২০২৪ সালে সড়কে নিহত ৭ হাজারের বেশি : রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
বিগত ২০২৪ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯২৭টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ২৯৪ জন এবং আহত ১২ হাজার ১৯ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৮৯৩ জন ও শিশু ১১৫২ জন। এছাড়া একইসময়ে ২ হাজার ৭৬১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৬০৯ জন। এই সময়ে ১১৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৫২ জন নিহত, ১৬১ জন আহত এবং ৩৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৩৪৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩২৪ জন নিহত এবং ২৭৭ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনে নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো ২০২৪ সালের সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
দুর্ঘটনার যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্রে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ২ হাজার ৬০৯ জন, বাস যাত্রী ৩৬৯ জন, পণ্যবাহী যানবাহনের আরোহী ৪৯৯ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ আরোহী ৩৬৩ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী ১৩৯২ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী ৩৩১ জন এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী ১৯৬ জন নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার ধরন অনুযায়ী ১ হাজার ৫২৭টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২ হাজার ৯০৮টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১ হাজার ৫৬২টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৭৮২টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৪৮টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১ হাজার ৫৮২টি দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৪০ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৪৩৫টি দুর্ঘটনায় ৪৪৩ জন নিহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়— ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য সার্ভিস রোড তৈরি করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে এবং ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এমএইচএন/এআইএস