নতুন তিন রুটে চালু হবে নগর পরিবহন
ঘাটারচর-কাঁচপুর রুটের অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন তিন রুটে নগর পরিবহন চালু করা হবে। বিষয়টি জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ও বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) ডিএসসিসির নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২২তম সভা শেষে তিনি এ কথা জানান।
মেয়র তাপস বলেন, ঢাকা নগর পরিবহনে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। এই পরিবহনের যাত্রীরা অত্যন্ত আনন্দিত। তাদের অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় না। হয়রানির শিকার হতে হয় না। নির্দিষ্ট জায়গা থেকে উঠতে পারেন আবার নির্দিষ্ট জায়গায় নামতে পারেন। ঢাকাবাসীর এ আকাঙ্ক্ষা আমরা পূরণ করতে পেরেছি। সেজন্য আমরা আনন্দিত। এখন এ অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা নতুন তিনটি রুটে নগর পরিবহন চালু করব। কিন্তু এটি তখনই পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন হবে যখন আমরা সব রুটকে একসঙ্গে নিয়ে আরও ভালোভাবে ‘ঢাকা নগর পরিবহন কোম্পানি’ হিসেবে পরিচালনা করতে পারব।
পরীক্ষামূলক যাত্রাপথে নগর পরিবহন সফল মন্তব্য করে মেয়র বলেন, এটা অত্যন্ত সমাদৃত হয়েছে, প্রশংসিত হয়েছে। যাত্রীরা সাদরে গ্রহণ করেছেন। ঢাকাবাসী সাদরে গ্রহণ করেছেন এবং যাত্রী সেবার মান সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু একটি চাহিদা রয়েছে- আমরা যে ৫০টি বাস দিয়ে চালু করেছি, সেটা বৃদ্ধির জন্য যাত্রীরা উৎসুক হয়ে আছেন। বাস সংখ্যা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি, ট্রান্সসিলভা আরও ২০টি বাস চালু করতে পারবে।
বিগত সভায় যে ৩টি রুট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেগুলো আরও সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে জানিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, তিনটি রুট চালুর লক্ষ্যে গৃহীত কার্যক্রমগুলো আমরা পর্যালোচনা করেছি। সার্বিক পর্যালোচনায় রুটগুলোকে আরও সুনির্দিষ্ট করেছি। আমরা ঢাকার প্রান্ত পর্যন্ত সেই রুটকে বিস্তৃত রাখব। এগুলোর মধ্যে- ২২ নম্বর রুটে ৫০টি বাস, ২৩ নম্বর রুটে ১০০টি এবং ২৬ নম্বর রুটে ৭৫টি, সবমিলিয়ে আরও ২২৫টি বাস নতুন করে নামবে।
চারটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ও ঘাটারচরের টার্মিনাল ও ডিপো নির্মাণে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন উদ্যোগ গ্রহণ করবে জানিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, এই ৫টি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য এখন থেকে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন তাদের নিজ নিজ টার্মিনাল নির্মাণের কার্যক্রম হাতে নেবে। অন্যান্য সংস্থা থেকে অনাপত্তি, জমি অধিগ্রহণসহ এ সংক্রান্ত কার্যক্রমের দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশন নেবে।
এ সময় আনিসুল হকের স্বপ্ন বাস্তবাযনে ঢাকাবাসী ও গণমাধ্যমের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মেয়র বলেন, যদিও এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অত্যন্ত দুরূহ ছিল।
বৈঠকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় শহরের রুট যেগুলো আছে সেগুলোতে কীভাবে দ্রুত বাস সেবা দেওয়া যায় সে ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা কমিয়ে গণপরিবহনের মান ও সেবার উন্নয়নে আমরা আরও বেশি নজর দিচ্ছি।
ঢাকার দুই তৃতীয়াংশ মানুষের বাহন বাস উল্লেখ করে উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সমীক্ষায় দেখা গেছে ঢাকা শহরের ৬২ শতাংশ মানুষ বাস সার্ভিস সেবার ওপর নির্ভর করে। তাই বাস সেবা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারলে ট্রাফিক সিস্টেমের বড় পরিবর্তন আসবে।
তিনি আরও বলেন, বাস মালিকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা নয়, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নগরবাসীর জন্য একটি সুশৃঙ্খল বাস সার্ভিস সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, রাজউক সদস্য মো. শফিকুল হক, বিআরটিএর পরিচালক শীতার্ত শেখর বিশ্বাস, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আফজাল উদ্দিন আহমেদসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এএসএস/ওএফ