ট্রাইব্যুনালের আইনে নয়, প্রয়োজন হলে ঐকমত্যের ভিত্তিতে দল নিষিদ্ধ
রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে থাকছে না জানিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন বা দাবি ওঠে তবে সেটি রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে করা হবে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত জানাতে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আগের আইনের বলা ছিল কোনো রাজনৈতিক দল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করলে ট্রাইব্যুনাল চাইলে নিষিদ্ধ করতে পারবে। তবে আজকের উপদেষ্টা পরিষদে সেটি সংশোধন করা হয়েছে। এখন ট্রাইব্যুনাল যদি প্রয়োজন মনে করে তবে তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করতে পারবে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, আমরা ট্রাইব্যুনালের বিচারকে অন্য কোনো বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই না। রাজনৈতিক দল বা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে এলে এ আইনকে অযথাই প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না। পেয়ার ওয়েতে (সুষ্ঠুভাবে) বিচার করতে চাই। কোনো রাজনৈতিক দল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য যদি নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হয় বা দাবি ওঠে তাহলে অন্য আইন রয়েছে সেগুলোতে নিষিদ্ধ করা হবে। এ ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল শুধু যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবে। সন্ত্রাস দমন আইন, নির্বাচন আইনের রয়েছে। রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে পরে বিবেচনা করব। ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে এ বিষয়টি আর থাকবে না।
উপদেষ্টা বলেন, খসড়ায় বলা হয়েছে আদালত যদি মনে করেন তারা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কনসার্নড অথরিটির (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ) কাছে সুপারিশ করতে পারেন।
‘কনসার্নড অথরিটি’ হিসেবে আদালত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশনের কাছে সুপারিশ করতে পারে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, তবে এসব বিষয় খসড়ায় বলা নেই।
তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের আইনটি পরিবর্তনের জন্য ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মতামত নিয়েছি। ট্রাইব্যুনালে আইনটি সংশোধনের জন্য বন্ড কনসালট্রেশন করেছিলাম। দেশের যত আইন বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকার কর্মী ছিল সবার মতামত নিয়েছি। দেশি-বিদেশি প্রসিদ্ধ আইনজীবীদের মতামত নিয়েছি, জাতিসংঘের মানবাধিকার ফোরামেও পাঠানো হয়েছে। সকল মতামতের ড্রাফট করে আজ উপদেষ্টা পরিষদে উত্থাপন করা করলে তা পাস করেছে। এর উদ্দেশ্য হলো ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে যেন কোনো ধরনের প্রশ্ন উঠতে না পারে।
ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম প্রমুখ।
এনএম/এসএসএইচ