মন্ত্রিপুত্রকে ‘বাঁচাতে’ উচ্চ আদালতে যাচ্ছে দুদক!
চট্টগ্রামে জালিয়াতির মাধ্যমে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া এবং সংযোগ স্থানান্তরের বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই মামলা তদন্ত করে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে আবেদন করে দুর্নীতি প্রতিরোধে গঠিত প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু সেই আবেদন গ্রহণ করেননি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা। তিনি প্রসিকিউশনের সহিত দ্বিমত পোষণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি আমলে নেন।
দুদকের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় স্বাগত জানিয়েছিলেন চট্টগ্রামের সুশীল সমাজ ও আইনজীবীরা। তবে, আইনি জটিলতার কথা বলে মহানগর দায়রা জজের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন দুদকের কয়েকজন কর্মকর্তা। অর্থাৎ পাঁচ আসামিকে বাঁচাতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে যাচ্ছে দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্বে থাকা সংস্থাটি।
কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আসামিরা প্রভাবশালী। তাদের সঙ্গে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। আবার আসামিদের কেউ দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আত্মীয় হন। এ কারণে অভিযুক্তদের বাঁচাতে দুদক মরিয়া হয়ে উঠেছে— জানান তারা।
আরও পড়ুন >> অপসারণের বিকল্প দেখেনি দুদক, টিআইবি দেখছে ‘সংকট’
এদিকে, দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুমোদনের পর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতের অপরাধ আমলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বেআইনি— এমন মন্তব্য করেন দুদক চট্টগ্রামের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু। গত সোমবার (১৭ এপ্রিল) তিনি দুদক চট্টগ্রামের পরিচালক বরাবর একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি দুদককে উচ্চ আদালতে রিভিশন করার মতামত দিয়ে উল্লেখ করেন- ‘বিজ্ঞ আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলা আমলে নেওয়ার বিষয়ে যে যুক্তি উপস্থাপন করেন এবং মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের যথাযথ ডিএলআরের রেফারেন্স উল্লেখ করেন। উল্লিখিত রেফারেন্স এই মামলার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নহে। কেন না উল্লিখিত মামলায় কমিশন কর্তৃক চার্জশিটের অনুমোদন নিয়ে কিছু আসামিকে সেন্ট-আপ এবং কিছু আসামিকে নট সেন্ট-আপ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেন। এক্ষেত্রে যেহেতু চার্জশিটের অনুমোদন ছিল, তাই নতুন করে অনুমোদনের প্রয়োজন নেই মর্মে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ মামলার রায়ের অবজারভেশনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলার সব আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন ‘সত্য’ বলে অনুমোদন দেয় দুদক কমিশন। দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হকের সই করা অনুমোদন সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, ‘তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা সাক্ষ্য-স্মারক ও অন্য কাগজপত্র পর্যালোচনায় উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় দুদক আইন–২০০৪–এর ৩২ ধারা এবং দুদক কমিশন বিধিমালা ২০০৭–এর বিধি ১৫ উপবিধি ১–এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হলো। তবে, দুদকের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আমলে না নিয়ে গত ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালত মামলার এজাহারে থাকা পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন
কিন্তু বর্তমান মামলার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কমিশন এখানে চার্জশিট অনুমোদন দেন নাই। বিজ্ঞ আদালত অনুমোদন ছাড়া মামলা আমলে নিয়েছেন। এখানে দুদকের অনুমোদন অবশ্যই প্রয়োজন এবং প্রসিকিউশন কেইস চূড়ান্ত প্রতিবেদনের কারণে শূন্য। প্রসিকিউশন পক্ষের অনুমোদন ছাড়া শূন্যের ওপর নির্ভর করে মামলা পরিচালনা করা দুরূহ ব্যাপার। বিজ্ঞ আদালতের আমলে গ্রহণের আদেশটি বেআইনি অথবা অনিয়মিত হওয়ায় কগনিজেন্স পরবর্তী আসামি পক্ষ আইনগত সুবিধা লাভ করবে এবং বিজ্ঞ বিচারিক আদালত শূন্যের ওপর নির্ভর করে বিচারকার্য সম্পাদন করিতে হইবে। এমতাবস্থায় মহানগর দায়রা জজের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিভিশন দায়ের করা যায়। কেননা, কগনিজেন্স (বিচারাধিকার) আদেশটি সম্পূর্ণ আইনানুগ হয়নি বলে আমি মনে করি।’
