সর্দি-জ্বরেই মারা যাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম?
দেশে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার। গত তিন বছরে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়েছে ৩১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ফলে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স।
এদিকে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রকৃতিতে পাওয়া বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া এখন ৬০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এমনকি শেষ ধাপের জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে পরিচিত সেফালোস্পোরিন, বিটা-ল্যাক্টাম, কার্ব্যাপেনেম, কলিস্টিন ও অ্যামিনোগ্লাইকোসাইডসহ বেশকিছু ওষুধের বিরুদ্ধে কিছু ব্যাকটেরিয়া ৯০ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, পূর্ববর্তী প্রজন্ম (দাদা-দাদি) যেভাবে সাধারণ রোগে ভুগে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন, একইভাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও (নাতি-নাতনি) সাধারণ হাঁচি-কাশি-জ্বরে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়তে পারে। এ অবস্থায় বর্তমান প্রজন্মের কাছে প্রশ্ন, চূড়ান্ত ধাপে সব অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স করে নাতি-নাতনিদের কি আমরা ভয়াবহ ঝুঁকিতে ফেলে যাব?
আরও পড়ুন
প্রকৃতিতে পাওয়া বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া এখন ৬০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এমনকি শেষ ধাপের জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে পরিচিত সেফালোস্পোরিন, বিটা-ল্যাক্টাম, কার্ব্যাপেনেম, কলিস্টিন ও অ্যামিনোগ্লাইকোসাইডসহ বেশকিছু ওষুধের বিরুদ্ধে কিছু ব্যাকটেরিয়া ৯০ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মো. মনিরুল ইসলাম (৬০)। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে প্রতিষ্ঠানসংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকেন তিনি। সম্প্রতি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রায় এক মাস ধরে চিকিৎসা নিয়ে চাকরির টানে কোনোরকম সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন মনিরুল ইসলাম। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণ ইউরিন ইনফেকশন (প্রস্রাবের সংক্রমণ) সমস্যা নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে তিনি ‘মাল্টিপল অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ অর্থাৎ তার শরীরে বাসাবাঁধা জীবাণু ধ্বংস করতে বেশ কয়েক ধরনের ওষুধ এখন আর কাজে আসছে না।
এমন অবস্থায় চিকিৎসকরা তাকে কিছু ওষুধ দিয়ে পুনরায় পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। দ্বিতীয় পরীক্ষাতেও দেখা যায়, মনিরুল ইসলামের শরীরের জীবাণু ধ্বংস করতে ওষুধের যে শক্তি কাজ করার কথা ছিল, সেটি তেমন কাজ করেনি। তৃতীয় ধাপেও নতুন কিছু ওষুধ এবং কোর্স শেষে আবারও পরীক্ষা করা হয়। সর্বশেষ ১৮টি অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে ইউরিন কালচার টেস্ট করা হলে এর মধ্যে ১৪টিই রেজিস্ট্যান্ট (প্রতিহতকারী) আসে। এমনকি যেগুলো রেজিস্ট্যান্ট নয়, সেগুলোর মধ্যেও দুটি ওষুধ ঠিক মতো কাজ করছে না বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্টের (অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী) এমন চিত্র শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আর মো. মনিরুল ইসলামের ক্ষেত্রেই নয়। রাজধানীর প্রতিটি হাসপাতালে খোঁজ নিলে এমন ঘটনা এখন ‘অহরহ’ ঘটছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এমনকি অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স শুধু রাজধানী শহর নয়, দেশের গ্রামাঞ্চলগুলোতেও নতুন আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে।
২০১৪ সালে প্রতি এক হাজার জনে দৈনিক ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ২০১৬ সালে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ১১ শতাংশে। তবে, ২০১৭ সালে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার কমে আসে ২১ দশমিক ২৬ শতাংশে। ২০১৮ সালে ২০ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১৯ সালে ২৪ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ২৫ দশমিক ৩৪ শতাংশে এসে পৌঁছায়। তবে, ২০২১ সালে প্রতি হাজারে দৈনিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার এসে দাঁড়ায় ৫২ শতাংশে
তিন বছরে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়েছে ৩২ শতাংশ
