বাংলাদেশের মতো কেউ এতটা করেনি: ভারত
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এলাকার নিরাপত্তা, ভৌগলিক অখণ্ডতা ও সমন্বয় রক্ষায় বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ‘ব্ল্যাক ক্যাট’ নামে পরিচিত দেশটির এলিট বাহিনী ন্যাশনাল সিকিউরিটি গাার্ডের (এনএসজি) সাবেক মহাপরিচালক জয়ন্ত নারায়ণ চৌধুরি।
এজন্য বাংলাদেশকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও জ্ঞাপন করেছেন ভারতের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যিনি এক সময় ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম রাজ্য পুলিশেরও প্রধান ছিলেন।
বুধবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘ক্যালকাটা অ্যাট আড্ডা’ নামের একটি সংগঠন। সেই সভায় অন্যতম আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জয়ন্ত নারায়ণ চৌধুরি।
নিজ বক্তব্যে এনএসজির সাবেক মহামপরিচালক বলেন, ‘গত কয়েক বছরে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা ও তার সঙ্গে সম্পর্কিত যাবতীয় সমস্যা এখন অনেকটাই মিটেছে এবং আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে; আর এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের সহযোগিতার কারণে। বিশেষ করে আমরা যখন থেকে যৌথভাবে দুই দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী আশ্রয়গুলোতে অভিযান চালাতে শুরু করলাম, তখন থেকে। বর্তমানে উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’
এমন এক সময়ে জয়ন্ত নারায়ণ চৌধুরি বাংলাদেশের প্রশংসা করলেন, যখন বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীন হয় ভারত; কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকেই দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচলে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা শুরু করে কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠী।
পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পাকিস্তান আমলে এই তৎপরতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। তৎকালীণ আইএসআই উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে নানাভাবে সহায়তা দিত।
তারপর ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর ১৯৭৫ পরবর্তী বছরগুলোতে ফের ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী বিভিন্ন গোষ্ঠীকে মদত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৎকালীন সামরিক ও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে।
তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর বন্ধ হয়ে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবদীদের মদত দেওয়ার ব্যাপারটি।
‘যখন কলকাতায় আমাকে ৫-৬ বছরের জন্য পোস্টিং দেওয়া হয়েছিল, সেসময় বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) আমাদের যেভাবে ইনফর্মালি সহযোগিতা করেছে…সত্যিই বাংলাদেশকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার কাছে নেই।’
‘নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু বলতে পারি, নিরাপত্তা বিষয়ক সব ইস্যুতে বাংলাদেশ ভারতের প্রকৃত এবং অসাধারণ এক বন্ধু। এই ইস্যুতে বাংলাদেশ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, আর কোনো দেশ এভাবে ভারতকে এভাবে সহায়তা করেনি।’
সূত্র: পিটিআই
এসএমডব্লিউ