ঝাড়খণ্ডে ভোটার টানতে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ’ ইস্যুতে মেতেছে বিজেপি?
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ৩৬ বছর বয়সী সরিনা হাঁসদা একজন সাঁওতাল আদিবাসী। তার স্বামীর নাম মুহাম্মদ এজাজ। ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলার বরহেত গ্রামে মুখোমুখি দুই বাড়িতে থাকতেন দু’জন। একে অন্যকে ভালোবেসে ১৪ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন তারা। সরিনা হাঁসদা এখন সেখানকার পঞ্চায়েত প্রধান।
ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় তার স্বামীসহ এলাকার মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষকে যেভাবে ‘‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’’ তকমা দিয়ে নিশানা করা হচ্ছে, তাতে তিনি দুঃখিত। তার কথায়, ‘‘আমি একজন আদিবাসী নারী। আমার স্বামী মুসলমান। আমাদের এখানে নির্বাচন হতে চলেছে, সেই কারণে সাংবাদিকরা এখানে আসছেন।’’
নির্বাচনী প্রচারের সময় বিজেপি ক্রমাগত দাবি জানিয়ে আসছে, ‘‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা’’ সেখানে (ঝাড়খণ্ডে) আদিবাসী নারীদের বিয়ে করে তাদের ভাগের সমস্ত সুবিধা ভোগ করছে। শুধু তাই নয়, ওই নারীদের জমিও হাতিয়ে নিচ্ছে।
এমন অভিযোগের বিষয়ে সারিনা হাঁসদা বলছেন, আদিবাসী হওয়ার কারণে আমাদের কিছু সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, তাই আমরা সুবিধা নিচ্ছি। সেই অধিকারের আওতাতেই আমি গ্রামপ্রধান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেয়েছি। এর সঙ্গে আমাদের বিয়ের কোনও সম্পর্ক নেই।
‘‘নিজের জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার আমাদের রয়েছে এবং এটা নিয়ে কোনও রাজনীতি করা উচিত নয়। গুজবের উপর ভিত্তি করে এই অঞ্চলে আলোচনা হচ্ছে যে, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বা মুসলিমরা আদিবাসীদের জমি হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এসে আপনি দেখতে পাবেন এর (বিজেপির দাবির) কোনোরকম প্রভাব নেই।’’
এই প্রসঙ্গে তার স্বামী মুহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘‘আমাদের এখানে নির্বাচনের সময় বিজেপি বারবার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিষয়টা উত্থাপন করেছে। কিন্তু তারা এখানে বাংলাদেশি খুঁজে পাবে না।’’
নিজের পরিবারের বিষয়েও জানিয়েছেন। মুহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘‘আমরা সত্যিই ভারতীয়। ১৯২৭ সালেরও আগে থেকে আমরা এখানে আছি। ব্রিটিশরা যখন জরিপ করেছিল, সেই সময় থেকে আমরা এখানে আছি।’’
‘‘তারপরও আমাদের নাম বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তালিকাতে যুক্ত করা হচ্ছে। নির্বাচনে বিজেপির কাছে আর কোনও ইস্যু নেই।’’
• কী নিয়ে ইস্যু?
