আফতাবনগর নিয়ে দুই সিটির টানাটানি, হাট বন্ধ করতে সোসাইটির চিঠি
সীমানা কেন্দ্রিক সমস্যায় আফতাবনগর হাট নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পৃথকভাবে ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং অর্থাৎ আফতাব নগরের কয়েকটি ব্লকে কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য দুটি সংস্থায়ই টেন্ডার দিয়েছে। ফলে আফতাব নগর এক হাট নিয়ে দুই সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে টানাটানি শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে কোরবানির সময় পশুর হাট বসালে এলাকায় নানা রকমের নাগরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়—এমন কারণ উল্লেখ করে আফতাব নগরে হাট না বসাতে বা হাটের অনুমতি না দিতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের কাছেই চিঠি দিয়ে আবেদন জানিয়েছে জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটি (আফতাবনগর সোসাইটি)।
সম্প্রতি ১১টি স্থানে কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাট বসানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। সেখানে ৮ নম্বর হাট হিসেবে ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাবনগর) ব্লক ই, এফ, জি এবং সেকশন ১ ও ২ এর খালি জায়গায় অস্থায়ী পশুর হাটের জন্য ২ কোটি ৫৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হয়। সেখানে শিডিউল মূল্য ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৮০০ টাকা।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নয়টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সেখানে ৪ নম্বর হাট হিসেবে ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাব নগর) হাটের নাম রয়েছে। তারা আফতাব নগরের ব্লক ই, এফ, জি, এইচ, এল, এম, এনসহ আশেপাশের খালি জায়গায় হাট বসানোর জন্য সরকারি মূল্য এক কোটি ৭৪ লাখ ২ হাজার ৭২৭ টাকা ঈদের অমূল্য নির্ধারণ করেছে। সেখানে শিডিউল মূল্য ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা।
এর ফলে একই হাট নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে টানাটানি শুরু হয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন ইজারাদাররা।
অন্যদিকে এই স্থানে হাট না বসানোর অনুমতি না দিতে বা হাট না বসানোর জন্য ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে চিঠি দিয়েছে জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটি (আফতাবনগর সোসাইটি)।
রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার কারণে এলাকাবাসীর চলাচল, মালামাল পরিবহন ও অসুস্থ রোগীকে জরুরি হাসপাতালে নিতে অসুবিধা হয়। এমনকি মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করার জন্য পরিবহন সমস্যারও সৃষ্টি হয়। এছাড়া গরুর হাট শেষ হলেও ময়লা আবর্জনা মাসের পর মাস পরিষ্কার করা হয় না। দুর্গন্ধ ও মশার অত্যাচারে মানুষের এখানে বসবাস খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ঢালী এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম কামাল স্বাক্ষর করা পৃথক দুটি চিঠি ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাড্ডা থানাধীন আফতাবনগর, জহুরুল ইসলাম সিটি, ইস্টার্ন হাউজিং লি: এর একটি আবাসিক এলাকা। এখানে বর্তমানে প্রতি ব্লকে প্রচুর ইমারত নির্মাণ হয়েছে এবং দুই লক্ষ্যের অধিক মানুষ বসবাস করেন। এখানে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ইম্পেরিয়াল কলেজসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতি বছর এখানে গরুর হাট দেওয়ার কারণে এলাকাবাসী ও ছাত্র ছাত্রীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। এছাড়া যত্রতত্র অপরিকল্পিত পানির লাইন সংযোগ দেওয়া হয়, পরবর্তীতে সঠিকভাবে এ সকল পানির লাইন বন্ধ না করার কারণে এলাকাবাসীকে সারাবছর ময়লা পানি ব্যবহার করতে হয়। বৈদ্যুতিক লাইন টানার সময় স্ট্রীট লাইট ও অন্যান্য লাইনের তারগুলো ছিঁড়ে ফেলে, ফলে পরবর্তীতে এগুলো মেরামতে সোসাইটিকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার কারণে এলাকাবাসীর চলাচল, মালামাল পরিবহন ও অসুস্থ রোগীকে জরুরি হাসপাতালে নিতে অসুবিধা হয়। এমনকি মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করার জন্য পরিবহন সমস্যারও সৃষ্টি হয়। এছাড়া গরুর হাট শেষ হলেও ময়লা আবর্জনা মাসের পর মাস পরিষ্কার করা হয় না। দুর্গন্ধ ও মশার অত্যাচারে মানুষের এখানে বসবাস খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাছাড়া রামপুরা ব্রিজ প্রধান সড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এই পরিস্থিতিতে চলতি বছর ২০২৪ থেকে কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় গরু ছাগলের হাট বসানোর অনুমতি না দেওয়ার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়।
এএসএস/এমএসএ