রাজস্ব আদায়ে নিরীক্ষার এখতিয়ারসহ সিএজির প্রাধান্য চায় টিআইবি

পাবলিক অডিট বিল-২০২৪ খসড়ায় রাজস্ব নিরূপণ ও আদায়ের নিরীক্ষা এবং সিএজি কার্যালয়ের প্রাধান্য ও কার্যকরতা নিশ্চিতের বিধান অন্তর্ভুক্ত করতে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২৪ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানা জানানো হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়সহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান, একটি দাতা সংস্থা এবং বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মধ্যে আবদ্ধ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় “পাবলিক অডিট বিল-২০২৪” এর খসড়া চূড়ান্তকরণের উদ্যোগের সমালোচনা করে জনস্বার্থে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের জন্য অবিলম্বে উন্মুক্ত করতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে আহ্বান জানিয়েছিল টিআইবি। এরপর খসড়া অধ্যাদেশটি টিআইবির হস্তগত হলে তার ওপর টিআইবি সুনির্দিষ্ট পাঁচটি সুপারিশ করছে।
বিজ্ঞাপন
এর মধ্যে রয়েছে- ধারা ৭ এ- উল্লেখিত রাজস্ব ও প্রাপ্তি সংক্রান্ত অডিট বিষয়ে সরকারি হিসাবসমূহে প্রাপ্য সব রাজস্ব ও প্রাপ্তি অর্থাৎ সংযুক্ত তহবিলের প্রাপ্তিসমূহ (কর এবং কর-ব্যতীত রাজস্ব ইত্যাদিসহ) প্রযোজ্য আইন, বিধি ও পদ্ধতি অনুযায়ী যথাযথভাবে নিরূপণ ও আদায় এবং সঠিকভাবে জমা ও হিসাবভুক্ত হয়েছে কি-না, প্রাপ্তিসমূহ প্রযোজ্য আইন, বিধি ও পদ্ধতি অনুযায়ী যথাযথ কি-না তা মহা হিসাব নিরীক্ষক অডিট করতে পারবেন- এই মর্মে বিধান রাখার আহ্বান। তা ছাড়া, অর্থ বিভাগের প্রস্তাবে ধারা ৫ এ- নিরীক্ষাধীন প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর তথ্য প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা বিষয়ে দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
টিআইবির অন্য সুপারিশমালায় রয়েছে— মহা হিসাব নিরীক্ষককর্তৃক গঠিত স্বতন্ত্র তদারকি কমিটিতে সংশ্লিষ্ট খাতের নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা, এই স্বতন্ত্র তদারকি কমিটি তাদের প্রতিবেদন জাতীয় সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিকে দেবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করবে, মহা হিসাব নিরীক্ষক কার্যালয়ের সব জনবল মহা হিসাব নিরীক্ষক কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং নিজস্ব মানবসম্পদ নীতিমালা অনুসারে পরিচালিত হবে, এরূপ বিধান নিশ্চিত করা।
এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের ধারা-৭ এ রাজস্ব নিরূপণের যথার্থতা নিরীক্ষার সুযোগ না রাখার ফলে পুরো সরকারি রাজস্ব নিরূপণ ও আদায় সংক্রান্ত বিষয় জবাবদিহির বাইরে থেকে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কর ফাঁকির অন্যতম উপায় কর কর্মকর্তাদের একাংশের সঙ্গে অসাধু করদাতাদের যোগসাজশের মাধ্যমে প্রতারণামূলক রাজস্ব নিরূপণ, যার অসংখ্য দৃষ্টান্ত বিভিন্ন সময়ে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রকাশিত হয়েছে। যা নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে, বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাতের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির অন্যতম কারণ যোগসাজশের করফাঁকি। এ থেকে উত্তরণের জন্য রাজস্ব নিরূপণ নিরীক্ষাভুক্ত করা অপরিহার্য।
বিবৃতিতে সিএজি কার্যালয়ের দায়িত্ব পালনে নিরীক্ষাধীন প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তথ্য দেওয়াসহ সার্বিক সহযোগিতার বাধ্যবাধকতা ও ব্যত্যয়ের ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং উক্ত অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিধি প্রণয়নের এখতিয়ার সিএজির ওপর ন্যস্ত করার বিধান সংযুক্ত করার আহ্বান জানায় টিআইবি।
আরএম/এআইএস