২ সপ্তাহ কঠোর লকডাউন চায় জাতীয় কারিগরি কমিটি
দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন চায় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটি। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত এক মাস ধরে করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতি। এ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ থেকে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। তবুও বিধিনিষেধ মানা হচ্ছে না। যে কারণে করোনা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বেড়েছে। এই সংক্রমণ ও মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে আরও দুই সপ্তাহের লকডাউন করা যেতে পারে। বিশেষ করে সিটি করপোরেশন ও উচ্চ সংক্রমণ এলাকাগুলোতে দুই সপ্তাহের পূর্ণ লকডাউন দেওয়া যেতে পারে। এটি শেষ হলে সংক্রমণ বিবেচনা করে আবার বিধিনিষেধ দেওয়া যেতে পারে।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সাধারণ বেড, আইসিইউ অক্সিজেন সরবরাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২০০ শয্যা বিশিষ্ট দেশের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল চালু হচ্ছে। সরকার এমন কার্যক্রমের মধ্যে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। তাই আরও দ্রুত সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।
এতে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নমুনা পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোয় ভিড় বেড়েছে। পরীক্ষা করাতে ও ফল পেতে সময় লাগছে। টেস্ট করাতে যারা আসছেন তাদের অধিকাংশই বিদেশগামী যাত্রী। এই বিদেশি কর্মজীবী মানুষরা ছাড়া অন্যান্যরা বেসরকারি পরীক্ষাকেন্দ্রে নমুনা পরীক্ষা করতে পারলে সরকারি পরীক্ষাগারের ওপর চাপ কমে আসবে। এতে দ্রুত ফল পাওয়া যাবে এবং করোনা রোগীকে আইসোলেশনে রাখা সম্ভব হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দেশের টিকা কার্যক্রম ফলপ্রসূ হয়েছে। এ কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। সরবরাহ নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আমদানি করার পুনরায় সুপারিশ করা হলো।
এদিকে, ১৪ এপ্রিল থেকে সাত দিন জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস, যানবাহন, গার্মেন্টস কারখানাসহ সবকিছু বন্ধ থাকবে। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
তিনি জানান, লকডাউন চলাকালে কোনোভাবেই মানুষকে ঘরের বাইরে আসতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে রোববার (১১ এপ্রিল) প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
করোনার লাগাম টেনে ধরতে গত ৫ এপ্রিল থেকে দেশে এক সপ্তাহের কঠোর নিষেধাজ্ঞা চলছে। আজ এ নিষেধাজ্ঞা পঞ্চম দিন। এ সময়কালে ১১ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার। যদিও এর মধ্যে দুটি শিথিল করা হয়েছে। সীমিত পরিসরে চালু করা হয়েছে যানবাহন ও খুলে দেওয়া হয়েছে শপিংমল, মার্কেট ও দোকানপাট।
টিআই/এফআর