ফারদিনের বাবার অভিযোগ বুশরার ইন্ধনে হত্যা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যা মামলায় তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির রামপুরা থানা পুলিশ।
বুধবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী বুশরাকে এজাহারনামীয় আসামি ও আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, বুশরার ইন্ধনে পরশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া পরশ নিখোঁজ হওয়ার দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বুশরার সঙ্গে ছিল।
নূর উদ্দিন রানা এজাহারে অভিযোগ করে বলেন, গত ৪ নভেম্বর ফারদিন নূর পরশ (২৩) ডেমরার বাসা থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উদ্দেশে বের হয়। সে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরীক্ষা দিয়ে ৫ নভেম্বর দুপুরে বাসায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার (৫ নভেম্বর) ফারদিন পরীক্ষা দিতে না যাওয়ায় তার বন্ধু ও শিক্ষকরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তার ফোনে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যাচ্ছিল না। শনিবার সকাল থেকেই তার ফোন বন্ধ ছিল। পরে আমরা বিষয়টি শনিবার বিকেল ৫টার দিকে জানতে পারি।
আরও পড়ুন : ফারদিন হত্যা মামলায় বান্ধবী বুশরার পাঁচ দিনের রিমান্ড
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ফারদিনের বন্ধু-বান্ধব ও সহপাঠীদের নিয়ে আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাইনি।
পরে আমরা বিভিন্নভাবে জানতে পারি শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বাসা থেকে বের হয়ে ফারদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আমাতুল্লাহ বুশরার সঙ্গে ছিল। প্রথমত তারা দুজন সিটি কলেজ এলাকায় মিলিত হয়েছে এবং পরে নীলক্ষেত, ধানমন্ডি এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছে। পরে বিকেলে ধানমন্ডির একটি রেস্টুরেন্টে তারা খাবার খায়।
তিনি আরও বলেন, খাবার খেয়ে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়িয়েছে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রিকশায় করে তারা রামপুরা টিভি ভবন সংলগ্ন এলাকায় আসে।
ফারদিনের বাবা এজাহারে অভিযোগ করে বলেন, তিন দিন খোঁজাখুঁজির পর ৭ নভেম্বর বিকেলে আমার ছেলের মরদেহ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে নৌ-পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার করেছে। এ খবর পেয়ে আমি আত্মীয়-স্বজনসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার ছেলে ফারদিন নূর পরশের মরদেহ শনাক্ত করি।
আমি ধারণা করছি, আমাতুল্লাহ বুশরার ইন্ধনে ৪-৭ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে রামপুরা এলাকায় অথবা অন্য কোনো স্থানে পরিকল্পিতভাবে ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। আমার পুত্র ফারদিন নূর পরশের নিখোঁজ ও মৃত্যুতে আমাতুল্লাহ বুশরার ইন্ধন রয়েছে। এ অবস্থায় ফারদিন নূর পরশ হত্যার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে বিচার নিশ্চিত করতে এই এজাহার দাখিল করছি।
এ বিষয়ে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, বুধবার (১০ নভেম্বর) রাতে ফারদিনের বাবা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তিনি মামলায় হত্যা ও মরদেহ গুম করার অভিযোগ আনেন। মামলায় একমাত্র এজাহারনামীয় আসামি বুশরা, আরও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় রামপুরা এলাকা থেকে বুশরাকে গ্রেপ্তার করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা পরশকে হত্যা করার মোটিভ জানতে পারিনি। এছাড়া বুশরার সঙ্গে পরশের কি ধরনের সম্পর্ক ছিল সেটিও এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা প্রয়োজন। আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করছি।
এমএসি/এসএসএইচ