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৪ সালে প্রতি এক হাজার জনে দৈনিক ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ২০১৬ সালে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ১১ শতাংশে। তবে, ২০১৭ সালে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার কমে আসে ২১ দশমিক ২৬ শতাংশে। ২০১৮ সালে ২০ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১৯ সালে ২৪ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ২৫ দশমিক ৩৪ শতাংশে এসে পৌঁছায়। তবে, ২০২১ সালে প্রতি হাজারে দৈনিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার এসে দাঁড়ায় ৫২ শতাংশে।
দেড় বছর ধরে (জানুয়ারি ২০২২ থেকে জুন ২০২৩) রাজধানী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা ৭২ হাজার ৬৭০টি নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, দেশের প্রধান সংক্রমিত জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের প্রায় ৯০ শতাংশ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর প্রথম ও প্রধান কারণ অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার।
আরও পড়ুন
গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে অন্তত ৭৫ শতাংশ মানুষের ইনফেকশন হয় টাইফয়েড, ই-কোলাই, স্ট্যাফাউরিয়াস, ক্লিবশিয়েলা, সিউডোমোনাস ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে। এ ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাকসেস ও ওয়াচ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক অকেজো হয়ে গেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। এ ছাড়া আইসিইউ রোগীদের যে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হতো, তা এখন ওয়ার্ডের রোগীদেরও দিতে হচ্ছে। এতেই বোঝা যায় পরিস্থিতি কত খারাপের দিকে যাচ্ছে। একইসঙ্গে যেসব জীবাণু আগে শুধু আইসিইউতে মিলত, তা এখন কমিউনিটিতেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।
দেড় বছর ধরে (জানুয়ারি ২০২২ থেকে জুন ২০২৩) রাজধানী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আসা ৭২ হাজার ৬৭০টি নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, দেশের প্রধান সংক্রমিত জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের প্রায় ৯০ শতাংশ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর প্রথম ও প্রধান কারণ অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার
অহরহ ব্যবহার হচ্ছে রিজার্ভ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক
গবেষণা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. ফজলে রাব্বী চৌধুরী বলেন, কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আছে যেগুলো একেবারে শেষ ধাপ হিসেবে রিজার্ভ (সংরক্ষণ) করে রাখা হয়েছে। সেগুলোর বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা হলো, একান্ত বিপদে না পড়লে এ রিজার্ভ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিকগুলো একেবারেই হাত দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখছি যে, অহরহ এসব রিজার্ভ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হচ্ছে। যেগুলো সাধারণত সর্বোচ্চ মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউতে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হওয়া উচিত, সেগুলো এখন হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডেই আমরা ব্যবহার করছি।
আরও পড়ুন
‘আমরা আমাদের সংরক্ষণে থাকা (রিজার্ভ) অ্যান্টিবায়োটিকগুলো এখনই ব্যবহার করে ফেলছি, এরপর কিন্তু আমাদের আর যাওয়ার কোনো জায়গা থাকবে না। সেই সময়ে কিন্তু আমাদের অনেক বড় বিপদে পড়তে হবে। তখন দেখা যাবে অ্যান্টিবায়োটিক সাধারণ সর্দি-জ্বরের ক্ষেত্রেও কাজ করবে না। সামান্য অসুখে আমাদের প্রাণ হারাতে হবে।’
দুই-তৃতীয়াংশের বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয় মানবদেহে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি জনপ্রতি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহার হয় মঙ্গোলিয়ায়। সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জনপ্রতি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে আমরা বিশ্বের মাঝামাঝি অবস্থানে আছি। কিন্তু আমার মনে হয় বাস্তবচিত্র এটি নয়। কারণ হলো, পৃথিবীতে যত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয় তার এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহার হয় মানুষের মাঝে, দুই-তৃতীয়াংশ ব্যবহার হয় অন্যান্য খাতে। কিন্তু বাংলাদেশে দুই-তৃতীয়াংশ বা তার চেয়েও বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয় মানুষের মাঝে, আর অন্যান্য খাতে তুলনামূলক কিছুটা কম।
