রাজধানীতে চুরি-ছিনতাই : রাতভর সম্মিলিত পাহারার উদ্যোগ

রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুরো এলাকাবাসী। সোমবার রাত থেকেই স্থানীয় যুবকদের সমন্বয়ে রাতভর সম্মিলিত পাহারার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।
বিজ্ঞাপন
ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বলছেন, সরকার যেহেতু আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে, সেক্ষেত্রে নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিজেদেরই নিতে হবে। তাই সোমবার রাত থেকে সবাই মিলে ব্লকভিত্তিক পাহারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বনশ্রী ডি ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ির সামনে স্বর্ণ-ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। তাকে গুলি ও ছুরি দিয়ে আঘাত করে ২০০ ভরি স্বর্ণালংকার ও এক লাখ টাকা লুট করা হয়। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রাজধানীবাসী। বিশেষ করে ঘটনাস্থল বনশ্রীসহ স্থানীয় বেশ কয়েকটি গ্রুপে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
সম্মিলিত পাহারা দেওয়ার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক গ্রুপে রিদওয়ান খান নামে বনশ্রী এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের তো প্রতিদিনই রাত জাগা হয়। একটা বড় টিম হয়ে কাজ করেল এবং পাঁচটা বাইক নিয়ে অন্তত ১০ জন মানুষ একসঙ্গে বনশ্রীতে সারারাত ঘুরলে অনেকটুকু বিপদ কাটবে।’
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও লেখেন, ‘স্বাভাবিকভাবে একজন মানুষ প্রতি রাত জগতে পারবে না, তাই একটা বড় টিম করলে একজন এক রাত করে জাগলেই হয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমাকে সবসময় পাবেন। আপনাদের দায়িত্বের ওপর টিম বানানোর কথা ভাবব।’
রিদওয়ান খানের আহ্বানে প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ সাড়া দেন এবং পাহারার কাজে নিজেদের অংশগ্রহণের আগ্রহ জানান। সেই স্ট্যাটাসের কমেন্টে রিদওয়ান খান সবার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ খোলার উদ্যোগের কথাও জানান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আকাশ আহমেদ নামে আরেক বনশ্রীবাসী লেখেন, ‘বনশ্রীর প্রতিটি রোডে রাত ৯টা থেকে ফজরের নামাজ পর্যন্ত গ্রুপ করে নিজেদের অবস্থান নিতে হবে। এখন থেকে বাড়ি এবং রাস্তায় নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
ফারহান নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘সবাই যেহেতু পাহারাদার হওয়ার কথা ভাবছেন, এ ক্ষেত্রে বনশ্রীর প্রতিটা বাসার সামনে তিন থেকে চারজন করে থাকলে এক রোডেই ৫০ থেকে ৭০ জন হয়ে যাবে। কাজেই এত গ্রুপ করার ঝামেলা থাকবে না। একমত হইলে পরবর্তী দিন থেকেই নেমে পড়েন। আমিও আছি।’
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে ফেরার সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্বর্ণ-ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। তাকে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে প্রায় ২০০ ভরি স্বর্ণ ও নগদ এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। রাত ১২টার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক— বলেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
আহত ব্যবসায়ী বনশ্রী এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তার বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানা এলাকায়।
টিআই/এমজে