এ বিষয়ে জানতে গতকাল মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘এটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
বিষয়টি জানতে দুদক চট্টগ্রামের পরিচালক মো. মাহমুদ হাসানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন >> সাক্ষ্যপ্রমাণ না পেয়ে মন্ত্রিপুত্রকে অব্যাহতি দিতে দুদকের আবেদন
দুদক সূত্র জানায়, আলোচিত মামলাটি দায়ের করেছিলেন সংস্থাটির চাকরিচ্যুত উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। মামলা দায়েরের পরপরই তিনি কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। তবে মামলার আসামিরা বেশ প্রভাবশালী। কয়েকজন সরকার ও দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকটাত্মীয়। এ কারণে আলোচিত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের মামলা দায়েরের বিষয়টি দুদকের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা ভালোভাবে নেননি।
দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুমোদনের পর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতের অপরাধ আমলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বেআইনি— এমন মন্তব্য করেন দুদক চট্টগ্রামের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ওই মামলার আসামি ইঞ্জিনিয়ার সারোয়ারের আপন ভায়রা ড. আবুল বারকাত। তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান। আবার আবুল বারকাতের সঙ্গে দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হকের বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে। মামলার আসামি টেকনিশিয়ান দিদারুল আলমের আত্মীয় একজন সিনিয়র বিচারক। আরেক আসামি ও কর্ণফুলী গ্যাসের সাবেক কর্মকর্তা মুজিবুর রহমানের ফুফাতো ভাই দুদকের সাবেক ডিজি জহির রায়হান। যিনি বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা। এছাড়া মামলার অন্যতম আসামি মুজিবুর রহমান সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী নুরুল ইসলামের ছেলে।
ফলে মামলাটি দায়েরের চার দিন পর দুদক কর্মকর্তা শরীফকে পটুয়াখালীতে বদলি করে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে চাকরিচ্যুতও করা হয়। এরপর আসামিদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠে দুদক। যদিও এ মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদক চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম ১২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিতে সুপারিশ করেছিলেন বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে। তবে, ওই সময় তার সুপারিশ গ্রহণ না করে কমিশন পাঁচটি পয়েন্টে পুনরায় তদন্ত করতে বলে। একপর্যায়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপের মুখে তিনি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন— অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
বিষয়টি জানতে দুদক চট্টগ্রামের পরিচালক মো. মাহমুদ হাসানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি
এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়ায় জাতীয় সম্পদের অপব্যবহার হয়েছে। কর্ণফুলী গ্যাসের কর্মকর্তারা ঘুষ না পেলে কেন এই সংযোগ দিয়েছেন? এখানে আদালত বলেছেন অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। দুদকও বলেছে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এজন্য দুদক মামলা করেছে। আবার ইচ্ছা হয়েছে বলে আসামিদের খালাস দিয়েছে। পরবর্তীতে আদালত পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে আদালতের অবারিত ক্ষমতা রয়েছে এবং আদালত সেটি করেছেন। আদালত বলেছেন, মামলার এজাহারে অপরাধের বিষয়ে ক্লিয়ার করা হয়েছে। মামলার বাদী চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন যাবতীয় বিষয় এজাহারে উল্লেখ করেছেন।’
আরও পড়ুন >> দুদকের প্রতিবেদন নাকচ, সাবেক মন্ত্রিপুত্রের অপরাধ আমলে নিল আদালত
‘প্রশ্ন হলো দুদক কেন আসামিদের খালাস দিতে এত ইন্টারেস্টেড? তারা কেন টাকা খরচ করে মন্ত্রিপুত্রকে বাঁচাতে উচ্চ আদালতে যাবেন। দুদক কে? কোত্থেকে এসেছে যে তারা ইচ্ছা হলেই কারও বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেবে, আবার ইচ্ছা হলেই কাউকে খালাস দেবে। আবার মামলার প্রতিবেদনে দুদক বলছে, এখানে সরকারি অর্থের কোনো অপচয় হয়নি। তাহলে ক্ষমতার অপব্যবহারও এক ধরনের দুর্নীতি। এটা তারা করেছেন। আদালত সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আসামিদের অপরাধ আমলে নিয়েছে। আমরা আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছি।’
