বাংলাদেশে সাগরের পানি বৃদ্ধির হার বিশ্বের অন্যতম দ্রুততম
২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরে পটুয়াখালির আব্দুল আজিজের বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। এরপর তিনি ওই বাড়ি থেকে আধা-কিলোমিটার দূরে নতুন করে বাড়ি তৈরি করেন। এখন তিনি তার আগের বাড়ির এলাকায় মাছ ধরেন।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আব্দুল আজিজ বলেছেন, ‘‘আমার বাড়ি যেখানে ছিল, এখন সেখানে মাছ ঘোরাফেরা করে।’’
সাগরের পানির উচ্চতা বাড়ায় অনেক জনপদ হারিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্বের সব জায়গায় সাগরের পানির উচ্চতা বাড়ার মাত্রা এক নয়। তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ উপকূলীয় এলাকা যে হারে হারিয়ে যাচ্ছে সেটা বিশ্বের অন্যতম দ্রুততম। এক প্রজন্মের মধ্যে অন্তত ১০ লাখ মানুষকে উপকূল থেকে সরে অন্যত্র চলে যেতে হবে বলে মনে করছেন তারা।
গত মাসে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব মন্তব্য করেন বিজ্ঞানীরা। প্রধান গবেষক একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর সাগরের পানির উচ্চতা ৩ দশমিক ৭ মিলিমিটার করে বাড়ছে। আর আমাদের গবেষণায় আমরা দেখেছি, আমাদের উপকূলে পানি বাড়ছে ৪ দশমিক ২ থেকে ৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার করে।
সাইফুল ইসলাম বুয়েটের অধ্যাপক এবং জাতিসংঘের ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) সদস্য।
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার বেশিরভাগই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এক বা দুই মিটার উঁচুতে অবস্থিত। সে কারণে ঝড়ের সময় সাগরের লবণ পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে কূপ ও পুকুরের পানি লবণাক্ত করে ফেলে। এতে করে উর্বর জমিরও ক্ষতি হয়।
সাগরের পানি বেশি বাড়লে আমাদের বাড়ি ও জমিতে ঢুকে পড়ে বলে জানান মরিচ, মিষ্টি আলু, সূর্যমুখী ও ধান চাষ করা কৃষক ৬৫ বছর বয়সী ইসমাইল হাওলাদার। এতে শুধু আমাদের ক্ষতিই হয়, বলেন তিনি।
৬৩ বছর বয়সী রেস্তোরাঁ মালিক শাহজালাল মিয়া বলেন, প্রত্যেক বছরই সাগর জমি খেয়ে ফেলছে। তিনি বলেন, অনেকে ইতিমধ্যে সাগরে ঘর হারিয়েছে।
এসএস