ডায়াবেটিস রোগী ৮৪ লক্ষাধিক, ডাক্তার ১৫০ জন
দেশে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। তবে সেই হারে দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট (ডায়াবেটিস ও হরমোন বিশেষজ্ঞ) নেই।
বাংলাদেশে ৮৪ লাখের বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। যাদের চিকিৎসায় দেশে মাত্র ১৫০ জন অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট রয়েছেন। এ হিসাবে প্রতি ৫৬ হাজার রোগীর সেবায় চিকিৎসক সংখ্যা মাত্র একজন। আর মোট জনসংখ্যা হিসাবে প্রতি ১২ লাখ মানুষের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে আজ রোববার (১৪ নভেম্বর) সারা বিশ্বের মতো দেশেও নানা আয়োজনে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য- ‘ডায়াবেটিস সেবা নিতে আর দেরি নয়।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে যথা সময়ে চিকিৎসা না নিলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি জটিলতা, অন্ধত্ব, মাড়ির রোগ এবং অঙ্গহানির মতো শারীরিক জটিলতা হতে পারে। এসব কারণে মৃত্যুঝুঁকিও আছে। ফলে রোগটির চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইনসুলিনসহ সব ধরনের সেবা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু দেশে রোগটির মানসম্মত চিকিৎসায় পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তৃণমূলে রোগীরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে এখনই অন্তত জেলা হাসপাতালগুলোতে অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ খোলা ও চিকিৎসক বাড়াতে হবে।
আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য বলছে, বাংলাদেশে ৮৪ লাখের বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। যাদের প্রায় অর্ধেকই মহিলা। কিন্তু আক্রান্তদের অর্ধেকই জানেন না তাদের ডায়াবেটিস রয়েছে। এছাড়া দেশে শতকরা ২০ জন মহিলা গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। যাদের মধ্যে ৬৫ শতাংশই পরবর্তীতে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। গবেষণায় দেখা গেছে, এসব মায়েদের গর্ভের শিশুর আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি।
দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বিশিষ্টজনেরা। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, নগরায়নের কারণে জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। কায়িক পরিশ্রমের অভাবে দিন দিন ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে। এ অবস্থায় রোগটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সময়মতো চিকিৎসা নিতে হবে। সচেতনতা তৈরিতে চিকিৎসক, গণমাধ্যম, সামাজিক সংগঠন ও বেসরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ডায়াবেটিস সারাজীবনের রোগ। কিন্তু একে সুনিয়ন্ত্রিত রাখতে পারলে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব। কাজেই এর ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে। অন্যদেরকে অবহিত করতে হবে। সরকার জনগণের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে কাজ করছে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীও বিশেষ বাণী দিয়েছেন। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস) নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সমিতির অন্যান্য অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত অধিভুক্ত সমিতিগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে র্যালি বা পদযাত্রার পরিবর্তে রোড শো’র আয়োজন করা হয়েছে।
টিআই/এইচকে/ওএফ