নিটল মটরসের ৩৬৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি
>> নিটল মটরস নিটল-নিলয় গ্রুপের নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান
>> বিক্রয়ের তথ্য প্রদর্শন না করে ফাঁকি ৮৩ কোটি
>> যানবাহন পরিচালন আয় থেকে ফাঁকি ২৭৮ কোটি
>> অফিসের পণ্য ও সেবায় ফাঁকি সাড়ে ৪ কোটি
>> স্থান-স্থাপনা ভাড়ায় ফাঁকি ৫৩ লাখ টাকার ভ্যাট
মেসার্স নিটল মটরস লিমিটেড, দেশের স্বনামধন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিটল-নিলয় গ্রুপের নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি ভারত থেকে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিক-আপ ইত্যাদি যানবাহন সম্পূর্ণ প্রস্তুত (সিবিইউ) অবস্থায় আমদানি করে থাকে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিরীক্ষায় মেসার্স নিটল মটরস লিমিটেডের প্রায় ৩৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটিত হয়েছে। তাও পাঁচ বছর আগের। অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিশাল অঙ্কের ওই ভ্যাট ফাঁকির তথ্য ধরা পড়লো এনবিআরের যশোর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিস থেকে।
সম্প্রতি যশোর ভ্যাট অফিসের নিজস্ব অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে সরকারের চোখ এড়িয়ে যাওয়া ভ্যাট ফাঁকির এমন তথ্য। ক্রয় রেজিস্টারে প্রবেশ ব্যতীত পণ্য সরবরাহ, যানবাহন পরিচালনা থেকে আয়, বিভিন্ন সেবা ও স্থান-স্থাপনার ভাড়ার ওপর প্রযোজ্য ওই ভ্যাট আদায়ে গত ১৪ জুন দাবিনামা ইস্যুও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন >> পেট্রোবাংলার ভ্যাট ফাঁকি ২৩ হাজার কোটি, বিপাকে এনবিআর
যশোর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন স্বাক্ষরিত দাবিনামায় সুদ ব্যতীত ফাঁকি দেওয়া ৩৬৬ কোটি ৩৯ লাখ ৮৪ হাজার ১১২ টাকা আদায়ে দাবিনামা সম্বলিত কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। একই সঙ্গে অপরিশোধিত মূসক বা ভ্যাট কেন আদায় করা হবে না, তার সন্তোষজনক লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য ২১ কার্যদিবস সময় বেধে দেয় ভ্যাট অফিস। যদিও এরই মধ্যে ভ্যাট অফিসের দাবিনামা পেয়ে যোগাযোগ করেছে নিটল-নিলয় গ্রুপের প্রধান কার্যালয়।
এতদিন পর ভ্যাট কার্যালয়ের এমন দাবি অযৌক্তিক ও নীতিবহির্ভূত হিসেবে দাবি করেছে নিটল-নিলয় গ্রুপ। গ্রুপের কর্ণধার ও চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার প্রতিষ্ঠানের ফিন্যান্স পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
নিটল-নিলয় গ্রুপের ফিন্যান্স পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘পাঁচ বছর আগের ডিমান্ড হঠাৎ করে দিয়ে দিলেন, কীভাবে দিলেন? আমরা খুবই আশ্চর্য হয়েছি। এজন্য তথ্য অধিকার আইনে গত ৪ জুলাই তথ্য-উপাত্ত চেয়েছি। তাদের জবাব পেলে আমরা শুনানি দেব। এরপরও যদি মীমাংসা না হয়, তাহলে আমরা আদালতে যাব। আমি বলব, ভ্যাট অফিস আইন ও বিধির যথাযথ প্রয়োগ করতে পারেনি। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আমাদের সুনামেরও বিষয়, বিব্রতকরও।’
আরও পড়ুন >> কম যায় না রূপসী বাংলাও, ভ্যাট ফাঁকি ১৮.৮৩ কোটি
‘এটা অনেক আগের একটা বিষয়। আমাদের কাছে যদি ভ্যাট পাওনা থাকত, তখনই বলত। কিন্তু তারা ওই সময় দাবি করেনি। আমরা সম্প্রতি ওই চিঠি পেয়েছি। আমাদের এ গ্রুপের কোনো প্রতিষ্ঠান কখনও সরকারের একটা টাকাও বকেয়া রাখেনি। এমনকি কোনো ব্যাংকও আমাদের কাছে টাকা পাবে না। আমাদের ৩০-৩৫টি ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন রয়েছে।’
পাঁচ বছর আগের ফাঁকি দেওয়া ভ্যাট কীভাবে নজরে এলো— জানতে যশোর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিরীক্ষায় মেসার্স নিটল মটরস লিমিটেডের প্রায় ৩৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটিত হয়েছে। তাও পাঁচ বছর আগের। অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিশাল অঙ্কের ওই ভ্যাট ফাঁকির তথ্য ধরা পড়লো এনবিআরের যশোর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিস থেকে
যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভ্যাট অফিসের নিরীক্ষায় শুধু ফাঁকির বিষয়টি উদঘাটিত হয়নি। অনিয়মও বেরিয়ে এসেছে। আমাদের নিরীক্ষায় চার ধরনের অনিয়ম শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- ক্রয় ও বিক্রয়ের রেজিস্টার যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করা জনিত অনিয়ম; স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত উপকরণ ক্রয় রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ ব্যতীত সরবরাহ করা জনিত অনিয়ম, সি এ রিপোর্ট মোতাবেক কর্তনযোগ্য উৎসে মূসক যথাযথভাবে কর্তন না করা এবং পণ্য ও সেবা সরবরাহের বিপরীতে যথাযথ মূসক পরিশোধ না করে মূসক বা ভ্যাট ফাঁকি। যার মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের ভ্যাট বা মূসক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। এটা প্রথম পর্যায়ের দাবিনামা। যদি শুনানির মাধ্যমে সমাধান হয়, তা হলে দুই পক্ষের জন্যই শুভকর। তা না হলে আমাদেরও আইনি পদক্ষেপে যেতে হবে।
আরও পড়ুন >> ১৫ ব্যাংকের ভ্যাট ফাঁকি, এনবিআরের শুনানিতে তলব
এনবিআর কর্তৃক জারি করা দাবিনামায় বলা হয়, পরিহার বা ফাঁকি দেওয়া ৩৬৬ কোটি ৩৯ লাখ ৮৪ হাজার ১১২ টাকার দাবিনামার কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হলো। ওই ভ্যাটের ওপর মূল্য সংযোজন কর আইন ১৯৯১ এর ধারা ৩৭ এর উপধারা (৩) অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদও প্রযোজ্য। প্রতিষ্ঠানটির এরূপ কার্যকলাপ মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩, ৪, ৫, ৬ (৪-ক হতে ৪-ছ) ৭, ৩১, ৩২ ও মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ১৯৯১ এর বিধি ১৮-ক এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যা মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭ মোতাবেক দণ্ডারোপযোগ্য। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব পাওয়া না গেলে মূসক আইন অনুযায়ী দাবিনামা চূড়ান্ত করা হবে।
নিটল মটরস যেসব খাতে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে
যশোর বেনাপোলের কাগজপুকুরে অবস্থিত মেসার্স নিটল মটরস লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিরীক্ষা কার্যক্রমের মোট চারটি খাতে মূসক বা ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে–
ক্রয় রেজিস্টারে বিক্রয়ের তথ্য প্রদর্শন না করে ভ্যাট ফাঁকি
