৩১ কোটি বই এক মাসে ছাপার চাপ এনসিটিবি’র
গত এক যুগের বেশি সময় ধরে বছরের প্রথম দিন নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মাতোয়ারা হতো পাঁচ কোটির বেশি শিক্ষার্থী। এবার পহেলা জানুয়ারি প্রাথমিকের কিছু শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই উঠলেও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাবে না নতুন বই। স্বয়ং বই উৎসবে ছেদ দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)!
অভিযোগ উঠেছে, প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ ব্যক্তিদের অদক্ষতা, বিনা কারণে দরপত্র বাতিল, বইয়ের পাণ্ডুলিপি তৈরিতে দেরি হওয়া, পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে তদারকির কাজ দিতে কালক্ষেপণ এবং মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে গড়িমসি— এসব কারণে এবার পাঠ্যবই ছাপাতে দেরি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এনসিটিবি’র খামখেয়ালিপনার কারণে নতুন বছরে বই ছাড়াই শ্রেণিকক্ষে যেতে হবে সাড়ে তিন কোটির বেশি শিক্ষার্থীকে।
পাঠ্যবই মুদ্রণ এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, অন্যান্য বছর পাঠ্যবই মুদ্রণের প্রক্রিয়া শুরু হয় জুন-জুলাই মাস থেকে। এবারও যথাসময়ে শুরু হলেও গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপানোর সব দরপত্র কোনো কারণ ছাড়াই বাতিল করা হয়। নতুন করে দরপত্র আহ্বান করায় সরকারের ৭৮৩ কোটি টাকার বেশি অর্থ গচ্চা যাচ্ছে। মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি ছিল, দরপত্র ঠিক রেখে নতুন পাণ্ডুলিপিতে তা সমন্বয় করতে। কিন্তু এনসিটিবি’র পরামর্শে মন্ত্রণালয় আগের সব দরপত্র বাতিল করে। ফলে বই ছাপানোর প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায় তিন মাস।
আরও পড়ুন
টেন্ডার আহ্বান করে নোয়া (নোট অব অ্যাওয়ার্ড) পাওয়ার ২৮ দিনের মধ্যে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে কাজের চুক্তি করতে হয়। সেই হিসেবে তারা ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চুক্তি করতে পারবে। এরপর বই ছাপার জন্য নিয়মিত ৪০ দিন সময় অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই বই সরবরাহ করতে পারবে। আর জরিমানাসহ আরও ২৮ দিন ধরলে মার্চের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় পাওয়া যাবে। এ অবস্থায় মুদ্রণকারীদের দ্রুত চুক্তি করে ওয়ার্ক অর্ডার নেওয়ার জন্য এনসিটিবি চাপ দিচ্ছে। শুধু চাপই নয়, আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই ছাপিয়ে মাঠে সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছে
শুধু তা-ই নয়, বইয়ের পরিমার্জন এবং দরপত্র গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অযথা সময় নষ্ট, বইয়ের মান তদারকি প্রতিষ্ঠান নিয়োগে এক মাস বিলম্ব হওয়ায় মাধ্যমিকের বই ছাপার কাজ সময় মতো শুরু করা যায়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৭ ডিসেম্বর এটি শুরু হয়েছে। অযাচিত এমন দেরি হওয়ায় প্রায় তিন কোটি শিক্ষার্থী কোনো বই ছাড়াই নতুন বছরের শিক্ষাকার্যক্রমে যুক্ত হবে। অন্যদিকে, প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপার কাজ শেষ হয়েছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপার কাজ চলমান রয়েছে।
এনসিটিবির বেআইনি আবদার
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বছরের প্রথম দিন ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থীর হাতেও নতুন বই তুলে দিতে পারবে না সরকার। এনসিটিবি’র বিতরণ শাখার তথ্য অনুযায়ী, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বইয়ের দরপত্র চূড়ান্ত হয় নভেম্বর মাসে। নিজের পছন্দের তদারকি সংস্থা (ইন্সপেকশন এজেন্সি) নিয়োগ দিতে এক মাস সময় নষ্ট করে সংস্থাটি। সবকিছু ঠিক থাকার পরও ওই দুই শ্রেণির বই ছাপার কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শুরু করতে পারেনি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো। অন্যদিকে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির বইয়ের কাজের অনুমতিপত্র দেওয়া হয় যথাক্রমে ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর। ফলে আগে যে কাজটি তিন থেকে চার মাসে ধরে হতো, সেই কাজ এখন এক মাসের মধ্যে করতে বলছে এনসিটিবি।
