দাম্পত্য কলহে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ঘটনার সঙ্গে জড়িত স্বামী ইদ্রিস মিয়াকে কুমিল্লা থেকে ও গাজীপুর থেকে সহযোগী রহমত আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) র্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গাজীপুরের শ্রীপুরের ভাড়া বাসা থেকে আজিদা বেগম নামের এক নারীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে র্যাবের কয়েকটি অভিযানিক দল ক্লুলেস এ হত্যার ঘটনার প্রধান আসামি ও তার সহযোগীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কুমিল্লা ও গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। র্যাব-১ ও র্যাব-১১ সম্মিলিতভাবে এ অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানান তিনি।
ঘটনার বর্ণনায় মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, গত ২১ এপ্রিল দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুরের ভাড়া বাড়ি থেকে আজিদা বেগম নামের একজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর নিহত আজিদা বেগমের ছোট ভাই মোস্তফা শ্রীপুর থানায় একটি অজ্ঞাতনামা হত্যা মামলা করেন। পরে প্রাথমিক তদন্তে তার স্বামীর জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে আসে।
আরও পড়ুন
ব্যাপক চেষ্টার পর গত ২১ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে র্যাব-১ এবং র্যাব-১১ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রধান আসামির অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। র্যাব-১, সিপিএসসি, এবং র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামি মো. ইদ্রিস মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদ করে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে অভিযান চালিয়ে সহযোগী মো. রহমত আলীকেও গ্রেপ্তার করে।
যে জবানবন্দি দিলেন আসামিরা
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, আট বছর আগে ইদ্রিস মিয়া ও নিহত আজিদা বেগম বিয়ে করেন। এরপর থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ লেগে থাকত। তারা প্রতিনিয়ত ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হতেন। সম্প্রতি সম্পর্কের অবনতি হলে ইদ্রিস মিয়ার মনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি স্ত্রী আজিদাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী গত ২০ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে ইদ্রিস মিয়া ও তার সহযোগী মো. রহমত আলী আজিদা বেগমকে ঘুমন্ত অবস্থায় ভাড়া বাড়িতে ছুরি দিয়ে জবাই করেন। এসময় সহযোগী রহমত আলী মুখে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা নিশ্চিত করেন। পরে তারা ঘরের দরজায় তালা দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এছাড়া গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গাজীপুরের শ্রীপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আরএইচটি/এসএসএইচ