালি, বড় হাড়িখালি পেরিয়ে রায়মঙ্গলের মতো নদী পেরিয়ে যায় বাঘটি।’
বন দফতরের ওই শীর্ষ কর্মকর্তার মতে, রেডিও কলার লাগানোর আগে বাঘটি সম্ভবত সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশ থেকেই ভারতীয় এলাকায় ঢুকেছিল। এবার নিজের পুরনো বাসস্থানেই ফিরে গেছে বাঘটি।
ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিসের অফিসার পারভীন কাসওয়ান গত বছর রেডিও কলার লাগানোর পর এই বাঘটির ছবিই টুইটারে পোস্ট করেছিলেন। বাঘটিরই বাংলাদেশে পৌঁছানোর খবরও জানান তিনি।
কাসওয়ান টুইটারে লেখেন, ‘এই বাঘটি ১০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ভারত থেকে বাংলাদেশে গেছে। অবশ্যই ভিসা ছাড়া! খাঁড়ি, দ্বীপ, সমুদ্র- যাত্রাপথে সবই অতিক্রম করেছে।’
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে ভি কে যাদব জানিয়েছেন, ২৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ মের মধ্যে বাঘটি ভারতীয় এলাকায় সুন্দরবনের হরিণভাঙা ও খাটুয়াঝুড়ি এবং বাংলাদেশের তালপট্টি নামে তিনটি দ্বীপের মধ্যেই অবস্থান করছিল। যদিও ১১ মে-র পর বাঘটির শরীরে থাকা রেডিও কলার থেকে সিগন্যাল আসা বন্ধ হয়ে যায়। বাঘটির সর্বশেষ অবস্থান অনুযায়ী সেটি বাংলাদেশের তালপট্টি দ্বীপে ছিল।
ভি কে যাদব জানিয়েছেন, কোনোভাবে বাঘটির মৃত্যু হলেও রেডিও কলার থেকে সংকেত আসার কথা। কিন্তু ওই ধরনের কোনো সংকেত আসেনি। আবার বাঘটি নিরাপদে থাকলেও যে সিগন্যাল পাওয়ার কথা, তা আসাও বন্ধ। ফলে বন দফতরের কর্মকর্তারা ধরেই নিয়েছেন, সম্ভবত বাঘটির গলা থেকে রেডিও কলারটি খুলে পড়ে গেছে।
ওএফ