বড় ভাইদের নাম বলে বাঁচার চেষ্টা করলে বড় ভাইকেও গ্রেপ্তার করব
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড, জেনেভা ক্যাম্প, বসিলাসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি বলছে, গ্রেপ্তাররা মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ কাজে জড়িত।
যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন— রাজা (৩৫), মো. জালাল (২৫), মো. মৃদুল (২৬), মো. জাহাঙ্গীর (৩৫), মো. শামিম মিয়া (২৪), মো. শহিদ (২৫), মো. শিমুল (২৫), মো. মনিরুল ইসলাম (২৭), মো. সোহেল খান (২৩) ও নুর মোহাম্মদ (২০)।
বুধবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, এই গ্রুপের সদস্যরা চুরি-ছিনতাই, ইভটিজিংসহ নানা অপরাধে জড়িত রয়েছে। তাদের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অনেকেই অভিযোগ করছেন। তারা দিনে দুপুরে গাড়ি থেকে মোবাইল টান দিয়ে নিয়ে যায়। উঠতি বয়সী মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ডিবির তেজগাঁও কাজ শুরু করেছে। তারা মোহাম্মদপুর থেকে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, এরা পৃথক দলে ভাগ হয়ে ছিনতাই করতো। দীর্ঘদিন ধরে কিছু বড় ভাইয়ের নেতৃত্বে তারা এই কাজ করতো। বিশেষ করে রাতের বেলা চাপাতি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে। দিনের বেলা বড় ভাইদের সঙ্গে ঘোরে। আমরা বেশ কয়েকজন বড় ভাইয়ের নাম পেয়েছি। যে দলেরই হোক না কেন তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তারা ছিনতাইয়ের জন্য লেগুনা ব্যবহার করে। লেগুনা চালক ও হেলপাররাও তাদের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
হারুন আরও বলেন, কিশোর গ্যাং ও ইভটিজারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় এলাকায় আমাদের অভিযান চলবে। ছিনতাইকারী ও বড় ভাইদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে গোয়েন্দা পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করছি।
আরও পড়ুন
কিশোর গ্যাংয়ের প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব কি না জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, আমাদের ডিবির ৪০টিরও বেশি চৌকস টিম রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই কাজ করবে। এখানে কোনো বড় ভাই না, কোনো ভাইয়েরই খাওয়া থাকবে না। আমরা যদি তাদের পাই আর আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ, ছিনতাই, ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা ঘটায় তাহলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধীদের কোনো পরিচয় নেই। তাদের একটাই পরিচয় তারা অপরাধী। তারা কোনো দলের সদস্য না। দিনের বেলা বড়ভাইদের সঙ্গে ঘুরবে আর রাতের বেলা ছিনতাই করবে এটা চলবে না। ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছি কেউ তদবির করার সাহস করে নেই। ভবিষ্যতেও করবে না। কেউ যদি বড়ভাইদের নাম বলে বাঁচার চেষ্টা করে আমরা সেই বড় ভাইকেও গ্রেপ্তার করবো।
আদাবরে গণছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে হারুন বলেন, আমাদের ডিবির টিম ছায়া তদন্ত করছে। আদাবর থানায় একটি মামলা হয়েছে। যেকোনো সময়ে গ্রেপ্তার করা হবে। গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে রাজার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা ও মৃদুলের বিরুদ্ধে ৪টি মামলার রয়েছে।
জেইউ/এনএফ