দেড় মাসেও শনাক্ত হননি জড়িতরা, মামলা যাচ্ছে সিআইডিতে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুদিন আগে ৫ জানুয়ারি রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও নাশকতার ওই ঘটনায় সরাসরি জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কোনো বাহিনী। বিভিন্ন সময় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার বেশ কয়েকজন বিএনপির নেতাকর্মীসহ দুই ডজন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু মেলেনি সরাসরি কারও সংশ্লিষ্টতার তথ্য।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ৪২ দিন ধরে আলোচিত ওই ঘটনার তদন্ত চালায় ঢাকা রেলওয়ে থানা পুলিশ। এখন এর তদন্তভার যাচ্ছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)।
যদিও রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই দিন রাতেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ। পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘গ্রেপ্তাররা সরাসরি বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত।’
গত ৬ জানুয়ারি ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ সংবাদ সম্মেলন ডেকে বলেন, ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির হাইপ্রোফাইল ১০/১১ জন নেতা ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক (নাম জানা যায়নি) ও কাজী মনসুর। সেখানে তারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছুর পরিকল্পনা করেন
গত ৬ জানুয়ারি ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ সংবাদ সম্মেলন ডেকে বলেন, ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির হাইপ্রোফাইল ১০/১১ জন নেতা ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক (নাম জানা যায়নি) ও কাজী মনসুর। সেখানে তারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছুর পরিকল্পনা করেন।’
আরও পড়ুন
‘তারা ভিডিও কনফারেন্সে এসে বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে বিশেষ করে নরসিংদীর কাছে সুবিধাজনক স্থানে অগ্নিসংযোগ করার কথা বলেন। আরেকটি স্থানও তারা নির্ধারণ করেন। কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ লাইনের আপ-ডাউনে সুবিধাজনক স্থানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরিকল্পনা করেন’— এমন দাবি করেন ডিবিপ্রধান।
তবে মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দেওয়া আগুনেই সেদিন সকালে পুড়েছিল বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটির চারটি বগি। পুড়ে মৃত্যু হয়েছিল চার যাত্রীর। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করে ঘটনার ৪০ দিন পর পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে নিহত চারজনের মরদেহ। কিন্তু নাশকতাকারীদের সুনির্দিষ্ট করে শনাক্ত করা যায়নি।
নিহতদের স্বজনরা বলছেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে নির্মম নাশকতায় চারটি তাজা প্রাণ ঝরে গেলেও জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে না পারা প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা। ওই ঘটনার দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত সম্পন্ন এবং জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানান স্বজনরা।
নিহতদের স্বজনরা বলছেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে নির্মম নাশকতায় চারটি তাজা প্রাণ ঝরে গেলেও জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে না পারা প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা। ওই ঘটনার দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত সম্পন্ন এবং জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানান স্বজনরা
গত ৫ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগে। পরে আটটি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১০টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। দুর্বৃত্তদের দেওয়া এ আগুনে চারজন নিহত হন। ঘটনার পরদিন ওই ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) এস এম নুরুল ইসলাম (৫৭) বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ঢাকা রেলওয়ে থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও দণ্ডবিধি ৩০২ ধারায় দায়ের করা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে থানা পুলিশ।
মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা রেলওয়ে পুলিশের এসপি আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘মামলার তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। আমরা এখন পর্যন্ত চাঞ্চল্যকর ওই নাশকতার ঘটনায় কাউকে শনাক্ত করতে পারিনি। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। শত শত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তবে, স্পষ্টত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি।’
‘নিহত চারজনের মরদেহ ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্তের পর স্ব-স্ব পরিবারের কাছে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার তদন্তভারও আমাদের কাছে থাকছে না। মামলা চলে যাচ্ছে সিআইডিতে। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে আজ-কালের মধ্যে মামলার নথি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হবে।’
নৃশংস ওই ঘটনার পর ডিবি পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কারও বিরুদ্ধে বেনাপোল এক্সপ্রেসে নাশকতার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের কারও সংশ্লিষ্টতা বা স্বীকারোক্তি মেলেনি।’
