দ্বিতীয় ঢেউ এখনও চলছে, পরিত্রাণ মেলেনি : স্বাস্থ্য অধিদফতর
দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে, এ থেকে এখনও পরিত্রাণ মেলেনি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
রোববার (১৬ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত করোনা বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র ও পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে আমরা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউটির মাঝখানে আছি। কাজেই দ্বিতীয় ঢেউ থেকে আমরা এখনও পরিত্রাণ পাইনি। তাই আমাদের পরিবারসহ পাড়া-প্রতিবেশী যারা আছে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে এবং অন্যদের সচেতন রাখতে হবে।’
নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল সবচেয়ে কম সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে, আমাদের নমুনা সংগ্রহও কম হয়েছে। আমরা মনে করছি যে এটি হয়তো ঈদের বন্ধের কারণে হয়েছে। তবে এতো কম সংখ্যক শনাক্তে আমাদের আত্মতুষ্টির কোনো কারণ নেই। কারণ আমরা এই ধরনের সংখ্যা যদি দিনের পর দিন পেতে থাকি, তখনই কেবল মাত্র একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ২০ থেকে ২৬টি পরীক্ষাগারে জিনোম সিকোয়েন্স হচ্ছে। তবে সিকোয়েন্সের জন্য আমাদের কিছুটা সময় লাগে। সেই সময় এবং তথ্য উপাত্ত প্রায় নিশ্চিত হয়ে সংগ্রহ করার পরেই আমরা সেটি ভাগাভাগি করে নেই। কাজেই আমাদের এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বেশি সংখ্যক মানুষকে পরীক্ষা করা।’
আমাদের যতবেশি পরীক্ষা করা যাবে, ততবেশি সংখ্যক সংক্রমণ শনাক্ত পাব, আর যতবেশি শনাক্ত হবে, ততবেশি আমরা সেখান থেকে জিনোম সিকোয়েন্স করার সুযোগ পাব। সামগ্রিকভাবে সেখান থেকে কোনো ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভব হলো কি না এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে কী করণীয় আছে তা নিয়ে পরিকল্পনা করা আমাদের জন্য সহজ হবে, যোগ করেন তিনি।
অধিদফতরের এই মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা যদি গত এক সপ্তাহের সংক্রমণ পরিস্থিতির দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব যে, ৯ মে এক হাজার ৩৮৬ জন রোগীকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি এবং গতকাল আমাদের যে সংখ্যক শনাক্ত হয়েছে, তা কিন্তু সংখ্যায় অনেক কম। কিন্তু আমরা দেখেছি পুরো সপ্তাহজুড়েই শতকরা শনাক্তের হার কিন্তু ৮ থেকে ১০ এর মাঝামাঝি ঘোরাফেরা করছে। কাজেই আমাদের খুববেশি আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে আমাদের শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৬২৯ জন, আমরা কিন্তু এপ্রিলে সেটা দেখেছি এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। জানুয়ারিতে শনাক্ত হওয়া সংখ্যার বিপরীতে মে মাসের এই পর্যন্ত ২০ হাজার ৬৬৪ জন রোগী আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। কাজেই আমরা যদি জানুয়ারির সঙ্গে তুলনা করি, তাহলে মাসের মাঝামাঝি এসে কিন্তু প্রায় সমান সংখ্যক রোগীকে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। এ মাসের আরও ১৫টি দিন কিন্তু আমাদের হাতে আছে। কাজেই আমাদেরকে সতকর্তার সর্বোচ্চ পর্যায়টি অবলম্বন করতে হবে।’
টিআই/জেডএস