পরিবর্তনের অংশ হতে নতুন বাংলাদেশে আপনাদের আমন্ত্রণ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মাত্র ৮ মাস আগেই বাংলাদেশে একটা বড় ধরনের রূপান্তর ঘটেছে। ভয়ংকর সব বিষয় থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটেছে।তরুণদের কারণে পরিপূর্ণ একটি দেশ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। শুধু ব্যবসার জন্য না, পরিবর্তনের অংশ হতে আপনাদের এই নতুন বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) চীনের বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ব্যবসায়িক নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ আমন্ত্রণ জানান।
বাংলাদেশে তরুণ জনগোষ্ঠী পূর্ণ উদ্যম ও সৃজনশীলতায় ভরপুর মন্তব্য করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ দেশ এবং প্রতিদিন তা আরও বাড়ছে। ১৭ কোটি মানুষের বসবাস এখানে। এই জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষের বয়স ২৭ বছরের নিচে। তারা সবধরনের অপ্রত্যাশিত কাজ করতে প্রস্তুত, যা কেউ কোনোদিন কল্পনা করতে পারেনি। বাংলাদেশের এটি একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে আমরা যখন স্বাধীন হয়েছি, তখন থেকে আমরা কৃষি প্রধান জাতি। অত্যন্ত অল্প পরিসরে পোশাক উৎপাদন থেকে শুরু হয় আমাদের তৈরি পোশাক শিল্প। কারণ হংকংয়ের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে তাদের কারখানা স্থাপন করেছিল। আজ চীনের পর বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী দেশ। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত দাঁড়িয়েছে নারীদের অংশগ্রহণে। তৈরি পোশাক শিল্পের ৮০ শতাংশ শ্রমিক নারী। বাংলাদেশের চারপাশ নেপাল, ভুটান পরিবেষ্টিত। আমার বলার কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশ খুব চমৎকার একটি লোকেশনে অবস্থিত। বাংলাদেশের সঙ্গে বঙ্গোপসাগর আছে, যা কিনা বিশ্বের সঙ্গে একটা বড় সংযোগ স্থাপন করেছে।
আরও পড়ুন
নেপাল ও ভুটানকে নিয়ে খুব দ্রুত আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে নেপাল, ভুটানকে যদি অবস্থান করতে হয়, তাহলে তাদের বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। তাদের পণ্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পাঠাতে হয় এবং আনতে হয়। তারপর ভারতের দিকে তাকান, ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্য, যাকে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়, তারাও ভূমিবেষ্টিত, কোনো সমুদ্র নেই। সেভেন সিস্টার্স, নেপাল, ভুটানকে ব্যবসা করতে হলে বাংলাদেশের ওপর দিয়েই করতে হয়। সুতরাং শুধু বাংলাদেশের নিজের জন্য না অন্যদের জন্য এটি হচ্ছে একটি পথ।
ড. ইউনূস বলেন, আপনারা এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন, এ অঞ্চলে ব্যবসা করে। ব্যবসায়ীরা আসুক, তাদের কারখানা স্থাপন করুক, পুরো অঞ্চলে এমনকি বিশ্বে সরবরাহ করুন। যাতে আমরা এখানে একটি প্রডাকশন হাব করতে পারি। এখানে তরুণ কর্মীর কিন্তু অভাব নেই। তারা নতুন বিশ্বের সঙ্গে বেশ পরিচিত এবং খুব দ্রুত তারা শিখতে পারে। যদি আপনারা সংযোজন কারখানা করেন, প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবসা স্থাপন করেন, আমি মনে করি বাংলাদেশকে এই ক্ষেত্রে বিবেচনা করা যায়।
এমএসআই/এআইএস