সীমান্তে প্রতিটি হত্যাই পরিতাপের : জয়শঙ্কর
বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রচেষ্টায় সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। সীমান্তে ঘটা প্রতিটি হত্যাই পরিতাপের বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন এস জয়শঙ্কর।
তিনি সীমান্ত হত্যার কারণ হিসেবে অপরাধকে দায়ী করেছেন। জয়শঙ্কর বলেন, অপরাধ কমলে সীমান্ত হত্যা কমে আসবে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের সীমান্তে কিছু হত্যার ঘটনা ঘটছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের (বাংলাদেশ-ভারত) ভালো বন্ধুত্ব। আমরা প্রতিবেশী ও বন্ধু। আমার বিশ্বাস আমরা একসঙ্গে কাজ করলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে পারব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের আমন্ত্রণে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় একদিনের ঝটিকা সফরে আসেন জয়শঙ্কর। মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর চূড়ান্ত করতেই জয়শঙ্করের এই সফর।
সীমান্ত হত্যা বন্ধে ঢাকা ও নয়াদিল্লি প্রায় এক যুগ থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উভয়পক্ষের উদ্দেশ্য সীমান্তে হত্যার পরিমাণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে সীমান্ত হত্যা বন্ধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাসহ দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের বৈঠক, আলোচনা ও ফোনালাপ হয়েছে। এমনকি এ নিয়ে প্রতিনিয়ত বৈঠক করে যাচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তারপরও হরহামেশাই গণমাধ্যমে সীমান্ত হত্যার খবর আসছে।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য মতে, ২০০০-২০১৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কমপক্ষে এক হাজার ১৮৫ বাংলাদেশিকে গুলি বা নির্যাতন করে হত্যা করেছে বিএসএফ। তারা বলছে, গত ১০ বছরের তুলনায় ২০২০ সালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) দ্বারা সর্বাধিক বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
সবশেষ গত ১৯ জানুয়ারি মোদির বাংলাদেশ সফর চূড়ান্ত করতে চারদিনের সফরে ভারত যান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। ওই সফরেও সীমান্ত হত্যা বন্ধের ব্যাপারে নয়াদিল্লির সহযোগিতা চান পররাষ্ট্র সচিব।
এর আগে বিদায়ী বছরের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভার্চুয়াল আলোচনায়ও সীমান্ত হত্যা ইস্যুটি উঠে আসে। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ভারত-বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের আলোচনাতেও সীমান্ত হত্যা বন্ধের বিষয়ে আলোচনা হয়।
এনআই/এসএসএইচ/এমএমজে