যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে আইফোন চুরি করে বসুন্ধরায় বিক্রি
যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে গত ৫ জুলাই আইফোন ও স্যামসাংসহ মোট পাঁচটি মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ভাটারা থানায় একটি মামলা হয়। মামলা হওয়ার পর এ বিষয়ে ছায়া-তদন্ত শুরু করে ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) গুলশান বিভাগ।
তদন্তের এক পর্যায়ে রোববার (২৪ জুলাই) রাত থেকে সোমবার (২৫ জুলাই) ভোর পর্যন্ত রাজধানীর বসুন্ধরা, ভাটারা ও কুমিল্লায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে এই চোর চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি গুলশান বিভাগ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- অনিক হাসান (২২), নাহিদ হাসান (১৯) ও নাদিম মোহাম্মদ সাগর (১৮)।
আরও পড়ুন >> যমুনা ফিউচার পার্কে দুঃসাহসিক চুরি, নেপথ্যে টিকটকার চক্র
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে দুটি সনি এক্সপেরিয়া ৮, তিনটি সনি এক্সপেরিয়া ৫, একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৩২, চারটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৯+, চারটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস১০+, একটি স্যামসাং নোট ৯, একটি স্যামসাং নোট ২০, একটি স্যামসাং নোট ১০+, তিনটি আইফোন ৮, একটি আইফোন ৮+, চারটি আইফোন এক্স, দুটি আইফোন এক্সএস, সাতটি আইফোন এক্সআর, একটি আইফোন এক্সএস ম্যাক্স, চারটি আইফোন ১১, তিনটি আইফোন ১১ প্রো, একটি আইফোন মিনি ও একটি আইফোন ১২ প্রোসহ মোট ৪৫টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন >> গার্মেন্টস পণ্যের আড়ালে আনা হয় ৩৭ কোটি টাকার বিদেশি মদ
সোমবার দুপুরে মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কের লেভেল ৪ এর ব্লক সির শেফা ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল শোরুম থেকে তালা ভেঙে আইফোনসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল চুরি হয়। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় মামলা হয়। আমাদের তদন্তে দেখা যায় তিন জন স্মার্টচোর দোকানের তালা ভেঙে ব্যাগভর্তি মোবাইল চুরি করে নিয়ে গেছে। কিন্তু সেখানে সিকিউরিটি গার্ড কেউ ছিল না। প্রথম দুজনকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, তারা যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে চুরি করা মোবাইল নিয়ে বসুন্ধরা মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে এক-দুটি করে বিক্রি করেছে। এরপর অন্য আরেকজনকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, তারা মোবাইল চুরির পর সেগুলো নামিদামি মার্কেটের মোবাইল দোকানে বিক্রি করে।
তিনি বলেন, বসুন্ধরা ও যমুনা ফিউচার মার্কেটে লাগেজে আনা মোবাইলগুলো সরকারি ট্যাক্স ফাঁকি দেয়। একদিকে তারা সরকারি ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে অন্যদিকে মোবাইল যারা কিনছেন সেসব গ্রাহকেরা মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই মোবাইলগুলো চুরি হওয়ার পরে আইএমইআই নম্বর না থাকার কারণে সেগুলো উদ্ধার সম্ভব হয় না।
তিনি আরও বলেন, এক সময় গুলিস্তানসহ আশেপাশের বিভিন্ন মার্কেটে মোবাইল কেনাবেচা হতো। কিন্তু এই চক্রকে গ্রেপ্তারের পর জানা গেলো তারা নামি-দামি মার্কেটে মোবাইল বিক্রি করে।
সিকিউরিটি গার্ডের সহয়তা ছাড়া যমুনা ফিউচার পার্কের মতো মার্কেট থেকে এভাবে মোবাইল চুরি করা সম্ভব কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা স্বীকার করেছেন তারা দিনের বেলায় এসব চুরি করেছে। এভাবে চুরির বিষয়টি মার্কেট কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। মার্কেট কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সহায়তা চান তাহলে সহায়তা দেব। তবে যারা চোরাই মোবাইল বিক্রি করে কিংবা ভবিষ্যতে করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমএসি/জেডএস