আরও পড়ুন
দরপত্র চুক্তি অনুযায়ী, টেন্ডার আহ্বান করে নোয়া (নোট অব অ্যাওয়ার্ড) পাওয়ার ২৮ দিনের মধ্যে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে কাজের চুক্তি করতে হয়। সেই হিসেবে তারা ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চুক্তি করতে পারবে। এরপর বই ছাপার জন্য নিয়মিত ৪০ দিন সময় অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই বই সরবরাহ করতে পারবে। আর জরিমানাসহ আরও ২৮ দিন ধরলে মার্চের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় পাওয়া যাবে। এ অবস্থায় মুদ্রণকারীদের দ্রুত চুক্তি করে ওয়ার্ক অর্ডার নেওয়ার জন্য এনসিটিবি চাপ দিচ্ছে। শুধু চাপই নয়, আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই ছাপিয়ে মাঠে সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছে।
মুদ্রণ শিল্প সমিতির নেতারা বলছেন, এক মাসের মধ্যে মাধ্যমিকের ৩১ কোটি বই ছাপানোর সক্ষমতা তাদের নেই। কাজ পাওয়া মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো দিনে সর্বোচ্চ (২৪ ঘণ্টা মেশিন চললে) ৪০ লাখ বই ছাপাতে পারে। সেখানে নিয়মিত কাগজ পাওয়া, মেশিন ঠিক থাকা, শ্রমিক পাওয়া, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ থাকার বিষয়টি তো রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকার পরও শুধু মাধ্যমিকের বই ছাপাতে ৪২ থেকে ৪৫ দিন সময় লাগবে। অন্যদিকে, প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপানোর কাজও বাকি রয়েছে।
এনসিটিবি’র তথ্যমতে, আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য ৪০ কোটি বই ছাপাতে এক লাখ ১৫ হাজার টন কাগজ প্রয়োজন। এর মধ্যে প্রাথমিকে ২০ হাজার টন, বাকি কাগজ মাধ্যমিকের জন্য প্রয়োজন। বাজারে সেই কাগজের স্বল্পতা রয়েছে। এবার যে মানের কাগজ দিয়ে বই ছাপানোর শর্ত দিয়েছে তা মাত্র পাঁচ-ছয়টি পেপার মিলের কাছে রয়েছে। তারা দিনে সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৬০০ টন সরবরাহ করতে পারছে। মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলেও কাগজের স্বল্পতার কারণে কাঙ্ক্ষিত বই ছাপাতে পারবে না। তাদের দাবি, বাজারের অন্য সব পেপার মিলকে কাগজ সরবরাহের জন্য আদেশ দেওয়া। অন্যদিকে, বসুন্ধরা পেপার মিলসহ আরও দুটি পেপার মিল থেকে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো নিরাপত্তার কারণে কাগজ নিচ্ছে না। এসব ইস্যু সমাধান না করে এনসিটিবি জানুয়ারির মধ্যে সব বই ছাপানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। যা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘চাপ নয়, শিক্ষার্থীদের বইয়ের মতো জাতীয় ইস্যুতে সবার কমিটমেন্ট (দায়বদ্ধতা) থাকা উচিত। সেই জায়গা থেকে প্রিন্টার্সদের বলেছি, জানুয়ারির মধ্যে যেন সব বই দেওয়া হয়। এখানে চাপের কোনো বিষয় নেই।’
জানতে চাইলে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘এক মাসের মধ্যে ৩৩-৩৪ কোটি বই ছাপিয়ে দেওয়ার মতো সক্ষমতা শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর কারও নেই। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার গাফিলতি ও খামখেয়ালিপনার কারণে আজ এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আগস্ট মাসে যখন সরকার কারিকুলাম বাতিল করল তখনই বলেছি, বিজ্ঞান ও গণিতের মতো যে সব বইয়ের কম পরিমার্জন হবে সেগুলো আগে ছাপানো জন্য। সেটি তো তারা করেনি, উল্টো কাজ বিলম্ব করার জন্য যা যা দরকার সব করেছে এনসিটিবি। বছর শেষ হওয়ার ১০ দিন আগে নোয়া দিয়ে এখন বলছে, এক মাসের মধ্যে সব বই ছাপানোর। এটা কি মামা বাড়ির আবদার?
