পোল্ট্রি খামার নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করার দাবি

দেশের পোল্ট্রি খাতের উন্নয়নে এবং পোল্ট্রি শিল্পে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতার জন্য পোল্ট্রি খামার নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করাসহ ১১ দফা দাবি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এসব দাবি জানিয়েছে।
এতে সংগঠনটির সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্পে প্রান্তিক খামারিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে নানা সমস্যার কারণে তাদের ব্যবসা চালানো দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। বড় কোম্পানির সিন্ডিকেট, উৎপাদন খরচের বৈষম্য এবং বাজার ব্যবস্থার অস্বচ্ছতার কারণে পোল্ট্রি খামারিরা নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে, প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের উন্নয়নের জন্য ১১টি গুরুত্বপূর্ণ দাবি পূরণ করা দরকার।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, এসব দাবি বাস্তবায়িত হলে প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিরা সুষ্ঠু ও লাভজনক ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। এছাড়া এসব দাবি বাস্তবায়িত হলে খামারিরাও তাদের উৎপাদনের ন্যায্যমূল্য পাবেন এবং দেশের পোল্ট্রি শিল্পে শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
১১ দফা দাবিগুলো হচ্ছে—
বিজ্ঞাপন
১. দেশের প্রান্তিক খামারিদের জন্য খামার নিবন্ধন, ট্রেনিং সার্টিফিকেট এবং ট্রেড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা। এই পদক্ষেপ নিলে বাজারে স্বচ্ছতা ও নিরাপদ উৎপাদন নিশ্চিত হবে।
২. কন্ট্রাক্ট ফার্মিং বন্ধ করতে হব। কারণ, এটি প্রান্তিক খামারিদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। কোম্পানিগুলোর উচিত শুধুমাত্র ফিড এবং বাচ্চা উৎপাদন করা আর খামারিদের ডিম ও মুরগি উৎপাদন করতে দেওয়া।
৩. প্রান্তিক খামারিদের জন্য উদ্যোক্তা আইডি কার্ড চালু করতে হবে। যা তাদের সরকারি ঋণ এবং অন্যান্য সুবিধা গ্রহণে সহায়ক হবে।
৪. বিশেষ ভর্তুকি ও অর্থনৈতিক সহায়তা চালু করতে হবে। সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে ফিড, বাচ্চা, ওষুধসহ উৎপাদন খরচ কমানো উচিত। এতে খামারিরা লাভজনকভাবে ব্যবসা চালাতে পারবেন।
৫. প্রযুক্তিগত সহায়তা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যাতে খামারিরা উৎপাদন খরচ কমাতে পারে।
৬. বাজারে সিন্ডিকেটের প্রভাব দূর করতে সরকারকে কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যাতে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পায়।
৭. বাজারে স্বচ্ছতা এবং দামের স্থিতিশীলতা রাখার জন্য সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, যাতে খামারিরা ন্যায্যমূল্য পায়।
৮. উৎপাদন খরচের বৈষম্য দূর করতে হবে। যাতে সব খামারি সমান সুবিধা পায়।
৯. বড় কর্পোরেট কোম্পানির আধিপত্য সীমিত করতে সরকারের উচিত নীতি প্রণয়ন করা। যাতে প্রান্তিক খামারিরা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।
১০. ফিড এবং বাচ্চার সরবরাহে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। সংকট দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
১১. পোল্ট্রি খামারিদের জন্য নতুন প্রযুক্তি এবং উন্নত উৎপাদন পদ্ধতি নিশ্চিত করতে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাড়াতে হবে।
যদি শিগগিরই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এসব দাবি মেনে নেওয়া হয় তবে দেশের পোল্ট্রি শিল্প আরও শক্তিশালী হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার।
আরএইচটি/এসএম