প্রতিষ্ঠানটি ভারত থেকে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিক-আপ ইত্যাদি যানবাহন সিবিইউ (কমপ্লিট বিল্ড ইউনিট) অবস্থায় আমদানি করে। ওই পণ্যের মূল্য ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় বিক্রয়কেন্দ্র এবং দেশব্যাপী স্থাপিত শো-রুমের মাধ্যমে মূসক পরিশোধ করে চালানপত্রের মাধ্যমে সরবরাহ করে। নীতা কোম্পানি লিমিটেড নামীয় প্রতিষ্ঠানটি ভারতের টাটা মটরস লিমিটেড ও নিটল মটরস লিমিটেডের জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি ভারত থেকে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিক-আপ ইত্যাদি সিকেডি অবস্থায় আমদানি করে সিবিইউ (কমপ্লিট বিল্ড ইউনিট)-এ রূপান্তর করে। উৎপাদিত সমুদয় পণ্য নিটল মটরস লিমিটেডের নিকট বিক্রয়ের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। নিটল মটরস লিমিটেড যা চালানপত্রের মাধ্যমে সমুদয় উৎপাদিত পণ্য ক্রয় করে। নিরীক্ষায় নীতা কোম্পানি লিমিটেডের একই সময় বিক্রয় তথ্যের সঙ্গে নিটল মটরস লিমিটেডের ক্রয় হিসাবের তথ্যের মিল পাওয়া যায়নি।
কারণ খুঁজতে গিয়ে ভ্যাট অফিস দেখতে পায় যে, নীতা কোম্পানি লিমিটেড তাদের বিক্রয় করা পণ্যের কিছু অংশ নিটল মটরসের নিকট সরাসরি মূসক- ১১ চালানপত্রের মাধ্যমে বিক্রয় করেছে এবং অবশিষ্ট পণ্যের বিক্রয় প্রদর্শন করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকের নিকট। এসব বিক্রয় চালানপত্র (মূসক- ১১) বিভিন্ন ব্যাংকের নিকট প্রদর্শন করলেও সেখানে ঠিকানা হিসেবে নিটল মটরস লিমিটেডের নামই ব্যবহার করা হয়েছে।
নিটল মটরসের নামে যতগুলো মূসক- ১১ নীতা কোম্পানি ইস্যু করেছে শুধু সেই পরিমাণ পণ্যই ক্রয় খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন ব্যাংকের নামে চালান হিসাব করে (মূসক- ১১) নিটল মটরসের হিসাবে প্রদর্শিত হয়েছে সেই পরিমাণ পণ্য নিটল মটরসের ক্রয় রেজিস্টার বা বিক্রয় রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা হয়নি।
নিয়ম অনুযায়ী ক্রয় রেজিস্টার ও বিক্রয় রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ এবং চলতি হিসাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভ্যাট বা কর পরিশোধিত হওয়ার কথা। কিন্তু ব্যাংকের নামে ক্রয় দেখানো হলেও সেটি প্রকৃতপক্ষে নিটল মটরস লিমিটেডের অনুকূলে সংগ্রহ করা হয়েছে। ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে ভোক্তার নিকট পণ্যসমূহ মূল্য সংযোজন ঘটিয়ে বিক্রি করা হয়েছে, যেটা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। মূসক পরিহারের অসৎ উদ্দেশ্যে বিপণন ও হিসাবে এরূপ কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে নীতা কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক নিটল মটরসের নিকট বিক্রয় করা বাস, ট্রাক, পিক-আপ হিসাবে মোট চার হাজার ১৯৯ ইউনিট মূসক রেজিস্টারে প্রদর্শন না করে ভ্যাট পরিহার বা ফাঁকি দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় ভ্যাট অফিসের নিরীক্ষায়। বিক্রয় করা পণ্যের মোট মূল্য ৫৫৪ কোটি ৫৬ লাখ ৭৭ হাজার ৭৬৭ টাকা। যার ওপর ১৫ শতাংশ প্রযোজ্য ভ্যাট বা মূসক হিসাবে আদায় যোগ্য ৮৩ কোটি ১৮ লাখ ৫১ হাজার ৬৬৫ টাকা।
আরও পড়ুন >> ৪৬৮ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি : টনক নড়ল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের
যানবাহন পরিচালনাজনিত আয়ে ভ্যাট ফাঁকি
