বিরোধী নেতাদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢালার প্রশ্নে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে সরকার বিরোধীদের আসন্ন মহাসমাবেশের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এছাড়া বিরোধী নেতাদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢালার বিষয়টিও আলোচিত হয়েছে। ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
একইসঙ্গে সহিংসতা, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন না করতেও আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। এছাড়া কূটনৈতিক প্রাঙ্গণ এবং কর্মীদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলেও জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ অক্টোবর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
এদিনের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ছাড়াও বিরোধী দলগুলোর মহাসমাবেশ ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ওই ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারের কাছে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর বিরোধীদের মহাসমাবেশের আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সরকার ওই মহাসমাবেশকে বাধা দেওয়ার জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার মধ্যে গ্রেপ্তার, অভিযোগ গঠন এবং রাতের বেলায় বিচার কার্যক্রম চালানোর মতো পদক্ষেপও রয়েছে। আগের দিন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছেন, এবং তার মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরাও নানা হুমকি-ধামকিসহ রুশ ইউরেনিয়াম – রাশিয়ান ইউরেনিয়াম – বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার কথা বলছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই অভিযোগকে কিভাবে দেখছে? এবং বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ সম্পর্কে আমার কিছু বলার আছে বলে আমি মনে করি না। তবে আমরা নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেটাতে সকলেই শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে। এর মধ্যে রয়েছে- সরকারি কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, মিডিয়া এবং অবশ্যই ভোটাররা। এবং আমরা সকল পক্ষকে (স্টেকহোল্ডার) আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভয় দেখানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
পৃথক প্রশ্নে ওই সাংবাদিক বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস শুধু তার নিরাপত্তার জন্যই নয়, দূতাবাসের কর্মীদের জন্যও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আপনি অনেকবার এই মঞ্চ থেকে ভিয়েনা কনভেনশন সমুন্নত রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?
আরও পড়ুন
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, আমি আবারও বলব– কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে কূটনৈতিক অঙ্গন এবং কর্মীদের সুরক্ষার বিষয়ে সকল ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা বাংলাদেশের রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা আশা করি বাংলাদেশে অবস্থিত সকল মার্কিন মিশন এবং কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
টিএম