ডেঙ্গু আতঙ্ক : সিটি কর্পোরেশন কী করে বুঝি না
দিন কিংবা রাত, ঘরে কিংবা বাইরে, বাসা কিংবা অফিস— সব জায়গায় এখন মশার উপদ্রব। বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা, হাসপাতালগুলো ভরে গেছে ডেঙ্গু রোগীতে। এ অবস্থায় ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছেন রাজধানীবাসী।
এডিসবাহিত এ মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ নগরবাসীকে বাঁচাতে বিভিন্ন সময় নানা উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এখনও চলছে চিরুনি অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা। কিন্তু কোনোভাবেই কমছে না মশার উপদ্রব। অবস্থা এমন যেন সিটি কর্পোরেশনকে তোয়াক্কাই করছে না মশা!
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এবার ডেঙ্গু ভয়ানক রূপ নিতে পারে। দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি ছিল ২০১৯ সালে। সেবার ঢাকার দুই সিটিতে ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডের সংখ্যা ছিল ২১টি। এবার ঢাকার দুই সিটিতে ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকির ওয়ার্ডের সংখ্যা ৫৫টি। সেই বিবেচনায় এবার ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার ঘনত্ব ও সম্ভাব্য প্রজননস্থলের সংখ্যা সর্বোচ্চ
বিভিন্ন সময়ে রাজধানীবাসী যানজট, জলাবদ্ধতা, গ্যাস কিংবা পানির সংকটের মতো নানা সমস্যার মুখে পড়েছেন। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে আলোচনায় এখন মশার উপদ্রব আর ডেঙ্গু আতঙ্ক। ডেঙ্গুর ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে মানুষ। ক্ষুদ্র মশার উৎপাতে রীতিমতো অসহায় মেগাসিটির বাসিন্দারা। কয়েল জ্বালিয়ে কিংবা অ্যারোসল দিয়েও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে দিনের বেলায়ও মশারি টানাতে হচ্ছে অনেককে।
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের দাবি, মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে তারা। মশার উৎপত্তিস্থল খুঁজতে আধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন ব্যবহার করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মশা মারতে অভিনব এক পদ্ধতি ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছিল। তারা মশা মারতে খাল, নালা, ড্রেনসহ বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাঙ, গাপ্পি মাছ, হাঁস ছেড়েছিল। ধারণা করা হয়েছিল, এগুলো পানিতে থাকা মশার লার্ভা খেয়ে ফেলবে। ফলে সেসব স্থানে মশা আর বংশবিস্তার করতে পারবে না। এছাড়া জিঙ্গেল বাজিয়েও মশা নিয়ন্ত্রণে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টাও করেছে দক্ষিণ সিটি। এমন নানা উদ্যোগ নিয়েও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নগরবাসীকে মশার উপদ্রব, ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে পারেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ৫৫টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে মোট ১২৯টি ওয়ার্ড রয়েছে, যার মধ্যে ৯৮টি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার আওতাধীন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কীটতত্ত্ব দল জরিপ চালিয়েছে। গত ১৭ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত প্রাক-বর্ষা এডিস জরিপে ঢাকার দুই সিটির ৯৮টি ওয়ার্ডে তিন হাজার ১৪৯টি বাড়িতে জরিপ পরিচালিত হয়। সেখানে ৫৫টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকার তথ্য উঠে আসে।
যে কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এবার ডেঙ্গু ভয়ানক রূপ নিতে পারে। দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি ছিল ২০১৯ সালে। সেবার ঢাকার দুই সিটিতে ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডের সংখ্যা ছিল ২১টি। এবার ঢাকার দুই সিটিতে ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকির ওয়ার্ডের সংখ্যা ৫৫টি। সেই বিবেচনায় এবার ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার ঘনত্ব ও সম্ভাব্য প্রজননস্থলের সংখ্যা সর্বোচ্চ।
যা বলছে ডেঙ্গু আতঙ্কে থাকা নগরবাসী
রাজধানীর বনশ্রীর বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেন, আমরা দিন-রাত ডেঙ্গু আতঙ্কে থাকি। আশপাশের সবার কাছ থেকে শুনছি, অনেকের ডেঙ্গু হচ্ছে। আমার বাড়িতেও ছোট বাচ্চা আছে। সে কারণে ভয়টা আরও বেশি। দিন-রাত সব সময় মশারি টানিয়ে রাখতে হচ্ছে। বাড়িতে পানি জমতে দিচ্ছি না কিন্তু বাইরে থেকে মশা এসে কামড়ালে এর দায় কে নেবে? সিটি কর্পোরেশন কী করে বুঝি না, তাদের মশা নিয়ন্ত্রণের খবর শুধু টিভিতে দেখি। কিন্তু বাস্তবজীবনে সুফল আমরা পাই না। আমরা তো নিয়মিত সিটি কর্পোরেশনের কর পরিশোধ করি, তাহলে তাদের কাছ থেকে সেবা কেন পাব না?
