প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
‘ইউনিলিভারের পণ্য যে কেউ আমদানি করতে পারবে : হাইকোর্ট’— শিরোনামে গত ২৫ অক্টোবর ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল)।
ঢাকা পোস্টে পাঠানো এ সংক্রান্ত এক প্রতিবাদলিপিতে ইউনিলিভার বাংলাদেশ জানিয়েছে, ওই প্রতিবেদনে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। যা বাংলাদেশে ইউনিলিভারের ব্যবসায়িক সুনামের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং বাংলাদেশের ভোক্তাদের কাছে ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে।
ইউনিলিভার বাংলাদেশ জানায়, ২০০৬ সালে ২১টি পণ্য আমদানি ও বাজারজাত করা নিয়ে পৃথক দুটি রিট পিটিশন দায়ের করে প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর ১৫ ধারা লঙ্ঘন করে ব্র্যান্ডেড পণ্য আমদানি করা থেকে অননুমোদিত তৃতীয় পক্ষকে আটকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় কাস্টমসহ সরকারি সংস্থাগুলোকে দায়ী করা হয়।
রিট পিটিশনে ইউবিএলের ২১টি পণ্য আমদানিতে তৃতীয়পক্ষকে এলসি খোলার অনুমতি না দেওয়া জন্য আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
উচ্চ আদালত ইউনিলিভারের পক্ষে রায় দেন। এর মানে ‘শুধুমাত্র ইউনিলিভার বাংলাদেশ ২১টি পণ্য/ব্র্যান্ড আমদানির অধিকার রাখে এবং পণ্যের অনুমোদন/লাইসেন্স ধারণ করে’।
ইউনিলিভার বাংলাদেশের দাবি, ‘প্রতিবেদনটি ২৫ অক্টোবর হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চের দেওয়া রায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত, যেটি রিট পিটিশন ৮৩০১/২০১০-এর সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এটি শুধুমাত্র ইউনিলিভারের ছয়টি পণ্যের জন্য প্রযোজ্য, সব পণ্যের ক্ষেত্রে নয়। এছাড়া, রিটটি মাইনটেন্যাবিলিটি (রক্ষণাবেক্ষণ-যোগ্যতা)-এর কারণ দেখিয়ে খারিজ হয়ে যায়। আদেশে উল্লেখ করা হয়নি যে, অননুমোদিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আমদানি আইনসঙ্গত অথবা অনুমোদিত।’
‘সংশ্লিষ্ট আইন অনুসারে কোম্পানি/পক্ষগুলো তার পণ্যের অবৈধ আমদানি থেকে সুরক্ষার ভিত্তি প্রদান করে। ইউনিলিভার ও অন্যান্য কোম্পানি ইতোমধ্যে এ ধরনের নিরাপত্তার জন্য সরকার ও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। পণ্যের সমান্তরাল আমদানির (প্যারালাল ইমপোর্ট) বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের অনুকূলে আদেশ পেয়েছে। বাংলাদেশের হাইকোর্ট থেকে বিভিন্ন আইনি দৃষ্টান্তের প্রয়োগ রয়েছে।’
‘ইউবিএল ৯৫ শতাংশের বেশি পণ্য বাংলাদেশে প্রস্তুত করে এবং ট্রেডমার্ক অধিকার সংরক্ষণ ও ভোক্তাদের ক্ষতিকারক পণ্যগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে অবৈধ আমদানি প্রতিরোধে ইচ্ছুক। প্রায়শই অননুমোদিত আমদানিকারকরা ভেজাল অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য আমদানি করে এবং স্থানীয় বাজারে সেসব পণ্য প্রবেশ করে। এতে সরকারও তার ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। যেহেতু ভোক্তারা এসব পণ্য ইউনিলিভারের পণ্য হিসেবেই জানে, তাই তারা মানহীন অননুমোদিত পণ্যের অভিযোগ ইউবিএল-এর কাছেই তুলে ধরে এবং এতে ইউনিলিভারের দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়’— দাবি ইউনিলিভার বাংলাদেশের।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইউনিলিভার বা ইউনিলিভারের নিযুক্ত আইনজীবীর কাছ থেকে কোনো মন্তব্য নেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি)-এর মন্তব্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। সংবাদের এমন ‘একপাক্ষিক’ উপস্থাপনায় পুরো বিষয়টি অস্পষ্টভাবে উঠে এসেছে — দাবি করে ইউনিলিভার ‘এ সংক্রান্ত প্রতিবাদলিপি প্রকাশ’ এবং ‘উক্ত প্রতিবেদন সংশোধন-সাপেক্ষে সঠিক তথ্য দেশের মানুষকে জানানোর অনুরোধ’ জানায়।
প্রতিবেদকের বক্তব্য
প্রতিবেদনটি রিট পিটিশনের তথ্য এবং আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনাকারী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের ভিত্তিতে করা। এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ঢাকা পোস্টের কাছে সংরক্ষিত আছে।
এমএআর/