ঝাড়খণ্ডে নির্বাচনে আগামী ১৩ ও ২০ নভেম্বর দুই দফায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সারিনা হাঁসদা এবং ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনার কয়েকজন পঞ্চায়েত প্রধানর নাম এখন নির্বাচনী ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এর কারণ, তারা সাঁওতাল আদিবাসী এবং তাদের স্বামী মুসলমান।
ঝাড়খণ্ডের এই অঞ্চলকে কেন্দ্র করেই ‘‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ’’ ইস্যু ক্রমাগত উত্থাপন করে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। গত ২০ সেপ্টেম্বর ঝাড়খণ্ডে এক নির্বাচনী জনসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বলতে শোনা যায়, ‘‘একবার ঝাড়খণ্ডের সরকার বদলে দিন। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, ঝাড়খণ্ড থেকে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে খুঁজে বের করে তাড়ানোর কাজ ভারতীয় জনতা পার্টি করবে। তারা (অনুপ্রবেশকারীরা) আমাদের সভ্যতাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমাদের সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মেয়েদের সঙ্গে নকল বিয়ে করা হচ্ছে। তারা আমাদের কর্মসংস্থানও লুট করছে। ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশকারীদের কোনও জায়গা নেই এবং একমাত্র বিজেপি সরকারই এটা (অনুপ্রবেশকারীদের সরাতে) পারে।’’
তার এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘‘প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের বিষয়ে দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তিদের এই জাতীয় মন্তব্য পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও বোঝাপড়াকে ক্ষুণ্ন করে।’’
কিন্তু গত ৩ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডে প্রচারের সময় আরও একবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের সরকারকে আক্রমণ করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘এই সরকার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ঝাড়খণ্ডের দরজা খুলে দিয়েছে। আমাদের সরকার রাজ্যে (ক্ষমতায়) এলে বেছে বেছে এই অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াবে।’’
এর জবাবে হেমন্ত সরেনও তাকে পাল্টা আক্রমণ করেছিলেন। ঝাড়খণ্ডের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি জানতে চাই বাংলাদেশের সঙ্গে আপনার কোনও অভ্যন্তরীণ চুক্তি আছে কি না। কিসের ভিত্তিতে আপনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছেন?’’
• কেন গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চল?
ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতার চাবিকাঠি সাঁওতাল পরগনার ছয়টা জেলার ভোটারদের রয়েছে বলেই অনুমান করা হয়। শুধু তাই নয়, এই অঞ্চল থেকে যিনি ভোটের নিরিখে এগিয়ে থাকেন, রাজ্যে তার সরকার গঠনের সম্ভাবনাও প্রবল হয়ে ওঠে।
এই অঞ্চল থেকেই ঝাড়খণ্ড দুই মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছে; শিবু সরেন ও হেমন্ত সরেন। ঝাড়খণ্ডে আসন্ন নির্বাচনে হেমন্ত সরেনের দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার কাছে এই অঞ্চল ‘‘প্রেস্টিজের প্রশ্ন’’ বলেই ধারণা করা হয়।
অন্যদিকে, আবার ক্ষমতায় আসার জন্য বিজেপির কাছে এই অঞ্চলটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ঠিক সেই কারণেই বিজেপি এই অঞ্চলে নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই আদিবাসী ঐতিহ্য রক্ষা, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের কারণে আদিবাসীদের ঝুঁকি রয়েছে বলে দাবি জানানো এবং এই অঞ্চলের জনবিন্যাসকে কেন্দ্র করে ইস্যু তৈরি করতে শুরু করেছে।
• কতটা কার্যকর এই দাবি?
সাহেবগঞ্জ জেলার কদমা গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ ইকরাম আনসারি বলেন, যদি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ হয়ে থাকে, তাহলে সেটা বন্ধ করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। আদাবাসীদের জমি হাতিয়ে নেওয়ার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে সে বিষয়েও নিজের মতামত জানিয়েছেন তিনি। তার কথায়, ‘‘এখানে কি এখনও পর্যন্ত কোনও বাংলাদেশি জমি দখল করেছে? একটা জরিপ করে খুঁজে বের করুন। কিন্তু সেরকম যদি কিছু না-ই হয়ে থাকে তাহলে আপনি কী-ইবা খুঁজে পাবেন?’’
