মেক্সিকোতে দুর্গম গিরিখাতে মিলল ৪৫ ব্যাগ মানব দেহাবশেষ
উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে ৪৫ ব্যাগ মানব দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গুয়াদালাজারার বাইরে একটি দুর্গম গিরিখাত থেকে এসব ব্যাগ খুঁজে পাওয়ার পর পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করে।
সেখানে ঠিক কতজনের মৃতদেহের অংশ আছে তা এখনও জানা যায়নি। শুক্রবার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেক্সিকান কর্তৃপক্ষ পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গুয়াদালাজারার বাইরে একটি গিরিখাতে মানুষের দেহাবশেষ সম্বলিত ৪৫টি ব্যাগ খুঁজে পেয়েছে। মূলত গত সপ্তাহে নিখোঁজ হওয়া সাতজন তরুণ কল সেন্টার কর্মীকে খুঁজছিলেন কর্মকর্তারা। এসময় তারা এসব মৃতদেহ খুঁজে পান।
বিবিসি বলছে, উদ্ধারকৃত দেহাবশেষের মধ্যে পুরুষ ও নারী উভয়েরই মৃতদেহের অংশ রয়েছে। এছাড়া সেখানে মৃতদেহের সংখ্যা ঠিক কত তা এখনও জানা যায়নি। ওই এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় এবং আলো কম থাকার কারণে অনুসন্ধান কর্মকাণ্ড আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মেক্সিকোর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জলিসকোর রাষ্ট্রীয় প্রসিকিউটরের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নিখোঁজ সাত জনের সন্ধানের বিষয়ে একটি তথ্য পাওয়ার পর মেক্সিকান কর্মকর্তারা মিরাডোর দেল বস্ক গিরিখাতে অনুসন্ধান শুরু করে এবং একপর্যায়ে সেখানে তারা মানবদেহের অঙ্গসহ এসব ব্যাগ খুঁজে পায়।
অগ্নিনির্বাপক দল ও সিভিল ডিফেন্স পুলিশ এবং হেলিকপ্টার ক্রুদের একটি দল ঘটনাস্থলে দেহাবশেষ উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, উদ্ধারকৃত ব্যাগে মৃতদেহের সংখ্যা, তারা কারা এবং তাদের মৃত্যুর কারণ নির্ধারণে তারা কাজ চালিয়ে যাবেন।
এছাড়া নিখোঁজ হওয়া সাতজন তরুণ কল সেন্টার কর্মীর সন্ধান পেতে কর্মকর্তারা চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলেও জানানো হয়েছে।
বিবিসি বলছে, মৃতদেহগুলো কীভাবে এই গিরিখাতে পড়েছিল তা এখনও জানা না গেলেও মেক্সিকোতে গুমের মতো অপরাধ তুলনামূলকভাবে সাধারণ বিষয়। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মেক্সিকোতে ১ লাখেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
দেশটিতে ভুক্তভোগী এসব মানুষের অনেকেই অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধের শিকার। তবে মেক্সিকোতে অপরাধীদের খুব কমই শাস্তি দেওয়া হয়।
সরকারি তথ্য বলছে, ২০০৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফেলিপ ক্যালডেরন মেক্সিকোতে ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ শুরুর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে দেশটিতে অনেক মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজ এসব মানুষের তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ এবং এক-পঞ্চমাংশের বয়স ১৮ বছরের কম।
নিখোঁজদের স্বজনরা বলছেন, সরকার তাদের খুঁজে বের করার জন্য যথেষ্ট কাজ করছে না এবং তারা যখন তাদের প্রিয়জনকে নিখোঁজ বলে জানায় তখন কর্মকর্তারা তাতে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে উদাসীন থাকেন।
জাতিসংঘ এটিকে ‘বিশাল অনুপাতের মানবিক ট্র্যাজেডি’ বলে অভিহিত করেছে।
টিএম