শীর্ষ নেতাদের সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে একমত ঢাকা-নয়াদিল্লি
বাংলাদেশ ও ভারতের শীর্ষ নেতাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সব ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পৃক্ততাকে আরও গভীর ও শক্তিশালী করার বিষয়ে একমত হয়েছে ঢাকা ও নয়াদিল্লি।
রোববার (১৯ জুন) সপ্তম যৌথ পরামর্শক কমিশন (জেসিসি) বৈঠক থেকে এমন বার্তা আসে। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত সম্পর্কের সামগ্রিক দিক নিয়ে আলোচনা হওয়া জেসিসি বৈঠকে ঢাকার পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও নয়াদিল্লির পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নেতৃত্ব দেন।
মোমেন-জয়শঙ্কর অভিন্ন নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা, তথ্যপ্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, টেকসই বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও গভীর ও জোরদার করার পাশাপাশি একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হন।
বৈঠকের আগে দেওয়া বক্তব্যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নেত্রকোণা, টাঙ্গাইলসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় ভারত থেকে সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
গত বছর ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফর করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরকালে যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তার অনেকগুলো বিষয় অমীমাংসিত বা আটকে আছে। বৈঠকে সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছিলেন। সেখানেও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর অগ্রগতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। এছাড়া ওই বছর ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জেসিসি বৈঠকেও নেওয়া অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
কোভিড মহামারি সত্ত্বেও উভয় দেশ নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহসহ প্রতিটি খাতে দু’দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন মোমেন-জয়শঙ্কর। মহামারির লড়াইয়ে দু’দেশের যৌথ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন তারা।
উভয়মন্ত্রী উচ্চ পর্যায়ের সফর, বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে নিবিড় সম্পৃক্ততা ও নিয়মিতভাবে অংশীদারিত্ব নির্মাণের প্রচেষ্টাকে আরও উন্নত করতে সম্মত হয়েছেন। তারা যার যার অবস্থান থেকে অগ্রাধিকার ইস্যুগুলোতে সহযোগিতা ত্বরান্বিত করার দায়িত্ব নিয়েছেন। বৈঠকে তারা বলেছেন, দু’দেশের সমস্যাগুলো এবং উভয় জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য টেকসই সমাধান খোঁজার দিকে আরও মনোযোগ দেবেন।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে দু’দেশের সম্পর্কে রোল মডেল হিসেবে অ্যাখ্যা দেন ও প্রশংসা করেন। উভয়ের ভাগ করা আস্থা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা গত দশকে শক্তিশালী হয়েছে বলে মত দেন তারা। উভয়পক্ষ মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বৈঠকে আগামী তথা অষ্টম জেসিসি বৈঠক ২০২৩ সালে বাংলাদেশে হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এনআই/আরএইচ/ওএফ