পাকিস্তান ক্ষমা চাইলে ভালো, অন্যথায় একাত্তর মনে রেখেই সম্পর্ক
একাত্তরে পাকিস্তান বাংলাদেশে গণহত্যাসহ যেসব ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তার জন্য ক্ষমা না চাইলে একাত্তরকে ‘মনে রেখেই’ দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ ও সমসাময়িক ইস্যুতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় একাত্তরের ঘটনাগুলো স্মরণ করা হবে। তারা নিজে থেকে এসব ঘটনার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে ভালো, অন্যথায় কূটনৈতিক সম্পর্ক তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এটা আটকাবে না বা সংকুচিত হবে না।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল স্বাভাবিক। পাকিস্তানের নেতৃত্ব বিভিন্ন সময়ে একাত্তরের ঘটনাগুলোর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। কিন্তু তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটনার দায় স্বীকার করে উদারভাবে ক্ষমা চায়নি, যা তারা করতে পারত। এ কারণে হয়ত বাংলাদেশের দিক থেকে সম্পর্কটা সংকুচিত করা হয়েছে, যা অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করেছে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়া বর্তমান সরকার আগের সরকারের মতো সংকোচন নীতি গ্রহণ করবে না। বরং একাত্তরকে মনে রেখেই সম্পর্ক স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে নেবে।
জাপানের উদাহরণ দিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে তাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি মনে করি পাকিস্তানের কোনও সরকার যদি এই সাহসটুকু দেখাতে পারে, একথা বলতে পারে, তাহলে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ অনেক সহজ হয়ে যাবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মধ্যে নিউ ইয়র্কে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সেখানে ৭১ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়নি। তবে আনুষ্ঠানিক আলোচনার টেবিলে বিষয়টি তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ইউনূস-শাহবাজের বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি একদম সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। সৌজন্য সাক্ষাতে আমরা কঠিন বিষয় তুলি না। যখন আলোচনার টেবিলে বসব তখন আমরা তুলব। তবে আমরা তাদের এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করিনি যে ৭১কে বাদ দিয়ে আমরা ভালো সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করব। ভালো সম্পর্ক আমরা রাখার চেষ্টা করব, তবে ৭১-ও থাকবে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ৫২ বছর ধরে যে বিষয়টি আছে– সেটি কালই সমাধান হবে এটি আমি মনে করি না। আমরা যখন আলোচনার টেবিলে বসব, তখন এটি থাকতে হবে।
এনআই/পিএইচ