উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছে পুলিশ
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’কে কেন্দ্র করে উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র সরিয়ে নিতে কাজ করছে পুলিশ।
রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যায় পুলিশ সদরদপ্তর থেকে এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের বার্তায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ করছে পুলিশ। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় নিরলস কাজ করছে পুলিশ।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৩২৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ মে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র অতিক্রমের পর এর নিম্নভাগ অতিক্রম অব্যাহত থাকবে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (১৮৯ মিমি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হলো।
এমএসি/জেডএস