মেয়রের হাঁকডাক—চিপসের প্যাকেট ১ টাকা, ডাবের খোসা ২ টাকা
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুড়িল প্রগতি স্মরণি এলাকায় বেলা তখন ১১টা পার হয়েছে। একটি খোলা ট্রাকে উঠে বসেছেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। আশ পাশে আরও কয়েকজন কর্মকর্তা, কাউন্সিলর। ততক্ষণে হাতে হ্যান্ড মাইক নিয়েছেন মেয়র।
মাইক হাতে নিয়ে মেয়রের হাঁকডাক—‘ডাবের খোসা ২ টাকা, চিপসের প্যাকেট ১ টাকা, দইয়ের পাত্র ২ টাকা...’
আশেপাশে অনেকেই আগে থেকে বস্তা ভরে চিপসের প্যাকেট, ডাবের খোসা নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন। মেয়র ট্রাকে উঠতেই তারা এসব বিক্রি করতে এগিয়ে আসেন। মেয়রের হাতে ধরিয়ে দেন বস্তা। মেয়রও গুণে নিলেন কত পিস আছে। প্রথমে ৪০০ পিস পরিত্যক্ত চিপসের প্যাকেট নগদ ৪০০ টাকায় কিনে নিলেন তিনি। পরে আরও কয়েক বস্তা চিপসের প্যাকেট, টায়ার নগদ টাকায় কিনে নেন।
আরও পড়ুন
এসময় মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। সবাই যেন সচেতন হন। সবাই সচেতন না হলে সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এসব পরিত্যক্ত টায়ার, দইয়ের পাত্র, ডাবের খোসা, চিপসের প্যাকেটে জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা জন্মায়। আর এসবে যেন পানি জমে না থাকতে পারে, সে কারণে আমরা এসব কিনে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সচেতন হবেন। ডিএনসিসি প্রতিটি কাউন্সিলরের কার্যালয়ে গিয়ে আপনারা এসব জমা দিয়ে নগদ অর্থ নিয়ে যাবেন।
জানা গেছে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে শহরজুড়ে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এডিস মশার প্রজনন স্থল এবং পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, ডাবের খোসা, অব্যবহৃত টায়ার, কমোড ও অন্যান্য পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কিনে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।
প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের কার্যালয়ে গিয়ে যে কেউ এসব পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি জমা দিয়ে নগদ অর্থ সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রতিটি ওয়ার্ডের ক্রয়কৃত পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি প্রতিদিন নিয়মিতভাবে সংগ্রহ করে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা নিকটবর্তী এসটিএস (সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন) এ অপসারণ করবেন। জনগণকে সম্পৃক্ত করে প্রতিটি ওয়ার্ডকে পরিচ্ছন্ন করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সংস্থাটি।
কোন পরিত্যক্ত দ্রব্যাদিতে কত টাকা পর্যন্ত দেবে সে বিষয় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চিপসের প্যাকেট বা সমজাতীয় প্যাকেট প্রতি ১০০টির জন্য ১০০ টাকা করে মূল্য দেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। একইভাবে আইসক্রিমের কাপ, ডিসপোজেবল গ্লাস, কাপ ১০০টির ১০০ টাকা, অব্যবহৃত পলিথিন প্রতি কেজি ৫০ টাকা, প্রতি ডাবের খোসা ২ টাকা, মাটি, প্লাস্টিক, মেলামাইন, সিরামিক পাত্র প্রতিটির জন্য ৩ টাকা।
এছাড়া পরিত্যক্ত টায়ার প্রতিটি ৫০ টাকা, পরিত্যক্ত কমোড, বেসিন প্রতিটির জন্য ১০০ টাকা, পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের দ্রব্যাদি প্রতি কেজি ১০ টাকায় কিনে নেবে উত্তর সিটি কর্পোরেশন।
এএসএস/এমএসএ