হাসপাতালগুলোকে ডেঙ্গু রোগীর তথ্য দিতে বললেন মেয়র
হাসপাতালে যেসব ডেঙ্গু রোগের আছে তাদের তথ্য সিটি করপোরেশনকে জানানোর আহ্বান জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের ডেঙ্গু রোগীর তথ্য দিলে আমরা সেই রোগীর বাসার এলাকায় গিয়ে ব্যাপকভাবে লার্ভাসাইডিং, ফগিংসহ মশা মারার কার্যক্রম আরও জোরদার করতে পারব। ফলে সেই এলাকায় এডিস মশার সংখ্যা কমে আসবে, ডেঙ্গু রোগে মানুষ কম আক্রান্ত হবে।
শনিবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকায় ডেঙ্গুবিরোধী নাগরিক সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সবসময় নাগরিকদের সহযোগিতা, সচেতনতা চাই। সবাই সচেতন না হলে সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। আমরা সবাই কাজ করে যাচ্ছি, সবসময় আমাদের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা মাঠে আছেন। আমরা আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ করে যাচ্ছি, এর সঙ্গে যদি নাগরিকরা একটু সচেতন হন, তাহলেই কেবল ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। পাশাপাশি হাসপাতালে যখন কোনো ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন তখন যদি সেই তথ্য আমরা পূর্ণাঙ্গভাবে পাই তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি। ওই রোগীর বাসার এলাকায় গিয়ে আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে পারি। তাহলে ওই এলাকায় আর ডেঙ্গু রোগী পাওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা কিন্তু এখন আধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন ব্যবহার করছি। এর মাধ্যমে আমাদের কাজ আরও সহজ হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে আমরা প্রায় ২২ হাজার ভবনের ছাদ পরিদর্শন করেছি ড্রোনের মাধ্যমে। সবাই বারবার ভুল বোঝেন— আমরা কিন্তু ড্রোন দিয়ে মশা মারছি না, শুধু মশার উৎপত্তিস্থল, ছাদের উপরের অবস্থান মনিটরিং করছি। যদি ড্রোনের মাধ্যমে ছাদের ওপর মশার উৎপত্তি উপযোগী পরিবেশ দেখতে পাই, তাহলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৩৫ জন
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, গত বছর জুলাই মাসে উত্তর সিটি করপোরেশনের এই জোনে প্রায় ২৩শ ডেঙ্গু রোগী ছিল। কিন্তু চলতি বছরের জুলাই মাসে এই জোনে মাত্র ৮০০ ডেঙ্গু রোগীর খবর আমাদের কাছে আছে। আমাদের চেষ্টার ফলে গত বছরের তুলনায় ডেঙ্গু রোগী অনেক কমে এসেছে। এখন জনগণের সহযোগিতা, তাদের একটু সচেতনতাই পারে ডেঙ্গু রোগীসহ মশার উপদ্রব আরও কমিয়ে আনতে। তাই জনগণকে বলব, আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকুন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৫ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট দেওয়া হচ্ছে। আপনারা সেখান গিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করান। ডেঙ্গু রোগী হলে আমাদের তথ্য দিন, আমরা তাৎক্ষণিক ওই এলাকায় গিয়ে মশা মারার কার্যক্রম আরও গতিশীল করব। আমাদের বিশেষ গাড়ি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরছে, সেখানে ডেঙ্গু বিষয়ক সচেতনতার পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে নাগরিকদের জানানো হচ্ছে। ১০টা ১০ মিনিট প্রতি শনিবার, নিজ নিজ বাড়ি করি পরিষ্কার, এই হোক আমাদের অঙ্গিকার।
এর আগে মেয়র আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে ডেঙ্গুর উৎপত্তিস্থল আছে কি না তা পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি ডেঙ্গু মোকাবিলায় মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসে করণীয় সম্পর্কে বাসা মালিকদের সচেতন করেন।
এসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলামসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এএসএস/এসএসএইচ