চাকরি-পদোন্নতির নামে জাফরের প্রতারণার ফাঁদ

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির স্বাক্ষর-সিল জালিয়াতি ও প্রতারণায় জড়িত থাকার অভিযোগে জাফর ইকবাল (৪৬) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বিজ্ঞাপন
র্যাব সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি প্রতারক জাফর ইকবাল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পরিচয়ে অফিসিয়াল স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহার করে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে সাধারণ মানুষকে চাকরি দেওয়া, পদোন্নতি প্রদান, বদলি সংক্রান্ত এবং পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে গবাদি পশুসহ অন্য দ্রব্যসামগ্রী আমদানির জন্য অনুমতি প্রদান সংক্রান্ত দালালি কার্যক্রম করে প্রতারণামূলকভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল।
র্যাব ওই প্রতারককে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গত রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-১ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক জাফর ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি গাইবান্ধা জেলার নবাব হোসেন প্রামানিকের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
এসময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ভুয়া স্বাক্ষরিত বিভিন্ন নথিপত্র, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া সিল, ভিজিটিং কার্ডসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার জাফর বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি র্যাবকে জানিয়েছে, উচ্চাভিলাষী জীবনযাপন করার উদ্দেশে গ্রেপ্তার জাফর প্রতারণার কাজ বেছে নেয়। তিনি দীর্ঘদিন যাবত এই প্রতারণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার জাফর ইকবাল বিভিন্ন এলাকার চাকরি প্রত্যাশীদের বলতেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে।
এভাবে চাকরি প্রত্যাশীদের বিশ্বাস অর্জন করে এবং চাকরি দেওয়ার কথা বলে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিত। তিনি প্রতারণার মাধ্যমে চাকরি দেওয়াসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতি, বদলি সংক্রান্ত এবং ব্যবসায়ীদের পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে গবাদি পশুসহ বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী আমদানি ও রপ্তানির অনুমতি দেওয়া কথা বলে অসংখ্য ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেপ্তার জাফর ইকবাল মূলত মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।
সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীকে সীমান্ত এলাকায় গবাদি পশুর বিট, খাটাল স্থাপনের ও গবাদি পশু আমদানির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভুয়া স্বাক্ষরিত অনুমতিপত্র দেন। গ্রেপ্তার জাফর ইকবালের স্থায়ী কোনো অফিস না থাকায় বিভিন্ন সময়ে ভাড়া বাসাকে অফিস হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। গ্রেপ্তার জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সাদুল্যাপুর থানায় মামলায় অভিযুক্ত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল।
সর্বশেষ রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় আত্মগোপনে থাকাবস্থায় গ্রেপ্তার জাফরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এ ব্যাপারে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার স্বাক্ষর জালিয়াতিকারী র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার জাফর ইকবালকে ডিএমপিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাকে ডিবি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জেইউ/এসএসএইচ