‘বাংলাদেশে মানবদেহে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের সংখ্যাটা যদি আমরা মূল্যায়ন করি, এটি সত্যিকার অর্থে পৃথিবীতে আমাদের অবস্থান চিহ্নিত করে না। তবে, বর্তমানে অন্যান্য প্রাণীতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার মানুষের কাছাকাছি চলে এসেছে। ফলে দেখা যাচ্ছে যে, মানুষের শরীরে যেভাবে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে উঠেছে, অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও ৫০ শতাংশের বেশি রেজিস্ট্যান্স হয়ে উঠেছে। আমরা বিভিন্ন প্রাণী; বিশেষ করে মুরগি, ছাগল, গরু থেকে স্যাম্পল নিয়ে দেখেছি যে, মোটামুটি সবধরনের প্রাণীতেই কমন কিছু অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে গেছে।’
সায়েদুর রহমান বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিক হলো সব প্রাণীর জন্য একটি সাধারণ সম্পদ। কিন্তু এটি আমরা গণহারে ব্যবহারের কারণে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কী রাখছি? আমরা কি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছি না? আমাদের দাদা-দাদিদের সময় অ্যান্টিবায়োটিক ছিল না। ফলে তারা সামান্য রোগেই মারা যেতেন। ভবিষ্যতে নাতি-নাতনিদের সময়ে বাক্সভর্তি অ্যান্টিবায়োটিক থাকবে, কিন্তু সেগুলোর কোনোটি কাজে আসবে না। মাঝখানে আমরা ৭০ বছর পর্যন্ত অনায়াসে বেঁচে গেলাম। বড় ধরনের সার্জারি করেও অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে গেলাম।’
আরও পড়ুন
মুরগি থেকে মানবদেহে যেভাবে ছড়ায় অ্যান্টিবায়োটিক
বর্তমানে দেশে আনুমানিক ৩০ কোটি মুরগি পালন হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুরগির ওপর যদি অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়, তাহলে অ্যান্টিবায়োটিকপ্রাপ্ত মুরগির সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ কোটিতে। অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, এই মুরগিগুলো যখন মানুষ কিনে খায়, স্বাভাবিকভাবেই অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের দেহে প্রবেশ করে। আশঙ্কাজনক বিষয় হলো, শিশুরাও সমান হারে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের শিকার হচ্ছে।
‘যখন আপনি মুরগির ওপর অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করবেন, তখন তা মুরগির বিষ্ঠার সঙ্গে মাটিতে মিশে যাবে। মাটিতে কিছু ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে তার দেখা হবে, তখন কিছু ব্যাকটেরিয়া সেই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ করা শিখে ফেলবে। পাশাপাশি ওইসব ব্যাকটেরিয়া অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মিশে সেগুলোকেও প্রতিরোধী করে তুলবে। এরপর একটা সময় ব্যাকটেরিয়াগুলো কোনোভাবে মানুষকে আক্রমণ করবে, যা ইতোমধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে উঠেছে। এখন আপনি চাইলেই তো খামারিদের অ্যান্টিবায়োটিক থেকে দূরে রাখতে পারবেন না।’
আরও পড়ুন
সায়েদুর রহমান আরও বলেন, কোনো খামারির একটি মুরগিও যদি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে অসুস্থ হয়, তাহলে তিনি অন্যগুলোকে বাঁচাতে সব মুরগির ওপরই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করবেন, এটিই স্বাভাবিক। সুতরাং আমাদের নীতিকথা শুনে তাদের কোনো লাভ হবে না।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বিক্রি করলে জরিমানা
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক খুবই খারাপ জিনিস। মারাত্মক সমস্যা এবং চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এটি কোনোভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। সাধারণ মানুষ যাতে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেখলেই চিনতে পারেন, সেজন্য ওষুধের পাতায় লাল রং ব্যবহার করার নিয়ম করা হয়েছে। প্রায় ৭০ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের পাতায় লাল রং ব্যবহার হয়ে থাকে এখন। এ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে, মানুষের মাঝে এ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি বেশি বেশি প্রয়োজন।
‘শিক্ষা কারিকুলামে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বিষয়ক পাঠ যুক্ত করার জন্য আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠাব। যদি আমরা কারিকুলামে পরিবর্তন আনতে পারি, তাহলে এ বিষয়ে সফলতা আসবে। আমরা যদি এখানে বিনিয়োগ করি তাহলে ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই সুফল পাব।’
টিআই/এমএআর/