পেট্রোবাংলাকে বছরে ১৫ লাখ মেট্রিক টন করে এলএনজি দেবে সামিট

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারি কোম্পানি সামিট গ্রুপের সাথে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) দীর্ঘমেয়াদী একটি চুক্তি হয়েছে। ১৫ বছরের জন্য স্বাক্ষরিত এই চুক্তির আওতায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলাকে প্রতি বছর ১৫ লাখ মেট্রিক টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করবে সামিট গ্রুপ।
বিজ্ঞাপন
চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ২০২৬ সালের অক্টোবর থেকে সামিট গ্রুপ পেট্রোবাংলাকে এলএনজি সরবরাহ শুরু করবে। বুধবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই চুক্তির বিষয়ে জানিয়েছেন সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় থাকা সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান।
চুক্তিটি আগামী এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। চুক্তিতে এলএনজির উৎস হিসেবে কোনও দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এমনকি পেট্রোবাংলার কাছে সরবরাহের জন্য যেকোনও স্থান থেকে কার্গোর ব্যবস্থা করতে পারবে বলে সামিট গ্রুপকে বলে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তবে চুক্তি অনুযায়ী এলএনজির মূল্য কেমন হতে পারে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য রয়টার্সকে জানাননি আজিজ খান। এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য জানতে চেয়ে ই-মেইল করা হলেও পেট্রোবাংলাও কোনও সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
দেশের বৃহত্তম ব্যবসায়িক এই শিল্পগোষ্ঠী বর্তমানে এক ডজনেরও বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পরিচালনা করছে। এ ছাড়া সামিট গ্রুপ একটি ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটও (এফএসআরইউ) চালায়; যেখানে এলএনজি আমদানির কাজ পরিচালনা করা হয়। নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে সামিট।
আজিজ খান বলেছেন, কক্সবাজার জেলায় প্রস্তাবিত ১ বিলিয়ন ডলারের মাতারবাড়ি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ ২০২৫ সালে শুরু হতে পারে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। চুক্তিটি এখনও সম্পন্ন হয়নি। তবে এই চুক্তি পেলে ২০২৯ সালে মাতারবাড়িতে প্রথম ধাপের কার্যক্রম শুরু করার আশা করছে সামিট।
জাপানি অংশীদার সুমিটোমো করপোরেশনের সাথে যৌথভাবে এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে চায় সামিট। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আজিজ খান বলেছেন, মাতারবাড়ি এলএনজি টার্মিনালের নির্মাণ কাজ আগামী বছর শুরু করা উচিত। এই প্রকল্পের জন্য এখনও ভূমি অধিগ্রহণ চলছে।
‘‘সরকার মনে করে এই প্রকল্পের কমিশনিং কার্যক্রম ২০২৭ সালের মধ্যে করা উচিত। আর আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, কমিশনিংয়ের কাজ ২০২৯ সালের মধ্যে হবে।’’
বৈশ্বিক মূল্য হ্রাস আর বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে আগামী মাসগুলোতে স্পট এলএনজির ক্রয় বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন আজিজ খান। তিনি বলেন, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ১৩টি স্পট এলএনজি কার্গো ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক শিপিং ট্র্যাক ও জ্বালানি তেলের বাজার বিশ্লেষণকারী সংস্থা কেপলারের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ে ১০টি কার্গো আমদানি করেছিল বাংলাদেশ।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস