বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ, পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক অভিযান
বাংলাদেশ থেকে কথিত অনুপ্রবেশ নিয়ে ভারতের রাজনীতি এখন বেশ সরগরম। বিশেষ করে নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ড।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশি নাগরিকদের কথিত অবৈধ অনুপ্রবেশের সাথে সম্পর্কিত অর্থ পাচারের ঘটনার তদন্তে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাজ্য দুটির প্রায় দেড় ডজন স্থানে এই অভিযান চালানো হয়। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
— NDTV (@ndtv) November 12, 2024
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট মঙ্গলবার বাংলাদেশি নাগরিকদের কথিত অবৈধ অনুপ্রবেশের সাথে সম্পর্কিত অর্থ পাচারের ঘটনা তদন্তে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও নির্বাচনী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়েছে বলে সরকারি বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্ত সংস্থার ঝাড়খণ্ড অফিস এই দুই প্রতিবেশী রাজ্যে মোট ১৭টি জায়গায় এই অভিযান চালায়। ঝাড়খণ্ডে কিছু বাংলাদেশি নারীর অনুপ্রবেশ এবং পাচারের ঘটনায় সংস্থাটি গত সেপ্টেম্বরে প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের (পিএমএলএ) অধীনে একটি মামলা দায়ের করেছিল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগে মঙ্গলবার একাধিক জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই নিয়ে ঝাড়খণ্ডে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল।
— NDTV (@ndtv) November 12, 2024
ওই মামলার প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের নানা জায়গায় তল্লাশি শুরু করে ইডি। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম, বনগাঁ, ব্যারাকপুর-সহ আরও একাধিক জেলায় চলছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তল্লাশি।
এর মধ্যে মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা এক নারীর বাড়িতে সকাল থেকে অভিযান শুরু করেছে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তারা। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েক জন নারীকে কাজের প্রলোভনে ভারতে নিয়ে এসেছিলেন ওই নারী। চোরাইপথে অবৈধভাবে তাদের নেওয়া হয়েছিল ভারতে।
অবশ্য কাজের প্রলোভন দিয়ে ভারতে নেওয়া হলেও শেষে তাদের বিভিন্ন অসাধু কাজে যুক্ত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে ওই চক্রের হাত থেকে কয়েকজন পালিয়ে গিয়ে ঝাড়খণ্ডের একটি থানায় অভিযোগ জানান। এরপর মামলা দায়ের হয় রাজ্যটিতে। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে ইডি।
— NDTV (@ndtv) November 12, 2024
সংবাদমাধ্যম বলছে, ঝাড়খণ্ডে দায়ের হওয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইডির তদন্তে উঠে আসে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের সঙ্গে মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের বিষয়টি। পরে সেই কালো টাকা নানা কৌশলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে সাদা করার চেষ্টা হয়েছে বলেও সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ অন্যান্য বিজেপি নেতারা ঝাড়খণ্ড রাজ্য সরকারকে এই ধরনের অনুপ্রবেশে সহায়তা করার অভিযোগ করেছেন।
আর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সোমবার ক্ষমতাসীন জেএমএম-নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ডকে রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের “ধর্মশালায়” রূপান্তরিত করার অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোমবার সেরাকেলায় ঘোষণা করেছেন, বিজেপি ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতায় আসলে দখল হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধার করার পাশাপাশি রাজ্য থেকে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য কমিটি গঠন করা হবে।
ঝাড়খণ্ডে এবার বিধানসভা ভোট হবে দুই দফায়। বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট বুধবার অনুষ্ঠিত হবে ৪৩টি আসনে, আর বাকি ৩৮টি আসনের জন্য দ্বিতীয় দফার ভোট হবে আগামী ২০ নভেম্বর।
টিএম