মিরপুর- ১০ সংলগ্ন পর্বতা সেনপাড়া এলাকার বাড়ির মালিক সেকেন্দার আলী বলেন, আমার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে তিনজনের ডেঙ্গু হয়েছে। বাসা, দোকান, বাইরে– সবখানে মশার উপদ্রব। কোনোভাবেই মশা কমে না। সিটি কর্পোরেশনের কাউকেও নিয়মিত মশার ওষুধ ছেটাতে দেখা যায় না। সপ্তাহে দু-একবার আসে আর ধোঁয়া উড়িয়ে চলে যায়, তাতে মশা মরে না। চারদিকে শুধু ডেঙ্গু রোগীর খবর শোনা যাচ্ছে। এখন যদি সিটি কর্পোরেশন থেকে ব্যবস্থা সেভাবে না নেওয়া হয়, তাহলে তো আমরা কেউই নিরাপদ নয়। আমরা চাই, সিটি কর্পোরেশন মশা মারতে জোরালো উদ্যোগ নিক এবং আমাদের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করুক।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কী উদ্যোগ নিল সিটি কর্পোরেশন
রাজধানীতে হঠাৎ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। তারা নিজেদের আওতাধীন এলাকায় ডেঙ্গু ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিস মশার প্রজননস্থল চিহ্নিত করার পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। প্রতিদিনই তারা বিভিন্ন এলাকায় এমন অভিযান পরিচালনা করে লাখ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করছে।
পাশাপাশি গত ৪ জুলাই থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ২৫টি ওয়ার্ডে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে তিন দিনের বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু করেছে ডিএসসিসি। কর্মসূচিতে প্রতিদিন সকালে ১৩ জন এবং বিকেলে ১৩ জন মশককর্মী ব্যাপকভাবে লার্ভিসাইডিং ও অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একইসঙ্গে এডিস মশার উৎসমূলগুলো নির্মূলে বিশেষ কার্যক্রমও পরিচালনা করা হবে। এছাড়া কাউন্সিলরদের জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনাও প্রদান করা হয়েছে।
জানা গেছে, অভিযান পরিচালনা করা ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২, ৩, ৪, ৬, ৯, ১১, ১২, ১৩, ১৫, ১৯, ২২, ২৩, ২৬, ৩০, ৩৪, ৩৬, ৪১, ৪৪ ৪৫ ৪৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ড। এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ৫২, ৫৩, ৫৪ ও ৬২ নম্বর ওয়ার্ডেও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে সংস্থাটি।
অন্যদিকে, মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ৮ জুলাই (শনিবার) থেকে ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে একযোগে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া এডিস মশা নিধনে ড্রোনের সাহায্যে বাসাবাড়ির ছাদে পানি জমে আছে কি না, মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ আছে কি না— বিষয়গুলো দেখতে ড্রোনের মাধ্যমে সার্ভে শুরু করেছে তারা। আগামী কয়েকদিনে পৃথক পৃথক ড্রোনের মাধ্যমে ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকার বাসাবাড়ির ছাদ সার্ভে করা হবে। অন্যদিকে, প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়িতে মশার লার্ভার উৎস খুঁজতে অভিযান পরিচালনা করছে ডিএনসিসি।
এছাড়া ডিএনসিসিতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মশা নিধনে ল্যাব স্থাপনে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তকে এডিস মশা সম্পর্কে সচেতনতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্তিকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তাদের কার্যক্রমের মধ্যে বাফেলো টার্বাইন ক্রয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া ড্রয়িং বুক, নোভালিউরন, লার্ভিসাইডিং ওপর গুরুত্ব প্রদান, মশক নিধনকর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা, জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে মশার হট স্পট চিহ্নিতকরণ ও ব্রিডিং ধ্বংসের উদ্যোগ নিয়েছে উত্তর সিটি।
যা বলছেন বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্টরা
জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, সিটি কর্পোরেশনকে মশার হটস্পট ম্যানেজমেন্টের পাশাপাশি প্রজননস্থল ধ্বংস করার কার্যক্রম নিতে হবে। এ মুহূর্তে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দরকার বিজ্ঞানভিত্তিক পদক্ষেপ। যেমন-তেমনভাবে কাজ করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে দীর্ঘমেয়াদি মহাপরিকল্পনা। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সারা বছরব্যাপী চলমান থাকবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে এ উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপের কথা জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, সাধারণত প্রতিটি ওয়ার্ডে এডিস মশা নিধনে সকালে সাতজন এবং বিকেলে ছয়জন মশককর্মী কাজ করে থাকেন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু করেছি। এখন ওয়ার্ডগুলোতে ১৩ জন মশককর্মী সকালে লার্ভিসাইডিং এবং ১৩ জন বিকেলে অ্যাডাল্টিসাইডিং পরিচালনা করবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের ঠিকানা নিয়ে পরবর্তীতে আমরা বাসায় বাসায় গিয়ে দেখে আসছি, সেখানে কোথাও এডিস মশার উৎস আছে কি না। যদি থাকে তাহলে আমরা রোগীর বাড়ির আশপাশে বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করছি। রোগীসহ এলাকাবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে আসছে আমাদের কর্মীরা।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। আমরা এডিস মশা নিধনে নিয়মিত চিরুনি অভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করছি এবং লিফলেট বিতরণ করে মানুষকে সচেতন করার কাজও অব্যাহত রেখেছি— বলেন মিজানুর রহমান।
অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সেলিম রেজা বলেন, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এ অবস্থায় আমাদের করণীয়ের পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা ৮ জুলাই থেকে মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচি নিয়েছি। এ সময় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে মশার উৎসস্থল ধ্বংস করা হবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশন থেকে নিয়মিত লার্ভিসাইডিং করার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিএনসিসি ও বাংলাদেশ স্কাউট সদস্যদের যুক্ত করে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। মসজিদ, মাদ্রাসার ইমাম ও খতিবরা এবং স্কুল-কলেজের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছি। ইতোমধ্যে ডিএনসিসির সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছি। তবে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরি।
মশা মারতে কত টাকা খরচ করে দুই সিটি কর্পোরেশন
গত অর্থবছরে মশা নিধনে বড় অঙ্কের বরাদ্দ রেখেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল মশক নিধনে ব্যবহৃত কীটনাশকে। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এ বরাদ্দ ছিল ২২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটে তা ২২ কোটি ১২ লাখ টাকা করা হয়। এছাড়া মশক নিধনে ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিনের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছিল তিন কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
অন্যদিকে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। সেখানে মশার ওষুধ বাবদ ৪০ কোটি টাকা, কচুরিপানা, আগাছা পরিষ্কার ও পরিচর্যায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন পরিবহনে চার কোটি টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের বিশেষ কর্মসূচিতে এক কোটি টাকা, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ২৫ কোটি টাকা এবং মশক নিয়ন্ত্রণে চিরুনি অভিযানে চার কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখে ডিএনসিসি। সবমিলিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে মশা মারতে ৭৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল।
দুই সিটি বছরে শত কোটি টাকা খরচ করেও নগরবাসীকে মশার যন্ত্রণা ও ডেঙ্গু আতঙ্ক থেকে রক্ষা করতে পারছে না।
এএসএস/এসএসএইচ/