এই অঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসীদেরও একই মতামত। বরহেতের বাসিন্দা বিনয় হোপনা সরেন একজন আদবাসী। বিবিসির সঙ্গে কথোপকথনের সময় তিনি বলেন, ‘‘এটা বিজেপির নির্বাচনী ইস্যু। বাস্তবতার সঙ্গে এর কোনোরকম সম্পর্ক নেই। বলা হচ্ছে এখানে, আমাদের গ্রামে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ঘটেছে। কয়েক প্রজন্ম ধরে এই গ্রামেরই বাসিন্দা আমরা।’’
‘‘এখানে আমাদের সঙ্গে যারা বসবাস করেন, তাদের কাছে ১৯৩২ সালের জমির নথি রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে তাদের সঙ্গে আমরা বসবাস করছি। এখন যদি তাদের বাংলাদেশি বলা হয়, তাহলে সেটা আমরা কী করে মেনে নেব?’’
নিকটবর্তী গোপালডিহ পঞ্চায়েতের মানিকচন্দ্র হেমব্রম বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমরা শুনেছি। কিন্তু আমাদের চারপাশে এমন কিছু দেখতে পাইনি। আমাদের গ্রামে আদিবাসী, মুসলমান এবং অন্যান্য সবাই মিলেমিশে বসবাস করে।’’
তবে এমনও মানুষ আছেন যাদের মতামত তাদের (যারা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নয় বলে জানিয়েছেন) থেকে ভিন্ন। গোপালডিহ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা খেদান শাহ পেশায় কৃষক। তিনি বলেন, ‘‘এখানকার বাসিন্দারা রেশন পান না। আমাদের নথিপত্র তৈরি হয় না। কিন্তু বাইরে থেকে আসা ব্যক্তিদের আধার কার্ড, রেশন কার্ড ইত্যাদি ঠিক তৈরি হয়ে যায়।’’
• আদালতে কেন্দ্র সরকার কী জানিয়েছে?
ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনী প্রচারের সময় ভারতীয় জনতা পার্টি যে বিষয় বারবার উত্থাপন করে চলেছে, সে সম্পর্কে আদালতে ভিন্ন বক্তব্য জানিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২২ সালে জামশেদপুরের বাসিন্দা দানিয়াল দানীশ ‘‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ’’ নিয়ে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সেই সময় এর জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে আদালতে জানানো হয়, ‘‘ঝাড়খণ্ড রাজ্য-সহ ভারতে বসবাসকারী এই ধরনের বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক তথ্য উপলব্ধ নেই।’’
এদিকে, বিজেপি নেতা তথা জাতীয় তফসিলি উপজাতি কমিশনের সদস্য আশা লাকরার নেতৃত্বাধীন কমিশন এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, প্রায় গত সাত দশকে ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনার জনসংখ্যার যে পরিবর্তন দেখা গেছে, তার জন্য দায়ী বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ।
প্রতিবেদনে সাহেবগঞ্জ জেলার ৯টি পঞ্চায়েতকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরে ‘‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকে’’ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকির কারণ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার আদালতকে জানিয়েছিল, ‘‘মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান ভূমি আইনের ফাঁক-ফোকরের অপব্যবহার করে দানপত্রের হলফনামার সাহায্যে আদিবাসীদের জমি আদিবাসী নন এমন ব্যক্তিদের নামে স্থানান্তরিত করার একাধিক মামলা প্রকাশ্যে এসেছে।’’
‘‘এমনই এক ঘটনায় আদিবাসী ও মুসলমানদের মধ্যে বিবাদ হয়েছিল (পাকুড়, ১৮ জুলাই, ২০২৪) সেই সময় একটি মুসলিম পরিবার দানপত্রের আড়ালে এক টুকরো জমি হাতিয়ে নেয়। তবে এই সমস্ত ভূমি সংক্রান্ত মামলার কোনোটিতেই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপিত হয়নি।’’
• জনসংখ্যা নিয়ে বিজেপি ও কেন্দ্রের দাবি
একদিকে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতারা দাবি করছেন, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের কারণে সাঁওতাল পরগনার জনবিন্যাস বদলে গেছে। অন্যদিকে, ১৯৫১ ও ২০১১ সালের জনবিন্যাসের তুলনা করে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, ‘‘১৯৫১ সালে সাঁওতাল পরগনায় তফসিলি উপজাতিভুক্ত জনসংখ্যার হার ছিল ৪৪.৬৭ শতাংশ, ২০১১ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৮.১১ শতাংশে।’’
‘‘তবে বহির্মুখী অভিবাসনের কারণে আদিবাসী জনসংখ্যা হ্রাস, খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত আদিবাসীদের মধ্যে শিশু জন্মের হার কম হওয়া এবং অন্যান্য কারণও মূল্যায়ন করা উচিত।’’
ঝাড়খণ্ডের এই সমস্ত অঞ্চলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা বাড়ছে এমন দাবির স্বপক্ষে কেন্দ্রীয় সরকার আদালতে কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না দিলেও বিজেপির শীর্ষ নেতারা কিন্তু এই ইস্যুতেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে।
• কেন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ইস্যু উত্থাপন করছে বিজেপি?