নীতা কোম্পানির সরবরাহ করা যানবাহনের কিছু অংশ নগদ মূল্যে দেশের বিভিন্ন ক্রেতার নিকট সরবরাহ করার পাশাপাশি অপর অংশ নিজস্ব সম্পত্তি হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং সেগুলো কোম্পানির অনুসৃত অপারেটিং লিজ রেন্টাল ইনকামে ব্যবহৃত হয়েছে। এ খাতে প্রাপ্ত এক হাজার ৮৫৩ কোটি ৫৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭৪৯ টাকা সি এ রিপোর্টে ইনকাম ফ্রম অপারেটিং ভিয়েকল হিসেবে প্রদর্শিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছে, অপারেটিং লিজ ও রেন্টাল আয়ের কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো মূসক চালানপত্র প্রদান করা হয় না। ইনকাম ফ্রম অপারেটিং ভিয়েকল-এর আয়ের বিপরীতে খতিয়ান বহি, পণ্য বা সেবা ক্রেতার তালিকা, ক্রেতার সহিত চুক্তিপত্র, অপারেটিং লিজ বা রেন্টাল ইনকামের নমুনা বিলের কপি দাখিল করার জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও নিটল মটরস কর্তৃপক্ষ কোনো দলিল দাখিল করেনি। যে কারণে ইনকাম ফ্রম অপারেটিং ভিয়েকলস হিসাবে এক হাজার ৮৫৩ কোটি ৫৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭৪৯ টাকা সি এ রিপোর্টে প্রদর্শিত আয়ের ওপর প্রযোজ্য ২৭৮ কোটি তিন লাখ ৩২ হাজার ৪৬২ টাকার ভ্যাট বা মূসক পরিশোধিত হয়নি বা ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।
এতদিন পর ভ্যাট কার্যালয়ের এমন দাবি অযৌক্তিক ও নীতিবহির্ভূত হিসেবে দাবি করেছে নিটল-নিলয় গ্রুপ। গ্রুপের কর্ণধার ও চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার প্রতিষ্ঠানের ফিন্যান্স পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন
অফিসের বিভিন্ন পণ্য বা সেবায় ভ্যাট ফাঁকি
নিটল মটরস লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় মূল্য সংযোজন কর আইন ১৯৯১ এর ৬ (৪-ক) ধারা, একই আইনের ১৮ (ক) অনুযায়ী, উৎসে মূসক বা ভ্যাট কর্তনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু সি এ রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অফিসের আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক পণ্য, অডিট ফি, কার মেইনটেন্যান্স, প্রশাসনিক ব্যয়, বিজ্ঞাপন, নিরাপত্তা, সেলস প্রমোশন খরচসহ মোট ৩৭টি পণ্য ও সেবায় প্রদর্শিত মূল্য ধরা হয়েছে ২৫৫ কোটি ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার ৭১০ টাকা। যার ওপর ৫-১৫ শতাংশ ভ্যাট আদায়যোগ্য। যেখানে ৩২ কোটি ১৪ লাখ ১৬ হাজার ৭৯৬ টাকার ভ্যাট প্রযোজ্য হলেও নিটল মটরস ২৭ কোটি ৪৯ লাখ তিন হাজার ২৫১ টাকা পরিশোধ করেছে। অনাদায়ি বা ফাঁকি দেওয়া ভ্যাটের পরিমাণ চার কোটি ৬৫ লাখ ১৩ হাজার ৫৪৫ টাকা।
স্থান ও স্থাপনার ভাড়ায় ভ্যাট ফাঁকি
নিটল মটরস লিমিটেড ভাড়ার স্থানে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে বিধায় তাদের ওপর স্থান-স্থাপনা ভাড়া গ্রহণকারী হিসেবে ভ্যাট প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে প্রদর্শিত শো-রুম ভাড়ার পরিমাণ এবং দাখিলপত্রে প্রদর্শিত ভাড়ার ওপর ১৫ শতাংশ মূসক বা ভ্যাট প্রযোজ্য থাকলেও সার্বিক পর্যালোচনায় বকেয়া বা ফাঁকি দেওয়া ভ্যাটের পরিমাণ পাওয়া যায় ৫২ লাখ ৮৬ হাজার ৪৪০ টাকা।
সবমিলিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিরীক্ষায় উদঘাটিত রাজস্ব বা ভ্যাটবাবদ ৩৬৬ কোটি ৩৯ লাখ ৮৪ হাজার ১১২ টাকা নিটল মটরস লিমিটেডের নিকট আদায়যোগ্য বলে মনে করছে এনবিআর।
আরএম/এমএআর/