‘বাজারে কাগজের স্বল্পতা আছে, নোট-গাইড বই ছাপা পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। ফলে পর্যাপ্ত শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া সরকারের নানা এজেন্সির অহেতুক হস্তক্ষেপ আছে। ফলে আমরা বেশ বিপাকে আছি।’
বইয়ের মান রক্ষায় দরপত্রে ব্যবহৃত কাগজ কতটা মজবুত, তার নির্দেশনাকারী ‘বাস্টিং ফ্যাক্টর’ যুক্ত করে তাতে কড়াকড়ি আরোপ করে এনসিটিবি। তারা ১৬ বাস্টিং ফ্যাক্টরের কাগজ দিয়ে বই ছাপাতে বলে। কিন্তু এ মানের কাগজ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ মুদ্রণকারীদের। এ ধরনের কাগজ তৈরি করতে পারে সর্বোচ্চ পাঁচ-ছয়টি পেপার মিল। তারা দিনে সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৬০০ টন কাগজ সরবরাহ করতে পারছে। অথচ মাধ্যমিকের ৩১ কোটি বই ছাপাতে প্রয়োজন ৮৫ হাজার টন কাগজ। এভাবে কাগজ দিলে পুরো বই ছাপাতে সময় লাগবে চার মাসের বেশি
আরও পড়ুন
জানা যায়, এমন পরিস্থিতিতে মুদ্রণ শিল্প সমিতির এক নেতা শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে একটি চিঠি লেখেন। সেখানে তিনি জানুয়ারি মাসে কত সংখ্যক বই সরবরাহ করতে পারবেন এবং পাঠ্যবই মুদ্রণের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ মুদ্রণ সমিতির নেতাদের ওপর নতুন করে চাপ প্রয়োগ করেন। একপর্যায়ে সমিতির নেতাদের মুখ থেকে জোর করে ‘জানুয়ারি মাসের মধ্যে সব বই সরবরাহ করবেন’ বলে মুচলেকা নেন। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে জানতে মুদ্রণ শিল্প সমিতির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তাদের কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি। তাদের ভাষ্য, ‘ওই দিন যা ঘটেছে তা এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।’
বাস্টিং ফ্যাক্টর নিয়ে মুখোমুখি এনসিটিবি-প্রিন্টার্সরা
গত কয়েক বছর ধরে খারাপ মানের বই সরবরাহ করায় সর্বত্র সমালোচনা ঝড় ওঠে। সেই বিতর্ক এড়াতে এবার শুরু থেকেই সতর্ক ছিল এনসিটিবি। বইয়ের মান রক্ষায় দরপত্রে ব্যবহৃত কাগজ কতটা মজবুত, তার নির্দেশনাকারী ‘বাস্টিং ফ্যাক্টর’ যুক্ত করে তাতে কড়াকড়ি আরোপ করে। এনসিটিবি ১৬ বাস্টিং ফ্যাক্টরের কাগজ দিয়ে বই ছাপাতে বলে। কিন্তু এ মানের কাগজ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ মুদ্রণকারীদের। এ ধরনের কাগজ তৈরি করতে পারে সর্বোচ্চ পাঁচ-ছয়টি পেপার মিল। তারা দিনে সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৬০০ টন কাগজ সরবরাহ করতে পারছে। অথচ মাধ্যমিকের ৩১ কোটি বই ছাপাতে প্রয়োজন ৮৫ হাজার টন কাগজ। এভাবে কাগজ দিলে পুরো বই ছাপাতে সময় লাগবে চার মাসের বেশি।
আরও পড়ুন
মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ১৬ ‘বাস্টিং ফ্যাক্টর’ অর্থাৎ ৮০ জিএসএম (পুরুত্ব) ও ৮৫ শতাংশ উজ্জ্বলতার কাগজ উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশের অধিকাংশ পেপার মিলের নেই। তারা ১৪ মানের কাগজ উৎপাদন করে। ফলে দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে এনসিটিবি’র নির্ধারণ করে দেওয়া কাগজ।
এখানে মুদ্রণকারীদের দাবি ছিল, ১৪ বাস্টিং ফ্যাক্টরের কাগজ দিতে পারে এমন ৬০টির বেশি পেপার মিল রয়েছে দেশে। এনসিটিবি শর্ত কিছুটা শিথিল করলে কাগজের সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব তদারকি টিম রয়েছে। এ ছাড়া সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য বলছে, বাজারে কাগজের কোনো স্বল্পতা নেই। ৮৫ শতাংশ উজ্জ্বলতার কাগজের কিছু স্বল্পতা ছিল কিন্তু শিক্ষা উপদেষ্টা সেই সমস্যার সমাধান করেছেন।’
তবে মুদ্রণ শিল্প সমিতির নেতারা বলছেন, আগে কাগজের বড় চালান আসত বসুন্ধরা পেপার মিলস থেকে। ৫ আগস্টের পর বসুন্ধরাসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে কাগজ কিনতে গিয়ে নানা জটিলতার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে অগ্রিম টাকা পরিশোধের সিকিউরিটি ইস্যু। ফলে অন্য মিলগুলো কাগজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশে বই ছাপানোর মেশিনগুলো ১৯৬০-৭০ দশকের। আধুনিক যে সব ওয়েব মেশিন রয়েছে সেগুলোও রিকন্ডিশন্ড। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি একটি নতুন মেশিনের দাম ৬০-৭০ কোটি টাকা। রিকন্ডিশন সেই মেশিন কেনা যায় দুই থেকে তিন কোটি টাকায়। ফলে ভালো মানের কাগজ দিলেও কিছু বইয়ের ব্রাইটনেস (উজ্জ্বলতা) এদিক-সেদিক হয়ে যায়। এনসিটিবি এটি ধরে জরিমানা করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপার কাজ প্রায় শেষ। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বই ছাপা হয়েছে। তবে, ষষ্ঠ থেকে নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপা শুরুর প্রক্রিয়াগুলো এখনও সম্পন্ন হয়নি। বেশকিছু বইয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়াও বাকি আছে। এ ছাড়া কাজ শেষ করে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমাও জানাতে পারেনি এনসিটিবি। বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে ধূম্রজাল। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সহজ কাজটি জটিল করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সব অংশীজন কাজ করলে ধোঁয়াশার মধ্যে পড়তে হতো না কাউকে।
এনএম/