‘আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিশন করলে দুদক প্রচণ্ড রকম বাড়াবাড়ি করবে’— উল্লেখ করে আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘এ কাজে জড়িত দুদক কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া উচিত। আরেকটা বিষয়, রিভিশনের ক্ষেত্রে দুদকের যুক্তি হলো দুদকের অনুমোদন। আদালতের আদেশে সেটিও স্পষ্ট করা হয়েছে। আদালত বলেছেন, দুদক কর্মকর্তাদের অনুমতিসাপেক্ষে মামলাটি রুজু করা হয়েছে। এখন অনুমোদনের কথা বলে দুদক উচ্চ আদালতে যেতে পারে না। আসামিদের জন্য রিভিশন করে দুদক যদি এক টাকাও খরচ করে তাহলে সেটি বাড়াবাড়ি হবে।’
মামলার আসামি ইঞ্জিনিয়ার সারোয়ারের আপন ভায়রা ড. আবুল বারকাত। তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান। আবার আবুল বারকাতের সঙ্গে দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হকের বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে। মামলার আসামি টেকনিশিয়ান দিদারুল আলমের আত্মীয় একজন সিনিয়র বিচারক। আরেক আসামি ও কর্ণফুলী গ্যাসের সাবেক কর্মকর্তা মুজিবুর রহমানের ফুফাতো ভাই দুদকের সাবেক ডিজি জহির রায়হান। যিনি বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা। এছাড়া মামলার অন্যতম আসামি মুজিবুর রহমান সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী নুরুল ইসলামের ছেলে
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারি নির্দেশনায় আবাসিক খাতে নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ রয়েছে। এ আদেশ অমান্য করে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) মন্ত্রিপুত্র মুজিবুর রহমানকে ২২টি অবৈধ সংযোগ দেয়। ২০১৭ সালের ২ মার্চ থেকে ২০১৮ সালের ২ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এসব সংযোগ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে ২০২১ সালের ১০ জুন দুদকের চাকরিচ্যুত ও তৎকালীন চট্টগ্রামের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের তিন দিন পর কেজিডিসিএল কর্মকর্তারা অবৈধ ২২টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
মন্ত্রিপুত্র মুজিবুর রহমান ছাড়াও এ মামলার আসামিরা হলেন- কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং ও সার্ভিসেস) মো. সারওয়ার হোসেন, সাবেক দক্ষিণ জোনের টেকনিশিয়ান (সার্ভেয়ার) মো. দিদারুল আলম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও সাবেক ব্যবস্থাপক মজিবুর রহমান। তাদের মধ্যে সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. সারওয়ার হোসেন, টেকনিশিয়ান দিদারুল আলম ও সাবেক ব্যবস্থাপক মজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তারা জামিনে মুক্ত হন।
আরও পড়ুন >> প্রধানমন্ত্রী আমার মা, আমাকে আরেকটি সুযোগ দিন : শরীফ
মামলা দায়েরের পর শুরুতে বাদী শরীফ উদ্দিন তদন্ত করলেও পরবর্তীতে তাকে চট্টগ্রাম থেকে বদলি ও চাকরিচ্যুত করা হয়। ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর মামলাটি নতুন করে তদন্তের দায়িত্ব পান দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মুহা. মাহবুবুল আলম। তিনিও আংশিক তদন্ত শেষে বদলি হয়ে যান। গত বছরের ১০ মার্চ নতুন করে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়- ২ এর উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম।
ওই কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলার সব আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন ‘সত্য’ বলে অনুমোদন দেয় দুদক কমিশন। দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হকের সই করা অনুমোদন সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, ‘তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা সাক্ষ্য-স্মারক ও অন্য কাগজপত্র পর্যালোচনায় উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় দুদক আইন–২০০৪–এর ৩২ ধারা এবং দুদক কমিশন বিধিমালা ২০০৭–এর বিধি ১৫ উপবিধি ১–এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হলো।
তবে, দুদকের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আমলে না নিয়ে গত ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালত মামলার এজাহারে থাকা পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন।
এমআর/এমএআর/