জানতে চাইলে ঢাকা রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘কে বা কারা ওই রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে নাশকতা চালিয়েছিল, তাদের শনাক্ত করা যায়নি। মামলার বর্তমান অগ্রগতি সম্পর্কে কিছু বলব না।’ ডিবি পুলিশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবী ও মনসুর আলমকে আদালতের মাধ্যমে এ মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখায়। তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া গিয়েছিল কি না— জানতে চাইলে ‘তদন্তের স্বার্থে কিছু প্রকাশ করা যাচ্ছে না’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) সঞ্জিব কুমার রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘না, এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করতে পেরেছি বলে আমার নলেজে নেই। অনেক সিসিটিভি ফুটেজ আমরা বিশ্লেষণ করেছি, মেলেনি।’
আরও পড়ুন
ঘটনার পরদিন রাতেই গ্রেপ্তার ছয়জনের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবী ও যুবদল নেতা কাজী মনসুরকে রেলওয়ে পুলিশ পরে ওই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়েছিল। ডিবি পুলিশ দাবি করেছিল, ওই ঘটনায় বিএনপি জড়িত। কিন্তু রেলওয়ে পুলিশ গ্রেপ্তার হওয়া কারও সংশ্লিষ্টতা পায়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তখনকার ডিবির তদন্ত কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। আমার জানা নেই। জেনে বলতে পারব।’
র্যাবের পক্ষ থেকেও বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। তবে, তাদের কেউ বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে নাশকতার ঘটনায় জড়িত হিসেবে তথ্য পায়নি র্যাব। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গত শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘পেট্রল বোমা ও রেলে নাশকতার চেষ্টায় আমরা বেশ কয়েকজনকে আটক করেছিলাম। যারা বিভিন্ন নাশকতার চেষ্টায় জড়িত এবং পেট্রল বোমা তৈরি করে সরবরাহ করত। তবে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে নাশকতার সংশ্লিষ্টতা পাইনি। এটা বিজ্ঞ তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলতে পারবেন।’
নির্দোষ তালহার বাবা বিচার চাইতেও ভুলে গেছেন
বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যাওয়া চারজনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নিহতদের পরিচয় শনাক্তের পরই মরদেহগুলো স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে একজন রাজবাড়ীর যুবক আবু তালহা (২৪)।
সেই সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, ট্রেনে থাকা স্ত্রী-সন্তান আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়ায় তিনি আর ট্রেন থেকে নামতে চাননি। জ্বলন্ত ট্রেনের জানালায় দগ্ধ অবস্থায় তাকে হাত নাড়তে দেখা যায়। তিনি অন্য কেউ ছিলেন না, তালহা-ই ছিলেন বলে নিশ্চিত হয়েছে ঢাকা রেলওয়ে পুলিশ।
নিহত তালহার বাবা আবদুল হক মণ্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, তালহা সৈয়দপুর আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত ছিল। অবিবাহিত তালহার স্ত্রী-সন্তান থাকার তথ্য সঠিক নয়।
তালহাকে দুই চাচাসহ বাবা ফরিদপুর থেকে স্টেশনে তুলে দিয়ে এসেছিলেন— উল্লেখ করে মুঠোফোনে বাবা আবদুল হক বলেন, ‘আমাদের বাড়ি রাজবাড়ীতে। ঢাকা হয়ে সৈয়দপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেতে ফরিদপুর স্টেশন থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রা করেছিল তালহা। ঢাকায় নেমে সেখান থেকে তার সৈয়দপুরের ট্রেনে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাইনি আমরা।’
‘ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে ছেলেকে খুঁজে নিতে হয়েছে। একজন বাবার এর চেয়ে আর কী কষ্ট থাকতে পারে? ছেলেকে দাফন করেছি।' বিচারের আশা সম্পর্কে কোনো কথা বলতে পারেননি আবদুল হক। মুঠোফোনে শুধু শোনা গেছে আর্তনাদ। কিছুক্ষণ সময় নিয়ে বললেন, ‘রাজনীতি না করা আমার তালহার কী দোষ ছিল?’
তালহার মতো অপর তিনজনের মরদেহও বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় তাদের স্বজনদের কাছে। তারা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল গ্রামের সাইদুর রহমান বাবুর মেয়ে এলিনা ইয়াসমিন (৪০), একই উপজেলার খানগঞ্জ বেলগাছির চিত্তরঞ্জন প্রামাণিকের মেয়ে চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমি (২৪) এবং ঢাকার গেণ্ডারিয়ার বাসিন্দা নাতাশা জেসমিন নেকি।
বিচারের সঙ্গে ক্ষতিপূরণও চান জেসমিনের পরিবার
ঢাকার গেণ্ডারিয়ার নাতাশা জেসমিন নেকির ভাই খুরশিদ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘জেসমিন ঢাকায় একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে শিক্ষকতা করত। ট্রেনের আগুনে তার স্বামী আসিফ মোহাম্মদ খানও দগ্ধ হয়। দীর্ঘ সময় বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিল। আসিফ একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করত। বিয়ের মাত্র ১১ মাসেই তাদের বিচ্ছেদ, আমার বোনটার নির্মম মৃত্যুতে।’
‘পুলিশ বলেছিল, বিএনপি এ কাজ করেছে। এখন শুনছি, জড়িত কেউ শনাক্ত হয়নি। আমরা আসলে বিচার চাই। সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে দোষী বা জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। পাশাপাশি পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ চাই।’
বিচার চাইতেও দ্বিধায় এলিনার পরিবার
নিহত এলিনা ইয়াসমিনের খালাতো ভাই রিয়াসাত সামিত ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আপুর স্বামী কাজী পলাশ, বায়িং হাউজে চাকরি করেন। আপুর একটা বাচ্চা আছে। এমন একটা পরিস্থিতি যে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আপুকে ডিএনএ টেস্টে শনাক্তের পর দাফন হয়েছে রাজবাড়ীতে। বাচ্চাটা অসুস্থ, ভাই তো পাগলপ্রায়। এমন অবস্থার মধ্যে বিচারের দাবি নিয়ে কার কাছে যাব, বলেন?’
‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরা চাই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে আমরা এখনও দ্বিধায় আছি। পরিস্থিতি ও সময়, সবকিছু বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। আপুকে তো আর ফিরে পাব না। কিন্তু বিচার চাইতে গিয়ে নতুন করে কারও বিরাগও হতে চাই না।’
জেইউ/এমএআর/