বাংলাদেশে মারধর করা হয়েছে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের, দাবি মমতার
বাংলাদেশের জেলে বন্দি ছিলেন ভারতের মৎস্যজীবীরা। মুক্তি পেয়ে ফিরে গেছেন তারা। সোমবার গঙ্গাসাগরের সভায় তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেখানেই তিনি অভিযোগ করেন, (বাংলাদেশে) মারধর করা হয়েছে ভারতের মৎস্যজীবীদের। সোমবার (৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
মমতা দাবি করেন, পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন আমাদের মৎস্যজীবীরা। সীমানা পেরিয়ে চলে গিয়েছিলেন। কয়েকজনকে দেখলাম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। সবাই নয়, আমি বললাম খুঁড়িয়ে হাঁটছেন কেন? তারা বলতে চাননি। জানতে পারলাম তাদের কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। তাদের নিয়ে গিয়ে হাত দুটো দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। তাদের মোটা লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। কয়েকজনের শরীরে কোমর থেকে পা পর্যন্ত চোট। জামা-কাপড় পরে আছে বলে বোঝা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আমি ডিএমকে বলব তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। ওনাদের একটা ট্রলার এখানে চলে আসে। পানির মধ্যে সীমানা ঠিক করতে পারে না। কিন্তু আমরা বারণ করব আপনারা কখনও আমাদের সীমানার বাইরে যাবেন না। তাতে মাছ না উঠলে না উঠবে। জীবন থাকলে অনেক মাছ পাবেন। এই যে দুমাস জেলে ছিলেন, পরিবারের কষ্ট হয়েছে। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ… মাস খানেক আগে বাংলাদেশি ট্রলার আমাদের সীমানায় ঢুকে পড়ে। তারা অসুস্থ ছিল, আমরা চিকিৎসা করাই। যত্নে রেখেছিলাম। তাদের আমরা ফেরতও দিয়েছিলাম।
মমতা বলেন, দুই দেশই মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ থাক এটা আমরা চাই। ওদের ট্রলার আটকে ছিল, অসুস্থ ছিল তাদের সম্পূর্ণ চিকিৎসা করে ভালো করে রেখে দেশের বদনাম যাতে না হয়, বাংলার কোনও বদনাম যাতে না হয়, ভারত সরকারকেও জানিয়েছিলাম। মৎস্যজীবীরা কেমন আছেন প্রতিদিন খোঁজ রাখতাম।
প্রসঙ্গত, ভারত আর বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড একে অপরের দেশে আটক মোট ১৮৫ জন মৎস্যজীবী বা জেলেকে নিজ দেশে ফেরত দিয়েছে। দুই দেশের মধ্যে এত বড় সংখ্যায় আটক হওয়া মৎস্যজীবী বিনিময় এর আগে ঘটেনি। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে থাকা বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় এই বিনিময় করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভারত ও বাংলাদেশের দুই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উভয় দেশে আটক মৎস্যজীবীদের তাদের ট্রলার-সহ আন্তর্জাতিক জল-সীমানায় নিয়ে যায় দেশ দুটির কোস্ট গার্ড বাহিনী। সেখানেই আটক মৎস্যজীবীদের বিনিময় চূড়ান্ত করা হয়েছে গত রোববার।
আরও পড়ুন
মূলত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২ জানুয়ারি এক বিবৃতি দিয়ে আটক ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। তার পরের দিন ৩ জানুয়ারি দিল্লিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ঘোষণা দেন, ভারতে আটক বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
টিএম