গত বিধানসভা নির্বাচনে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও কংগ্রেস মিলে সাঁওতাল পরগনায় ১৮টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসন জিতেছিল। আর বিজেপি পেয়েছিল মাত্র চারটি আসন। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজেপির মনে করে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ইস্যু ওই এলাকার আদিবাসীদের ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।
স্থানীয় সাংবাদিক এবং প্রায় দুই দশক ধরে ছাত্রজীবনে ভারতীয় জনতা পার্টির যুব শাখার রাজনীতিতে সক্রিয় সুনীল ঠাকুর জানিয়েছেন সাঁওতাল আদিবাসী ভোটারদের নিশানা করার জন্য এই ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে।
সুনীল ঠাকুর বলেছেন, ‘‘আসলে এখানে তিনটে ভোট ব্যাংক রয়েছে। একটি হলো হিন্দু ভোট; যা মূলত বিজেপির দিকেই যায়। অন্যটি মুসলিম ভোট; যেটা যায় ইন্ডিয়া জোটের ঝুলিতে। তৃতীয় হলো সাঁওতাল আদিবাসীদের ভোট।’’
‘‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গ তোলা হচ্ছে কারণ হিন্দু ভোট তো একজোট রয়েছেই। এর পাশাপাশি যাতে আদিবাসীদের ভোটও বিজেপি পায় সেটা নিশ্চিত করতে।’’
কিন্তু ঝাড়খণ্ডের অনেক স্থানীয় বিজেপি নেতাই এই প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছেন। হেমন্ত সরেনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বিজেপি প্রার্থী গমালিয়াল হেমব্রম বলেন, ‘‘আমার কাছে নির্বাচনে প্রধান ইস্যু রাস্তা, জল, বিদ্যুৎ এবং স্বাস্থ্য।’’
তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তারই দলের উত্থাপন করা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর ইস্যুকে কেন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন না তিনি। এর উত্তরে হেমব্রম বলেন, ‘‘যে কোনও দেশের নিরাপত্তাই অনুপ্রবেশকারীদের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। আমরা যে বিষয়টা উত্থাপন করেছি তার সংখ্যা সম্পর্কে আমি নিশ্চিত নই। এখানে আদিবাসী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও রয়েছে।’’
‘‘যতক্ষণ না এনআরসি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন) থেকে প্রয়োজনীয় নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা কাউকে দোষারোপ করতে পারি না।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় বিজেপি নেতা বলেন, একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে ভালো সম্পর্কের কারণে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছ থেকেও ভালো ভোট পাওয়ার আশা ছিল। কিন্তু এই ইস্যুর (বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী) কারণে তা হাতছাড়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঝাড়খণ্ডে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ইস্যু আসন্ন নির্বাচনী ময়দানকে উত্তপ্ত করলেও সেখানকার বাসিন্দাদের কাছে এখনও উদ্বেগের কারণ হলো কর্মসংস্থান, শিক্ষা এবং মৌলিক সুযোগ-সুবিধার মতো বিষয়গুলো। বিবিসি বাংলা।
এসএস