দুই মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান থেকে ৭৪ লাখ টাকা জব্দ, গ্রেপ্তার ৪
অবৈধ প্রক্রিয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার অভিযোগে দুই মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ২১ লাখ বাংলাদেশি টাকাসহ ৭৪ লাখ বাংলাদেশি টাকার মূল্য মানের বৈদেশিক মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ও বকাউল মানি এক্সচেঞ্জ।
গ্রেপ্তার চার জন হলেন– মো. মকবুল হোসেন, মাসুদ আলম, এম এম জাকারিয়া ও জামাল উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর পল্টনে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের একটি টিম।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সিআইডি।
এ ব্যাপারে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে পল্টনে ‘চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড’ ও ‘বকাউল মানি এক্সচেঞ্জ’র অফিস কক্ষে অভিযান পরিচালনা করে সিআইডি।
চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের অফিস কক্ষের ভেতরে মকবুল হোসেন বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির জন্য শপিং ব্যাগ থেকে টাকা বের করার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার দেখানো মতে দোকানের ভেতর ১ নম্বর কাউন্টারের সামনে থেকে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫শ বাংলাদেশি টাকা, ৫৫ হাজার রিয়াল, ৩০৭০ ইউরো এবং ১৫৫০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে মকবুল জানায়, চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জের মালিক আহমেদ নোমানের কাছে বিক্রির জন্য এবং বাংলাদেশি টাকা দিয়ে একই দোকান থেকে ইউএস ডলার কেনার জন্য তিনি এসেছেন। এরপর চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের অফিস কক্ষে তল্লাশি করে ১ নম্বর কাউন্টার থেকে ২০৭৫৫ ইউএস ডলার, ৪৮৯৩৭ সৌদি রিয়াল, ২১০০ ইউরো, ১১৭০০০ ভারতীয় রুপি, ২০৯০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত এবং ৫ নম্বর কাউন্টার থেকে ১৩ লাখ বাংলাদেশি টাকা উদ্ধার করা হয়। এসময় মো. মাসুদ আলমকে আটক করা হয়।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি ৫ নম্বর কাউন্টারের মালিক শামীমা আক্তারের ম্যানেজার। একই দোকানের ৮ নম্বর কাউন্টারের ফাইল ক্যাবিনেট থেকে ২০২০ সৌদি রিয়াল এবং ৬ লাখ বাংলাদেশি টাকা জব্দ করা হয়। একই দোকানের ভেতরে শপিং ব্যাগে রাখা অবস্থায় প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ জানায়, ৮ নম্বর কাউন্টারের মালিক শিহাবউদ্দিন মৃধা।
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সিআইডি জানিয়েছে, চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জের মালিক আহমেদ নোমান হলেও তিনি সব সময় দোকানে থাকেন না। তবে আহমেদ নোমানের হয়ে তার বড় ভাই এম এম জাকারিয়া দোকানটি পরিচালনা করেন। এম এম জাকারিয়া দোকানের মোট ৯টি কাউন্টারের মধ্যে ৯ নম্বর কাউন্টারের মালিক। পরবর্তীতে ৯নং কাউন্টার থেকে তাকে আটক করা হয়।
একই ভবনের নিচতলার ১১০নং রুম ‘বকাউল মানি একচেঞ্জ’র ভেতরে অভিযান চালিয়ে ৫৮৭৮ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ১০৩৫ দুবাই দিরহাম, ৫৫০০ ভারতীয় রুপি জব্দ ও মো. জামাল উদ্দিনকে আটক করা হয়।
সিআইডি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সহায়তায় মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কোনো প্রকার নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে দৈনিক বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচা করছে। তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।
জেইউ/এসএসএইচ/